রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এখনো থেমে থেমে জ্বর আসছে। এ কারণে তার খাওয়ায় রুচি কম। গত কয়েক দিন ধরে তিনি খুবই অল্প পরিমাণে খাবার খাচ্ছেন। গত শুক্রবার সকালে খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, তার সাথে আমি দেখা করতে যাইনি। বয়সের কারণে আমাদের হাসপাতালে যেতে নিষেধ করছে। গতকাল আমার ভাইয়ের স্ত্রী দেখা করে এসেছে। যতটুকু জেনেছি, এখনো তার (খালেদা জিয়া) শরীরে জ্বর আছে। খাবারের রুচি একদমই নেই। চিকিৎসকদের নির্দেশ অনুযায়ী খালেদা জিয়া তার নিজ বাসার বাবুর্চির রান্না করা খাবারই খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সেলিমা ইসলাম। তিনি বলেন, এমনিতে তিনি খুব কম খাবার খান। জ্বরের কারণে গত কিছুদিন খুবই যৎসামান্য খাবার খাচ্ছেন। খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে নতুন করে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে কিনা জানতে চাইলে বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, আমরা তো দুইবার সরকারের কাছে আবেদন করেছি। একবার আমার ভাই (শামীম ইস্কান্দার) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে দেখা করেও এসেছেন। তারপরও তো অনুমতি দেয়নি। মহাসচিব (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) গতকালও তার বক্তব্যে বলেছেন- তার দেশে চিকিৎসা সম্ভব নয়। বিদেশে পাঠানো দরকার। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তো তার (খালেদা জিয়া) সাথে আমার কথা হয়নি। তার কী মতামত সেটা না নিয়ে তো কিছু করা যাবে না। মতামত নেয়ার পর এই (আবেদন) বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।
জ্বর নিয়ে গত ১২ অক্টোবর হাসপাতালে ভর্তি হন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর তার আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বেশকিছু পরীক্ষা করা হয়েছে। জানা যায়, সব রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। আজকালের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়ার কথা। তবে কিছু কিছু রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা সে অনুযায়ী ওষুধ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মাঝে-মাঝে তার শরীরে জ্বর আসছে। এই কারণে খাবারের তেমন কোনো রুচি নেই তার। লন্ডন থেকে বেগম জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছেন তার পুত্রবধূ ডা: জোবায়দা রহমান। খালেদা জিয়ার এক ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান, তিনি গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে দেখে এসেছেন। ধীরে ধীরে জ্বর কমে এলেও তিনি অন্যান্য অনেক রোগে আক্রান্ত। এজন্য গত দুই দিনে তার বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়েছে। কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট হাতেও পেয়েছি। সেই অনুযায়ী ওষুধও দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়ার বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় নিলে দেশে নয়, এখন তার বিদেশে চিকিৎসা প্রয়োজন। একসাথে অনেক রোগের চিকিৎসার জন্য যে ধরনের আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার দরকার, তা দেশে নেই। এক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, চিকিৎসকের কাজ হচ্ছে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেয়া। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হবে কিনা সেটা তার পরিবার ও সরকারের বিষয়। এখানে চিকিৎসক হিসেবে তাদের কিছু করার নেই। গত ১২ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে তার ব্যক্তিগত স্টাফ ফাতেফা বেগম ও সুমি রয়েছেন।