বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
দীঘিনালায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ভ্যান-ঠেলাগাড়ি দিয়ে এইচএসসি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা বরিশালে নদীতে চলছে ‘বিমান’ বেনাপোলে ভারতীয় ট্রাক থেকে ফেনসিডিলসহ চালক গ্রেফতার কিডনি বিকল হতে যাওয়া রিকশাচালক সিরাজুলকে বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন ডোমারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম (বিপিএএ)’র বিদায় সংবর্ধনা নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক পেলেন শুদ্ধাচার পুরস্কার বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের ১০ লিফটের ৮টিই অচল মাদারগঞ্জে বিক্ষোভ ও হরতাল ঘোষণা : চেয়ারে বসার একদিন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান কারাগারে মাইজভান্ডারী গাউছিয়া হক কমিটি কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাংগঠনিক সংলাপ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা দুর্গাপুরে বঙ্গববন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা

রাজশাহীতে বারির গবেষণা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

রাজশাহীতে নতুন ছয়তলা ভবন পাচ্ছে মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট (এসআরডিআই)। গবেষণাগার ছাড়াও একই ছাদের নিচে আসবে রাজশাহীর বিভাগীয় কার্যালয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) রাজশাহীর শ্যামপুর ক্যাম্পাসের ভেতরে পুরনো এসআরডিআই ভবনের পাশে নির্মাণ শুরুর অপেক্ষায় নতুন ভবনটি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যে স্থানে বহুতল ভবনটি নির্মাণ হচ্ছে, তার চারপাশেই বারির বিভিন্ন গবেষণা প্লট। ভবনটি নির্মাণ হলে এখানে প্রান্তিক কৃষকসহ সেবাগ্রহীতাদের সমাগম বাড়বে। এতে বারির গবেষণা কার্যক্রমসহ আবাসিক এলাকার নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এসআরডিআই উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রচার ও প্রসারেও ব্যাঘাত ঘটবে। মহাসড়ক থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পথ মাড়িয়ে সেবা নিতে আসতেও ভোগান্তি পোহাতে হবে সেবাগ্রহীতাদের।

বিষয়টি ভাবাচ্ছে এসআরডিআই ও বারির স্থানীয় কর্তাদের। উত্তরণের উপায় হিসেবে এসআরডিআই ভবনটি গবেষণা মাঠের মাঝখানের পরিবর্তে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে নির্মাণে সম্মত দুই পক্ষই। এ নিয়ে গত ২৪ আগস্ট রাজশাহী বারির সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে পত্র পাঠান এসআরডিআইয়ের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও সংস্থার ফিল্ড সার্ভিস উইংয়ের পরিচালক ড. কামরুজ্জামান। তাতে বর্তমান নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে বারি ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে এসআরডিআই ভবন নির্মাণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ড. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, পৃথক প্রতিষ্ঠান হলেও এসআরডিআইয়ের নিজস্ব কোনো প্রবেশপথ নেই। ফলে সেবাগ্রহীতা কৃষক ছাড়াও গবেষক, ছাত্র-শিক্ষক ও অন্য উপকারভোগীদের প্রধান সড়ক থেকে বারির অভ্যন্তরে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে প্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে হয়। এটি সবার জন্য ভোগান্তির। তাছাড়া পুরো পথের দুই ধারে বারির গবেষণা প্লট। যে স্থানে ভবনটি হচ্ছে, সেখানে আমাদের ১১৭ শতাংশ জায়গা রয়েছে। তার চারপাশেও বারির গবেষণা প্লট। গবেষণায় তাদের প্রতিটি শীষের ক’টা ধান, ক’টা চিটা তারও হিসাব রাখতে হয়। আমাদের প্রতিষ্ঠান কৃষকদের নিয়ে। একজন কৃষক মাটি নিয়ে আমাদের কাছে আসার পথে হয়তো হাত দিলেন, তাতে ধান ঝরে পড়ল। হয়তো একটা শীষ ছিঁড়েও ফেললেন। এতে গবেষণায় বিঘœ সৃষ্টি হতে পারে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমারা মহাসড়কের ধারে দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় ভবন নির্মাণে জায়গা চাইছিলাম। জায়গাটি ছায়াযুক্ত ও নিচু। জায়গাটা তেমন গবেষণাকাজে লাগে না। সেখানে ভবনটি হলে এসআরডিআই স্বতস্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলাদা থাকবে। কারো আর গবেষণা মাঠের ভেতরে আসার প্রয়োজন পড়বে না। আমাদেরও নিজস্ব প্রযুক্তির প্রসার ও প্রচারে সুবিধা হবে। সেবাগ্রহীতাদের সেবাগ্রহণ আরো সহজগম্য হবে। বারির গবেষণা কার্যক্রমও সুরক্ষিত থাকবে।
স¤প্রতি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই বৈঠকে এসডিআরআই ও বারি ছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত, স্থাপত্য বিভাগ এবং পরিকল্পনা কমিশনের লোকজন ছিলেন। এসআরডিআইযের ভবন নির্মাণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিসিবিএস) প্রকল্পের পরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠকে আমি বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। সেখানে পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, আমরা কেন আগে বিয়ষটি নিয়ে ভাবিনি? আমি বলেছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা। তারা পরে অনুরোধ করেছেন, নতুন স্থানে ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন যেন ঝুলে না যায়।
তিনি যোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে এরপরই বারির রাজশাহীর সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার বরাবর পত্র পাঠানো হয়। সেই পত্র পৌঁছেছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে। সংস্থার পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. কামরুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, একেবারেই গবেষণা মাঠের মধ্যে ভবন নির্মাণ না করে রাস্তার পাশে নির্মাণ করতে চায় এসআরডিআই। তারা একটি প্রস্তাব আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। আমরাও বিষয়টি বিবেচনা করছি। যেহেতু প্রতিষ্ঠান দুটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন, সেহেতু এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়েরও সিদ্ধান্ত লাগবে। আমরা এ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে তারা তাদের পছন্দের জায়গায় ভবন নির্মাণ করতে পারবে। এ বিষয়ে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বিধান কুমার ভান্ডার জানান, ভবনটি নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে যে জায়গায়, সেটি বারির একেবারেই পেটের ভেতর। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠানের যেমন সমস্যা, আমাদেরও তেমন সমস্যা। সেই থেকে আমরা চিন্তা করেছি, ভবনটি সরিয়ে রাস্তার পাশে আনলে প্রতিষ্ঠানটি স্বতন্ত্র এবং দৃষ্টিগোচর হবে।
বিষয়টি নিয়ে মৌখিকভাবে বারির মহাপরিচালকের সঙ্গে আলাপ হয়। তিনিও ইতিবাচক মত দেন। কিন্তু ওই সময় বিষয়টির সমাধান হয়নি। পরে প্রকল্পটির টেন্ডার প্রক্রিয়ায় চলে যায়। এখন আমরা চাইছি রাস্তার পাশে যেতে, এতে আমাদেরই সুবিধা হয়। আমরা রাজি, এখন বারি রাজি হলেই বিষয়টি সম্ভব। তিনি যোগ করেন, প্রকল্পের যে ব্যয় ধরা হয়ছে, সেটি বাড়লে নতুন জায়গায় প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। আমাদের সময় ক্ষেপণ করার সুযোগ নেই। কারণ সময়সীমার মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে। জানা গেছে, রাজশাহীতে বারির গবেষণাগার ঘিরে প্রতিষ্ঠা পায় এসআরডিআই। সেখানে এসআরডিআইয়ের ভবন নির্মাণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিসিবিএস) প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ছয়তলা অত্যাধুনিক ভবন। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৮০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। ভবনের নিচতলায় থাকবে গ্যারেজ। ষষ্ঠতলায় থাকবে ডরমেটরি। এছাড়া বাকি চারটা তলায় আঞ্চলিক কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় ও গবেষণাগার থাকবে। চার বছরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বরাদ্দ পেতেই চলে গেছে এক বছর। আর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করতে লেগে যায় আরো আট মাস। এখন গণপূর্ত অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com