কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশের উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনা অনেক। ইতোমধ্যে কৃষি বিজ্ঞানীরা ধান, ডাল, তরমুজ, আলু, ভুট্টা, বার্লি, সূর্যমুখী, শাকসবজিসহ অনেক ফসলের লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নত জাত উদ্ভাবনে করতে সক্ষম হয়েছে। এসব জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উপকূলবর্তী বিপুল এলাকার সকল চাষিদের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে। চাষিরা এসব ফসলের চাষ করলে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় নতুন করে কৃষিবিপ্লব ঘটবে। গতকাল রোববার সকালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ঘেরের আইলে আগাম সীম চাষ, অফসিজন তরমুজ ও মরিচ চাষ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. রাজ্জাক আরো বলেন, ‘দেশের প্রায় ২৫% এলাকা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। লবণাক্ততার কারণে এ এলাকায় সারা বছরে একটি ফসল হতো। আমন ধান তোলার পর বছরের বাকি সময়টা মাঠের পর মাঠ জমি অলস পড়ে থাকতো। এই প্রতিকূল ও বিরূপ পরিবেশে বছরে কীভাবে দুবার বা তিনবার ফসল চাষ করা যায়, সেলক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে আসছি। ইতোমধ্যে অনেক সাফল্য এসেছে। এটিকে আরো সম্প্রসারিত করা হবে, যাতে এ এলাকায় সারা বছর ধরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায়।’
সেচের পানি সমস্যা দূর করতে খুলনা, বাগেরহাটে ছয় শতাধিকের বেশি খাল খনন এবং পুনঃখনন করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। পরিদর্শনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নায়ায়ণ চন্দ্র চন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো: বখতিয়ার, ব্রির ডিজি ড. শাহজাহান কবীর, বারির ডিজি নাজিরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপপরিচালক মো: হাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে, উপকূলীয় এলাকায় মোট জমির পরিমাণ ২৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর, এর মধ্যে চাষযোগ্য ২১ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর। আর লবণাক্ত এলাকার পরিমাণ ১০ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর। এছাড়া লবণ পানির ভয়াবহতার কারণে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় ৫ লক্ষাধিক হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যায়।