নগরীর জিয়া সড়ক এলাকার বাসিন্দা বাদল দুম্বা ও ছাগলের খামার করে এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন । নিজের মেধা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে আজ বাদল সমাজে একজন সফল উদ্যোক্তা।
বাদল’র প্রতিবেশী সূত্র জানায়, নগরীর জিয়া সড়ক লোহার পুল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম বাদল। বইয়ের লাইবেরী ব্যবসা ছিল বাদলের। সংসারে অর্থনৈতিক সংকটও ছিল। বর্তমানে বাদল অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। ২০১৮ সালে সখের বসে ২টি দুম্বা ও ৪টি ছাগল পালন শুরু করে তিনি। আজ তার খামারে প্রায় ৫৬টি র্টাকি প্রজাতির দুম্বা এবং ব্লাক বেঙ্গল, তোতা পাড়ি, বৃটল, গুজরী ও স্বজাতসহ ৬ প্রজাতির প্রায় ২’শ-এর বেশি ছাগল রয়েছে।
কথা হয়, নগরীর সদর রোড এলাকা থেকে ছাগল ক্রয় করতে আসা খামারী মো. জালাল ঢ়াড়ী ও রুমান খান-এর সঙ্গে তারা জানান, এ খামারটির প্রতিটি ছাগল ও দুম্বা খুব রুষ্ট-পুষ্ট। কারণ খামারী বাদল ছাগল ও দুম্বাগুলোকে কোন প্রকার কৃত্রিম খাবার দেয় না। তাছাড়া খুব যতœ নেয়। এর আগেও এখান থেকে ছাগল ক্রয় করেছেন। এটি তাদের দ্বিতীয় বার আসা।
এবিষয়ে রেজাউল করিম বাদল জানান, পটুয়াখালী জেলার দশমিনা এলাকার বাসিন্দা তার খালাতো ভাই শহিদুলের উৎসাহে মেহেরপুর জেলা থেকে ২টি দুম্বা ও খুলনা জেলা থেকে ৪টি ছাগল এনে খামার তৈরি করেন। এর কিছুদিন পর বাদল আরো প্রায় ২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। আজ তার খামারে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার দুম্বা ও ছাগল রয়েছে। বর্তমানে এ খামার থেকে ৩ মাস পর পর আয় হয় প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা। তার খামারে শ্রমিক রয়েছে ৬ জন। প্রতি মাসে ব্যয় হয় প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আমার স্বপ্ন রয়েছে আগামী ১০ বছর পর প্রতিটি ঈদ ও কোরবানীতে বরিশাল নগরীর প্রায় ২০ ভাগ বাসিন্দার বাসায় দুম্বা পৌঁছে দেবার।
রেজাউল করিম বাদল আরো জানান, টার্কি জাতীয় এসব দুম্বা ৬ মাস পর পর বাচ্চা দেয় এবং সেই বাচ্চাগুলো ৮-১০ মাসের মধ্যে ৮০-১২০ কেজি ওজনের হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়। দুম্বা পালনে বাড়তি তেমন কোনো খরচ হয় না। দুম্বা পালনে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যতে খামারটির আকার আরো বড় করে পূর্ণাঙ্গ একটি দুম্বার খামারের স্বপ্ন রয়েছে বাদলের। ছাগল ও দুম্বা পালনে ভিন্নতা না থাকায় আলাদা করে রাখার প্রয়োজন হয় না। আর খাবারও একই সঙ্গে খাওয়ানো হয়। সকাল-দুপুর আর বিকেল এ তিন বেলা ঘাসের পাশাপাশি গম ও ভুট্টার ভুসি খাওয়ানো হয়। দুম্বা ও ছাগলের- খামারে ভ্যাকসিনসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ভারপ্রাপ্ত ডাঃ নুরুল আলম বলেন, দুম্বা মূলত মরু অঞ্চলের প্রাণি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সার্বক্ষণিক দুম্বা ও ছাগলগুলোর চিকিৎসাসহ খামারটির খোঁজখবর নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি দুম্বায় তুলনামূলক রোগবালাই কম। বরিশালের পরিবেশ ও আবাহাওয়া দুম্বা পালনে কোনও সমস্য হচ্ছে না তাই এ খাতে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দুম্বা পালন একটি লাভজনক পেশা। দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল কাছাকাছি প্রাণি। পাশাপাশি দুম্বার খামার করতে কোন ঝুঁকি নেই।