কুমিল্লার ঘটনার পেছনের কারণ অবশ্যই খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কোনো ধর্মপ্রাণ মানুষ, হোক সে হিন্দু, হোক সে মুসলমান কিংবা খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ। তাঁরা ধর্মান্ধ নন, তাঁরা ধর্মভীরু।’ গতকাল রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন। ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ’ শিরোনামে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম এ সেমিনারের আয়োজন
দুর্গাপূজায় কুমিল্লাসহ সারা দেশে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো ধর্মের মানুষ, অন্য ধর্মের পবিত্র গ্রন্থকে এ ধরনের একটা ব্যবস্থা করবেÍতা এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। এর পেছনে কী কারণ রয়েছে, অবশ্যই সে কারণ আমরা খুঁজে বের করব। বের করে আপনাদের জানাব।’
সেমিনারে দুষ্কৃতকারীদের হুঁশিয়ারি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা উদ্দেশ্যমূলক। যাঁরা এগুলো করেছেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে করেছেন, সে উদ্দেশ্য কোনো দিন সফল হবে না। কারণ, এ দেশ একটি অসা¤প্রদায়িক চেতনার দেশ। এ দেশ মুসলমান, খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধÍসবার। সবাইকে নিয়েই এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এটা মনে করি ও হৃদয়ে ধারণ করি বলেই আমাদের গতি অপ্রতিরোধ্য।’
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন। যেহেতু তদন্ত চলছে, সেহেতু আমি আপাতত আর কিছু বলছি না। তবে যে-ই করে থাকুক, তাকে খুঁজে বের করা হবে। আইন অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।’
১৫ আগস্ট শিশু রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার নৃশংসভাবে হত্যার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ রাসেলের আকুতি ছিল মায়ের কাছে যাবে। কিন্তু তাকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়েছে। কারণ, যারা ঘাতক, তাদের ধারণা ছিল যে এই রক্তের উত্তরাধিকার কেউ বেঁচে থাকলে ভবিষ্যতে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। তারা যে বাংলাদেশকে হারিয়ে ফেলতে চেয়েছিল, অন্ধকারে নিমজ্জিত করতে চেয়েছিল, তা হবে না।’
বর্তমানে এর প্রমাণ মিলছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁর ধমনিতে এখন বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) করে দেখিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নগুলো অনুসরণ করে যথার্থভাবেই বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা ও তাঁর ছোট বোন সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন বলেই আজ এই বাংলাদেশকে দেখতে পাচ্ছি।’
শেখ রাসেল জীবিত থাকলে তিনিও এ দেশকে সেবা করতেন জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘সে যদি জীবিত থাকত, তাহলে সে-ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের সেবা করত। কিন্তু তা থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তবে জাতির পিতার পরিবারের সব সদস্যই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ দেশের জন্য অবদান রেখে গেছেন।’ বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মিজানুর রহমান সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য কামরুল হাসান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মশিউর রহমান, জাগো নিউজের সহকারী সম্পাদক হারুন রশীদসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষকসহ ফোরামের সদস্যরা।