শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

সিনোফার্মের বাকি টিকাগুলো পাওয়ার আশায় অপেক্ষা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী টিকা কার্যক্রম চলছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে টিকা কর্মসূচিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশও। এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে কয়েকটি দেশের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে সাত কোটি ডোজ চীনের সিনোফার্ম টিকা কেনার চুক্তি হয়। এ টিকার প্রায় দুই কোটি ডোজ এরই মধ্যে দেশে এসেছে। বাকিগুলো আশার অপেক্ষায় রয়েছে। এসব টিকার জন্য এরই মধ্যে ৭৯৫ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। এবার আরো ১ হাজার ১১০ কোটি টাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে ছাড় করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।
২৬ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আবুল কাসেম স্বাক্ষরিত অর্থ ছাড়-সংক্রান্ত সম্মতিপত্রে বলা হয়, গণচীনের সিনোফার্মের তৈরি সার্স কোভ-২ ভ্যাকসিন কেনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে অগ্রিম বাবদ ১৩ কোটি ডলার অর্থাৎ ১ হাজার ১১০ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ৪০ পয়সা ধরে) বরাদ্দ দেয়া হলো। অর্থ বিভাগের চলতি অর্থবছরের বাজেটের ‘নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় তহবিল’ থেকে এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে দুটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এগুলো হচ্ছে টিকা কেনায় যাবতীয় আর্থিক বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে এবং ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে অগ্রিম সমন্বয় করতে হবে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য প্রথম দফায় চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তি হয়। পরে আরো ছয় কোটি ডোজের জন্যও চুক্তি হয়। প্রথম দফার দেড় কোটি ডোজ টিকার জন্য এরই মধ্যে গত জুন, জুলাই ও আগস্টে তিন কিস্তির অর্থ পরিশোধে ৭৯৫ কোটি টাকা ছাড় করা হয়। প্রতি মাসে অর্থ ছাড় করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অর্থপ্রাপ্তিতে কিছু সমস্যা হচ্ছিল। তাই তারা একসঙ্গে অর্থ ছাড়ের অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার বাকি কিস্তিগুলোর অর্থ পরিশোধে একসঙ্গে ১ হাজার ১১০ কোটি ২০ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে।
চীনের সঙ্গে আপাতত সাড়ে সাত কোটি ডোজ টিকার জন্য চুক্তি হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, এসব টিকার জন্যই নতুন করে অর্থ ছাড় করা হয়েছে। আরো টিকার জন্য চীনের সিনোভ্যাকের সঙ্গেও চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। বিভিন্ন কিস্তিতে টিকার টাকা আসছে। চুক্তি অনুযায়ী আমরা টিকা পাচ্ছি। সুবিধাজনক সময়ে বিভিন্নসংখ্যক টিকা চীনের কাছ থেকে পাচ্ছি।
এদিকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তির পাশাপশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজ থেকে বিনামূল্যে টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এর বাইরে কোভ্যাক্স থেকে টিকা কেনার বিষয়ে চুক্তি করছে বাংলাদেশ সরকার। এ চুক্তির আওতায় সাড়ে ১০ কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ে ব্যয় হবে প্রায় ৬ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে এ-সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। চুক্তির অর্থ সম্পর্কিত বিষয়ে সম্প্রতি মতামত চাওয়া হলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে একমত পোষণ করে অর্থ বিভাগ। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্য কোভ্যাক্স কর্তৃক ৭ কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার ৮০০ ডোজ সিনোভ্যাক এবং ২ কোটি ৯৭ লাখ ২২ হাজার ৮০০ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বরাদ্দ রয়েছে, যা ক্রয়ে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) থেকে একটি খসড়া চুক্তি পাঠানো হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ১১ কোটি ৫২ লাখ ৭০০টি সিরিঞ্জ এবং ১১ লাখ ৫২ হাজার ৭৫টি সেফ নিডল ডিসপোজাল বক্স কিনতে হবে।
খসড়া চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়ছে সাড়ে ৫ ডলার। চুক্তির আওতায় সাড়ে ১০ কোটি টিকা, সিরিঞ্জ, সেফ নিডল ডিসপোজাল বক্স, বীমা ও পরিবহন বাবদ এ কার্যক্রমে মোট ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৭২ লাখ ৬৮ হাজার ৬৩৫ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৬ হাজার ৩৬৮ কোটি ১৭ লাখ ২২ হাজার টাকা।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দেড় বছরে নভেল করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে সরকার মোট ৩ হাজার ১৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকা অগ্রিম দেয়া হয়। তবে তাদের কাছ থেকে সব টিকা পাওয়া যায়নি। চীনের সিনোফার্মকে দেয়া হয়েছে ৭৯৫ কোটি টাকা।
করোনার টিকা কেনার জন্য চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ১৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত অর্থবছরে সরকার টিকা কেনার জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল। পরে সংশোধন করে ৬ হাজার ৩৭৭ কোটি টাকা করা হয়। তবে এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়। যার ১ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে অগ্রিম অর্থ হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়াকে দেয়া হয়েছিল। বাকি টাকা দেয়া হয়েছিল সিনোফার্মকে।
উল্লেখ্য, দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনতে চায় সরকার। এতে ১৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। প্রতিজনকে দুই ডোজ টিকা দিতে হলে ২৭ কোটি ৬০ লাখ টিকা প্রয়োজন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ টিকা দিয়ে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করে সরকার। তবে চুক্তি অনুযায়ী পর্যাপ্ত টিকার সংস্থান করতে পারেনি সেরাম। এতে দেশের টিকা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। এরই মধ্যে চীনের সঙ্গে সাত কোটি ডোজ সিনোফার্মের টিকা কেনার চুক্তি করে সরকার। এরই মধ্যে কয়েক দফায় টিকাও পাঠিয়েছে চীন। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে স্পুতনিক-৫ টিকা কেনার চুক্তি চলছে। দেশে জরুরি প্রয়োগের জন্য মোট আটটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর মধ্যে দেশে সিনোফার্ম, ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ চলছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com