নওগাঁর ধামইরহাটে এই প্রথম একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। দক্ষতার মাধ্যমে কাজ করে পরিবারের অভাব মিটিয়ে ব্যাপক সফলতা বয়ে এনেছেন। তার এমন সফলতায় পরিবারসহ এলাকার মানুষ সন্তুষ্টি লাভ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলার হাটনগর এলাকার রফিকুল ইসলাম ও ফেন্সি আরা দম্পত্তির ঘরে প্রায় ২৪ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন ফিরোজ ইবনে রফিক। দীর্ঘ বছর এলাকায় পরিবারের সাথে থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলোজি, রংপুর এ রেডিওলজি ডিপ্লোমা কোর্সে পড়াশুনার জন্য ভর্তি হন। সেখানে লেখাপড়া চলতি অবস্থায় পরিচিত হয় ফ্রিল্যান্সার বড় ভাইদের সাথে। সেখান থেকে একজন ফ্রিল্যান্সার যোদ্ধা হিসেবে স্বপ্ন শুরু হলেও বড় ভাইদের কাছে কিছু শিখতে বা জানতে পারেন না ফিরোজ। তবুও থেমে নেই তার স্বপ্ন দেখা। ২০১৭ সালে লালমনিরহাটে এক বড় ভাইয়ের কাছে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ট্রেনিং নেন ফিরোজ। নিজের মেধা আর শ্রম দিয়ে সেখান থেকে শুরু হয় ফিরোজের ফ্রিল্যান্সার যাত্রা। বর্তমানে তার প্রতিমাসে মিনিমাম ইনকাম লক্ষাধীক টাকা। এবিষয়ে ফ্রিল্যান্সার ফিরোজ জানান, “আমি কাজ শিখে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ফাইবার একাউন্টে প্রথম ১০ ডলারের একটি অর্ডার পাই। সেখানে প্রথম কাজ ডেলিভারি দিয়ে ১০ ডলারের সহিত আরো ৫ডলার হিসেবে বোনাস পেয়েছি।সেই থেকে শুরু এ যাত্রার, আর পেছনে তাকাতে হয়নি আমাকে। এযাবৎ পর্যন্ত প্রায় ৪০,০০০ ডলার এর বেশি উনকাম করেছি। এ কাজে আমাকে আমার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা সবসময় সহযোগীতা করেছেন। এখন আমরা দুজন মিলে কাজ করছি নিজ পরিবারের সাথে বাসায় থেকে।” তিনি আরো জানান, বর্তমানে আমার ফাইবার মার্কেটপ্লেসে সেলার লেবেল ২য় স্থানে রয়েছে। খুব শিঘ্রই টপ সেলারের লেবেলে উন্নীত হবে আমার একাউন্টটি। বর্তমানে আমি টপ সেলারের অপেক্ষমান তালিকায় রয়েছি। আমি চাই গ্রাফিক্স ডিজাইনের এই কাজ এলাকার বেকার যুবকদেরকে শিখিয়ে তাদেরকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে রক্ষা করতে। সে জন্য আমি প্রশিক্ষন সেন্টারের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার তৈরী করতে চাই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ধামইরহাটের বেশ কয়েকজন যুবক তার নিকট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে ফাইবার একাউন্টের মাধ্যমে আয় করা শুরু করেছেন। তার নিকট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজের প্রভাষক আবুল বয়ান বলেন, আমি তার নিকট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি এবং ইতিমধ্যে আমি প্রায় ৩০০ ডলার উপার্জন করেছি। তার মা ফেন্সি আরা জানান, আমি আমার সন্তানের পাশে থেকে প্রায় ফ্রি সময়ে কাজ দেখি। তিনি তার সন্তানের কাজ এবং দক্ষতার প্রশংসা করেন। পরিবারের পাশে থেকে সন্তান ইনকাম করে এটা দেখে আমার খুবই ভালো লাগে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে খুবই ভালো সময় পার করছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গণপতি রায় জানান, ফ্রিলান্সিং একটি মহৎ এবং স্বাধীন পেশা। যদি এটির মাধ্যমে কেহ নিজেকে সাবলম্বী করতে পারে তাহলে আমাদের পক্ষে থেকে তার জন্য সবসময় শুভকামনা থাকবে।