শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন

জুমের সোনালী পাকা ধানে ছেয়ে গেছে পাহাড়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১

জুমের সোনালী পাকা ধানে ছেয়ে গেছে পাহাড়। এবার জুমের ফলন ভালো হওয়ায় জুম চাষীদের চোখে মুখে এখন আনন্দ। রাঙ্গামাটির জুমিয়ারা এখন ব্যস্ত পাকা ধানের ফসল বাড়িতে তোলার কাজে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সনাতনী কৃষি হচ্ছে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী জুম চাষ। জুম চাষের প্রস্তুতিকালে প্রথমে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জুম চাষের জন্য জমিকে উপযুক্ত করে তোলা হয়। এরপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রস্তুতকৃত পোড়া জুমের মাটিতে দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ পাহাড়ে একসাথে বিভিন্ন প্রজাতির বীজ বপন করে জুমিয়ারা।
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেই জুমের ধান পাকা শুরু হয়। ভাদ্র-আশ্বীন মাসে ঘরে তোলা হয় জুমের ফসল। এ বছর জুমে পোকামাকড়ের উপদ্রব না থাকায় জুমের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জুম চাষীরা।
মাঠ পর্যায়ে কাজ করা কৃষি বিভাগের কর্মকর্মারা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) জানান, পাহাড়ে জুমিয়ারা স্থানীয় জাতের ধানের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির সবজীর চাষ ও করেছে। পাহাড়ে জুম চাষসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাথী ফসল চাষে কৃষি বিভাগের বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে কাজ করায় এবার ফলন ও ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ে থাকা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে(বাসস) বলেন, চলতি বছর শুধু রাঙ্গামাটি জেলায় জুম চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে।
যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধারা হয়েছে হেক্টর প্রতি ১ দশামিক ৩০ টন। এবার জুমের ফসল ভালো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পাহাড়ে জুম চাষের ফলে এখানকার খাদ্য চাহিদা পূরণে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
পাহাড়ে প্রায় বিভিন্ন জাতের জুমে ধান চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- হরিণ বিনি, পাধাতটারা, আমেই, কালা কবরক, লঙ লঙ, মেলে (কুকী), কামারাঙা, তোর্গী, বাধেইয়া, কবরক, লেঙদাচিকন, গেলঙ, পাত্তেগী, গুরি, বিনি, কবাবিনি ও লোবাবিনি।
পাহাড়ে এখন জুমের পাকা সোনালি ফসল ঘরে তোলা শুরু করেছে চাষীরা। শুরু হয়েছে পাকা ধান কাটা। দীর্ঘ প্রায় নয় মাসের পরিশ্রমে ফলানো ফসল ঘরে তুলছেন জুমচাষীরা। গত বছরের মতো এবার মৌসুমেও করোনার কারণে চাষাবাদে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলে ও জুমের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক। সব ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা তাদের।
জুমের ফসল বাড়িতে তোলার পর পর পাহাড়ীদের ঘরে-ঘরে শুরু হবে নবান্ন উৎসব। নবান্ন উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ীদের ঘরে-ঘরে শুরু হয় বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনের।- (বাসস)




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com