জাপানের কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশির কারখানা থেকে প্রথম মেট্রোট্রেনের সেট ঢাকায় এসেছিল গত ২৩ এপ্রিল। এরপর একে একে আরো তিন সেট ট্রেন পৌঁছেছে ঢাকায় মেট্রোরেলের ডিপোতে। এরই মধ্যে ডিপোর ভেতরে এবং উড়ালপথে পরীক্ষামূলক চলাচলও শুরু করে দিয়েছে ট্রেনগুলো। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী নভেম্বরের মধ্যে আরো তিন সেট ট্রেন ঢাকায় এসে পৌঁছবে। ট্রেনগুলো চলবে মেট্রোরেলের প্রথম লাইন উত্তরা-আগারগাঁও-মতিঝিলে। লাইনটির জন্য কেনা হচ্ছে ২৪ সেট ট্রেন।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, ঢাকায় বর্তমানে চার সেট মেট্রোট্রেন রয়েছে। পঞ্চম সেট ট্রেনটি গত ২৮ আগস্ট জাপানের কোবে বন্দর থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছে। ট্রেনটি উত্তরা ডিপোতে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে পৌঁছার কথা রয়েছে। একইভাবে ষষ্ঠ ও সপ্তম সেট ট্রেন জাপান থেকে শিপমেন্টের সম্ভাব্য সময় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। আর এ দুই সেট ট্রেন ডিপোতে এসে পৌঁছার সম্ভাব্য সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
ঢাকায় ছয়টি লাইনের মেট্রোরেলের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে ডিএমটিসিএল। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রথমে মেট্রোট্রেনের ফাংশনাল টেস্ট করতে হয়। এ টেস্ট করতে কয়েক মাস সময় লাগে। ফাংশনাল টেস্টের পর পারফরম্যান্স টেস্ট সম্পন্ন করতে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে। এরপর শুরু হবে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট, যেটা সম্পন্ন হবে পরের তিন মাসে। ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট হয়ে যাওয়ার পর আরো পাঁচ মাস যাত্রীবিহীনভাবে ট্রায়াল রান করতে হবে। এর পরই যাত্রী পরিবহনের জন্য উপযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে ট্রেনগুলো। প্রতিটি ট্রেনকেই একই ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করা চার সেট ট্রেনের একটির পারফরম্যান্স টেস্ট শুরু হয়েছে। বাকি তিনটি রয়েছে ফাংশনাল টেস্ট পর্যায়ে।
প্রসঙ্গত, মেট্রোট্রেনগুলো বানাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি। সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনতে মোট খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুই পাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসংবলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন।