দিনাজপুরের বিরামপুরে প্রাথমিক, কিন্ডার গার্ডেন ,মাধ্যমিক ,মাদ্রাসা ও কলেজ দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে দুই শত পচিশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রিয় প্রাঙ্গণে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত তারা।কলেজ গেটে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় শিক্ষাথীদের। বিরামপুরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের মোট দুই শত পচিশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৭, কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ৩৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪০, মাদ্রাসা ২২, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৫টি এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৪টি। করোনার কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে। ফলে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেনি তাদের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। সহপাঠীদের ছেড়ে দীর্ঘ দেড় বছর বাড়িতে কেটেছে একপ্রকার বন্দি অবস্থায়। দীর্ঘদিন পর আজ থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আবারও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসতে পেরে খুশি তারা। বিরামপুর সরকারী কলেজে সকাল ৯ ঘটিকায় এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। কলেজ গেটে শিক্ষক কর্মচারি ও পরিচালনা পরষদ সকালে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফুল হাতে হাতে দিয়ে কলেজে প্রবেশ করান। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। এই সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনও পরিমল কুমার সরকার, অধ্যক্ষ ফরহান হোসেন,উপাধ্যক্ষ অদ্যত অপুসহ কলেজের শিক্ষকগণ। বিরামপুর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাশরুর মাসাব জানায়, কলেজ বন্ধ থাকায় অনলাইনে ক্লাস করেছি। কিন্তু সেটি তেমন প্রাণবন্ত ছিল না। কলেজে সশরীরে এসে প্রিয় শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করতে এসে দেড় বছর আগের সেই আনন্দ ফিরে পাচ্ছি। বিরামপুর মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জেবা জানান আমি একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে এই প্রথম কলেজে এত গুলো সহপাঠি (বান্ধবী) সাথে দেখা হলো সেই সাথে শিক্ষক(স্যার)দের সাথে পরিচিত হতে পারলাম। আমার খুবই ভাল লাগছে। বিজুল দারূলহুদা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. নুরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছিল বিরাণভূমিতে। পাঠদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এখন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে আসতে পারায় শিক্ষার্থীদের মাঝে যেমন আনন্দের হাওয়া বইছে তেমনী শিক্ষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। বিরামপুর মহিলা কলেজ এর অধ্যক্ষ শিশির কুমার সরকার জানান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব রকম ব্যবস্থাগ্রহণ করেছি এ ছাড়া প্রিয় শিক্ষার্থীদের কলেজে উপস্থিতি দেখে খুবই ভাল লাগছে। বিরামপুর মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মেজবাউল হক জানান আমরা সরকরি নিদের্শ অনুযায়ী কলেজে প্রবেশ দ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা শরীরের মিশিনের দ্বারা শরীরের তাপমাত্রা দেখা ও স্প্রে, মাক্স ফ্রিতে বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। যাতে কোন শিক্ষার্থীদের কোন প্রকার সমস্যা না হয়। উল্লেখ্য, করোনা অতিমহামারী জন্য গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা কমে আসায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার (১২ সেপ্টে:) থেকে সারা দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শুরু হয়েছে পাঠদান কার্যক্রম।