সাগরকন্যা নামে পরিচিত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে ছুটির দিনে ভিড় ছিল হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষের। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে সৈকতে। দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবং শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ায় বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিকেল থেকেই হাজারো পর্যটক আসতে থাকেন কুয়াকাটায়। সৈকত ঘুরে দেখা যায়, শুটকি পল্লী, গঙ্গামতির সৈকত, রাখাইন পল্লী, ইকোপার্ক, ইলিশ পার্ক, লেম্বুর বন ও সৈকতের ঝাউবাগানসহ বেশিরভাগ পর্যটন স্পট পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। সবাইকে সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি সমুদ্রের নোনা জলে গা ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে উঠতে দেখা যায়। সৈকতে কেউ গোসল করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করছেন, আবার কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে পুরো সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
তবে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা থাকলেও বেশিরভাগ পর্যটকদের মাস্ক পড়তে বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে দেখা যায়নি। খুলনা থেকে ঘুরতে আসা রাসেল বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় ঘুরতে আসলাম। আজকে অনেক পর্যটক বেশ ভালোই লাগছে। বিশেষ করে বাচ্চারা অনেকদিন পরে বেশ আনন্দ করছে।’
মাগুরা থেকে আসা রাহুল বলেন, ‘আমরা ৩০ জন বন্ধু মিলে কুয়াকাটা আসছি। সবাই একসঙ্গে গোসল করলাম, আনন্দ করলাম। আগে থেকেই হোটেল বুকিং দিয়ে আসছি তাই রুম পেতে সমস্যা হয়নি।’
এদিকে দীর্ঘদিন পরে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় হাসি ফুটতে শুরু করেছে পর্যটক ব্যবসায়ীদের মুখে। করোনাকালীন ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড় ও সুবিধা দিচ্ছেন। হোটেল সমুদ্র বিলাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. ইসমাইল ইমন জানান, তাদের হোটেলে শতভাগ বুকিং রয়েছে। করোনার সময়ে ব্যবসায়ীরা বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এখন সবাই পর্যটকদের বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। যে কারণে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে বলে জানান তিনি। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ার হোসেন আনু জানান, ছুটির দিন ও সামনে পূজার বন্ধ উপলক্ষে অনেকদিন পরে কুয়াকাটায় অনেক পর্যটকের ভিড়। পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত সৈকত। পর্যটকদের উপর নির্ভর করে এমন ১৬টি পেশার মানুষ সবাই পর্যটকদের সেবা দিতে ব্যস্ত। পাশাপাশি নিজেদের রোজগারও করছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানান, ছুটির দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। তাই তাদের সেবায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে, বিভিন্ন স্থানে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। সার্বক্ষণিক মাইকিং করে পর্যটকদের সামাজিক দূরত্ব বজায়, মাস্ক পড়া, গভীর সমুদ্রে গিয়ে গোসল না করাসহ সব বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।- জাগো নিউজ