বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত মাইলস্টোন কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

শিবমন্দির বানাতে মুসলিম উচ্ছেদ, বিক্ষোভে গুলি 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন 
ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে হঠাৎ শুরু হয়েছে কথিত ‘অনুপ্রবেশকারী’ উচ্ছেদ অভিযান। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলে বৃহস্পতিবার তাদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশের গুলিতে অন্তত দুজনের মৃত্যু ও আরও বেশ কয়েকজনের আহত হয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় সাংবাদিকরা। এদিকে রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতিও এই হত্যাকান্ডের খবর টুইট করেছেন।
দরং জেলার ধলপুর গ্রামে একটি প্রাচীন শিবমন্দিরকে অনেক বড় আকারে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরেই আসাম সরকার সেখানে দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে, যদিও সেই ভিটেমাটি-হারানোরা দাবি করছেন তাদের সব ধরনের সরকারি নথি ও পরিচয়পত্রই আছে। বস্তুত আসামের দরং জেলার ধলপুর হিলস ও সিপাহঝাড় এলাকায় প্রায় ৭৭ হাজার বিঘা জমি দখল করে বিশাল একটি শিবমন্দির কমপ্লেক্স বানানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকার সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সেই অভিযানের সবশেষ ধাপে গত সোমবার ওই অঞ্চলের বাসিন্দা প্রায় আটশো পরিবারের বেশ কয়েক হাজার মানুষকে তাদের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে সেই জমি খালি করিয়ে দেওয়া হয়। তার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দরংয়ে উচ্ছেদ-বিরোধী কমিটির জমায়েতে পুলিশ গুলি চালালে অনেকে হতাহত হয়েছেন। স্থানীয় সাংবাদিক দেবব্রত দত্ত জানায়, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে যে সেল গড়ে তোলা হয়েছে তাদের ডাকে ধলপুর ১, ২ ও ৩ নম্বর গ্রামের বেশ কয়েক হাজার মানুষ আজ জড়ো হয়েছিলেন, সেখানে পুলিশের হামলায় অন্তত জনাদশেক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে আমরা জানতে পারছি।
তাদের মধ্যে অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন, একজনের লাশের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি ওখানে অগ্নিগর্ভই ছিল, স্থানীয় নেতারা গতকালই আমাকে বলছিলেন তাদের লড়াই তারাই লড়বেন – বিরোধী কংগ্রেস বা এআইডিইউএফ নেতারা ঢুকতে গেলে পেটাবেন, এবং কোনও রাজনীতি করতে দেবেন না। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আসামের কংগ্রেস প্রধান ভূপেন কুমার বোরা এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা করে বিবৃতি দেন – তবে তখনও পুলিশ বা রাজ্য সরকার গুলি চালনার কথা স্বীকার করেনি। নিহত একজনের ছবিও টুইট করেন মি বোরা। এদিকে বুধবার ঘটনাস্থল ঘুরে আসা দেবব্রত দত্ত জানায়, এই উচ্ছেদ হওয়া মানুষরা প্রায় সবাই বাঙালি মুসলিম যারা বহু দশক ধরে ধলপুরের চরাঞ্চলেই বসবাস করছেন। ধলপুর গ্রামে বাসিন্দা রহিমা শেখ বলেন, নদীর বুকেই বারবার ঘর বাঁধি আর সেই নদীর বুক থেকেই বারবার আমাদের খ্যাদায়ে দেয়। অথচ আমাদের কাগজপাতি সব আছে – এনআরসি, প্যান কার্ড। নিজেরা খাই বা না-খাই সরকারি খাজনা ঠিকই দিয়ে যাচ্ছি। সেই তিরাশি সালেরও কত আগে থেকে আমরা এখানে থাকতেসি। তহন এইহানে মন্দির-টন্দির কিসুই আসিল না, ছোট্ট একটা পাহাড় আসিল শুধু! পাশ থেকে জাহানারা বেগম যোগ করেন, রাত জেগে আমরা ঘর বানায়ছিলাম। আমরা দুখিয়া মানুষ … এখন মন্দিরের দাবি কইর‌্যা আমাগো খ্যাদায় দিল। আর এক গ্রামবাসী হাসনু আরাও কাঁদতে কাঁদতে বলেন, বড়ো দু:খু পাইসু। আমি এতিয়া … মাটিবাড়ি নাই … এখন কইত যাম? উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা সেলের নেতা নিয়ামত শেখ বা জাহাঙ্গীর আলমরাও জানাচ্ছেন, তারা প্রত্যেকে দেশের বৈধ নাগরিক ও বহু বছর ধরে সরকারি খাজনা দিয়ে আসছেন … তারপরেও তারা বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। নিয়ামত শেখ যেমন নিজের দাবির স্বপক্ষে ২৬ আগস্ট, ১৯৮৪ তারিখে দেয়া একটি খাজনার রসিদও তুলে ধরেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উচ্ছেদ হওয়া প্রত্যেকের এনআরসিতে নাম আছে। লিগ্যাসি ডেটা আছে। এই অঞ্চলে বহু সরকারি প্রাথমিক স্কুল আছে – অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। তারপরেও কীভাবে আমরা অবৈধ হই?




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com