নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (এসআইএমআই) প্রেসিডেন্ট সাফদার নাগোরিকে গ্রেফতার করা হয় ২০০৮ সালের মার্চে ভারতের ইন্দোর থেকে। জিজ্ঞাসাবাদে এ ছাত্রনেতা জানিয়েছিলেন, তালেবানের তৎকালীন প্রধান মোল্লা ওমরের প্রতি তিনি অনুরক্ত। সাফদার আরও জানিয়েছিলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে ভারতে জিহাদ করা। ২০১৩ সালে আফগানিস্তানের জাবুল প্রদেশে মোল্লা ওমরের মৃত্যু হয়। আল কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকেও যথেষ্ট সম্মান করতেন সাফদার।
সাফদারকে যখন গ্রেফতার করা হয় সেই সময় তালেবান আফগানিস্তানে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ ছিল না। তবু তাদের প্রভাব যে একেবারে ছিল না তা কিন্তু নয়। বর্তমানে কাবুলে পুনরুত্থান হয়েছে তালেবানের। ফলে ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়বে এটিই স্বাভাবিক। দেশটি নিজেদের অস্বস্তির কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছে। তবে তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছেÍতারা ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়। কিন্তু তালেবানের অতীত ইতিহাস ভারতকে স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। তালেবানের পুনরুত্থান নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের বরাতে এমন তথ্যই জানাল দেশটির গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতের কাউন্টার টেররিজম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে এসআইএমআইয়ের অস্তিত্ব নেই। তবে এ দলের অনেকেই এখন ভারতের ওয়াহাদাত-ই-ইসলামে যোগ দিয়েছেন। মোল্লা ওমরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে সাফদারের চেষ্টা সফল হয়নি। তবে এসআইএমআইয়ের অনেকে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনেও যোগ দিয়েছেন। সংগঠনটি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তৈয়বার দ্বারা প্রশিক্ষণ পায়। এদিকে জৈইশ-ই-মুহাম্মদসহ পাকিস্তানভিত্তিক আরও কিছু গোষ্ঠী ভারতকে টার্গেট করছে। এমন পরিস্থিতিতে কাবুলে তালেবানের পুনরুত্থান জিহাদিদের জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা।
ভারতের অভিজ্ঞ এক কাউন্টার টেররিজম বিশেষজ্ঞ বলেন, তালেবানের পুনরুত্থানই শুধু ভারতের একমাত্র মাথাব্যথার কারণ নয়। এর মাধ্যমে পাকিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোকেও ভারতে হামলা চালাতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। স¤প্রতি আফগানিস্তানের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী পাকিস্তানের গোয়েন্দা বাহিনীর চাপে বা সহায়তায় ভারতের দূতাবাসে হামলা চালায়। পাকিস্তান হচ্ছে জিহাদের জননী। একই সঙ্গে এটা স্পষ্ট যেÍ তালেবানকে পুরোপুরি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সন্ত্রাসীদের ভারতসহ বৈশ্বিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেবে। আর এটাই হয়ে দাঁড়াবে বিশ্বের জন্য নতুন মাথাব্যথার কারণ।