চলতি বছরের শিতে বছর প্রমবারের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে বুনো প্রজাতির ধলা বালিহাঁস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলসংলগ্ন পুকুরে ২৮ নভেম্বর থেকে হাঁসগুলোর দেখা মেলে। বিষয়টি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের ইতিবাচক বার্তা দেয় বলে মনে করছেন এখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। হাঁসগুলো সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। মনে হচ্ছে এ যেন তাদেরই ভূমি। খাবার ও উষ্ণতার খোঁজে শীত প্রধান দেশগুলো থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে আসে অসংখ্য প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। এ সময় প্রকৃতি তার সন্তানদের সংরক্ষণ করতে থাকে ব্যাকুল। সবচেয়ে ছোট বুনো বালিহাঁসের এই প্রজাতিটি আকারে বেশ ছোট। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার মতো, ডানা ১৫ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার, লেজ ৭ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার ও পা ২ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার। ওজন গড়ে ২৫০ গ্রাম। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁসের চেহারায়ও পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ হাঁসের মাথার চাঁদি ও পিঠ কালচে বাদামি। কালচে পিঠে সূর্যের আলো পডলে ঝলমলে সবুজ আভা ছড়িয়ে দেয়। মুখ, ঘাড়, গলা ও দেহতল সাদা। গলালা স্পষ্ট কালো বলয় দেখা যায়। ডানায় সাদা ডোরার মতো থাকে। চোখ লালচে বাদামি। ছোট ঠোঁট কালো। আর স্ত্রী হাঁসের দেহতল অনুজ্জ্বল ফিকে সাদা। ডানার প্রান্তে সাদা। চোখ বাদামি রঙের, চোখ বরাবর কাজলের মতো কালো চক্ষু-রেখা থাকে। ঠোঁট কালচে-জলপাই বা বাদামি। ঠোঁটের নিম্নভাগ ও সঙ্গমস্থল হলুদাভ। স্ত্রী ও পুরুষ হাঁস উভয়ের পা ও পায়ের পাতা কালচে-বাদামি বা কালো রঙের। এদিকে, প্রথমবারের মতো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পাখির আগমনে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে বিদ্যমান বৃক্ষগুলোর প্রতি নেওয়া হচ্ছে বাড়তি যতœ। শীতকালীন সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে নানা ধরনের পরিকল্পনা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনের সামনের পুকুরগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে ভাসমান ফুলের বাগান এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে রোপন করা হচ্ছে নানা প্রজাতির শীতকালীন ফুল। শীতকালীন পরিযায়ী পাখি আসার বিষয়ে কথা হয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃক্ষরোপণ কমিটির আহ্বায়ক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার দাসের সঙ্গে। তারমতে, করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে প্রকৃতি নিজের মতো করে সেজেছে। এটিকে ধরে রাখতে ক্যাম্পাসের বিদ্যমান পশু-পাখিগুলোর বাসস্থান এবং খাদ্যশ্রঙ্খল সংরক্ষণ করা হয়েছে। ফলে পাখিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে বসবাসের উপযোগী মনে করছে।