মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

আবারও রাজপথে শিল্পী-কলাকুশলীরা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১

আবারও রাজপথে নামলেন শিল্পী-কলাকুশলীরা। এবার তারা কথা বললেন, প্রতিবাদ জানালেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের বিষয়ে।
‘ঐতিহ্য ও কৃষ্টির এই দেশে, থাকি সবাই মিলে মিশে’ স্লোগান নিয়ে আজ (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে (জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে) সকাল ১০টায় সমবেত হন তারা। টেলিভিশনের ১৫টি সংগঠনের মোর্চা ‘ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন’ (এফটিপিও)-এর নেতৃত্ব দেয়। অন্তর্ভুক্ত সংগঠন ছাড়াও এতে সামিল হয়ে সংহতি প্রকাশ করে সংগীত মোর্চা ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, পথ নাটক পরিষদ, আবৃত্তি পরিষদ, নৃত্য শিল্পী সংস্থা, নৃত্যাঞ্চল, বাচসাসসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন।
সকাল সাড়ে ১০টায় সূচনা বক্তব্যে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব সাধারণ মানুষকে সচেতন করা। যেটা আমরা ক্যামেরার সামনে বা পেছনে করি। আমরা সে কাজটি এবারও করছি। তবে রাজপথে নেমে। কিছু সাম্প্রদায়িক মানুষ আমাদের পথে নামতে বাধ্য করেছে। আমরা তাদের বলতে চাই, এদেশে উগ্রবাদীর জায়গা নেই, সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই।’
এই সম্প্রদায়িকতাকে নিজেদের ব্যর্থতা বলে মেনে নেন এফটিপিওর চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ। তিনি তার বক্তব্য বলেন, ‘বেশ কিছুদিন হলো এদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছে। আমরা সেই ষড়যন্ত্রকারীকে নির্মূল করতে চাই। আশ্চর্যের বিষয়, আজকে এতদিন হয়ে গেলেও তাদের চিহ্নিত করা হয়নি। আমি এই হামলার দায় স্বীকার করি। কারণ সাংস্কৃতিক কর্মীরা তারা তাদের কাজ করতে পারেনি। করতে পারলে সাম্প্রদায়িকতা এদেশে থাকত না। এ দায় আমাদেরই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে তৃণমূলে যে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়েছে সেখানে শিল্পীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া হয়। যা অযৌক্তিক। তার বিরুদ্ধে শিল্পীরা দাঁড়ায়নি। এটা আরও আগেই দাঁড়ানোর দরকার ছিল।’
সমাবেশে বেশ কিছু সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে। তার মধ্যে অন্যতম গীতিকবি সংঘ, মিউজিক কম্পোজারস সোসাইটি, কণ্ঠশিল্পী পরিষদ বাংলাদেশের সম্মিলনে মোর্চা সংগঠন ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’। সেখানে সংগঠনটির পক্ষে বক্তব্য রাখেন গীতিকবি, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী জয় শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘আমরা এসেছি সংহতি প্রকাশ করতে। আমরা যখন গান করি, কারও জন্য আলাদা গান করি না। হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ বা মুসলমানের জন্য নয়, সবার জন্য গান করি। তাই আমরা বাংলাদেশের চার মূল নীতিতে ফিরতে চাই। আমার মনে হয়, এটাই সময় ঘুরে দাঁড়াবার।’
সম্প্রতি এই হামলায় মারা গেছেন নাট্যকর্মী অধরা প্রিয়ার বাবা। দৃষ্টিপাত নাট্যদলের এ সদস্য সিক্ত চোখে অনুষ্ঠানে হাজির হন। বলেন, ‘এভাবে আমার বাবা চলে যাবে, আমরা কখনও ভাবিনি। স্বাভাবিকভাবে বাবা চলে গেলে, আমার কিছু বলার ছিল না। আমার বাবা একেবারেই অন্য মানুষ। সারাজীবন সম্প্রীতিকে লালন করেছেন। এমনও হয়েছে নিজে হিন্দু হলেও মুসলিম বন্ধুর জানাজায় অংশ নিয়েছেন। আমরা সেভাবেই বড় হয়েছি। অথচ আজ আমার বাবাকে দাঙ্গায় এভাবে ধুকে ধুকে মরতে হলো। আমার তো পরিবার আছে। মা, ছোট ভাই আছে। আমাদের এগুলো দেখতে হচ্ছে। আমরা নিরাপদ নই।’
সম্প্রীতি সমাবেশের প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ছিলেন প্রযোজক-অভিনেতা ইরেশ যাকের এবং সদস্য সচিব সঞ্চালক-নির্মাতা আনজাম মাসুদ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, গাজী রাকায়েত, ইরেশ যাকের, আহসান হাবিব নাসিম, চয়নিকা চৌধুরী, তারিন জাহান, আনজাম মাসুদ, সুমন আনোয়ার, মীর সাব্বির, মাসুম রেজা, শমী কায়সার, রাশেদ মামুন অপু, শিবলী মোহম্মদ, নাদিয়া আহমেদ, শিহাব শাহীন, হারুন অর রশিদ, শাহেদ আলী, দীপা খন্দকার, আজাদ আবুল কালাম, জয়শ্রীকর জয়া, সাব্বির, সন্দীপন, শুভ, পুলক, সমরজিৎ রায়, সাকী আহমেদ, রবিউল ইসলাম জীবনসহ অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দিঘির পাড় পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের রংপুর, চাঁদপুর, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচ জন। মামলা হয়েছে অন্তত ৭২টি। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার পাঁচ শতাধিক।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com