নানা সমস্যার আবর্তে চলছে বোয়ালমারী সরকারি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এটি। বর্তমানে কলেজটি শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সমস্যার যেন শেষ নেই। কলেজে শূন্য রয়েছে শিক্ষকের ৯টি পদ। হোস্টেলসহ পুরো কলেজে সীমানা প্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় কলেজ ক্যাম্পাস। রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট। এসব সংকটে কলেজটিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। কলেজ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৬ সালে ১০ একর জায়গার ওপর স্থাপিত হয় এই কলেজটি। শুরু থেকেই এলাকায় উচ্চ শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে কলেজটি। ১৯৮৮ সালে কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়। এক সময় কলেজটিতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করতো। বর্তমানে কলেজটিতে ৪শ ৭২ জন শিক্ষার্থী আছে। একাদশ শ্রেণিতে ৭০ জন, দ্বাদশে ৯৭ জন, স্নাতক ১ম বর্ষে ৯৮ জন, স্নাতক ২য় বর্ষে ৯৪ জন এবং স্নাতক ৩য় বর্ষে ১১৩ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। এর মধ্যে ১শ ৭৪ জন ছাত্রী এবং ২শ ৯৮ জন ছাত্র অধ্যয়ন করছে। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর অর্ধ শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক ছাড়া কলেজটিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা সম্ভব হয়নি। এ কলেজে অনুমোদিত ২৪ শিক্ষকের স্থলে বর্তমানে কর্মরত ১৫ জন শিক্ষক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং হিসাববিজ্ঞানে একজন করে সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য। অন্যদিকে গণিত, দর্শন, ব্যবস্থাপনা, ইসলামের ইতিহাস ও আইসিটি বিভাগে একজন করে প্রভাষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। শরীর চর্চা শিক্ষক পদও শূন্য। শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুটি ভবন ব্যবহৃত হচ্ছে, অন্য দুটি ভবন ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কলেজে একটি নতুন ছয় তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণাধীন। এটির কাজ শেষ হলে পাঠদানের জন্য ভবনের চাহিদা দূর হবে। কলেজের ছাত্রাবাসটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অরক্ষিত। নেই কোন সীমানা প্রাচীর। বোয়ালমারী সরকারি কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদের সাবেক এজিএস কামরুল সিকদার বলেন, ‘কলেজে নতুন পদ সৃষ্টিসহ শূন্যপদে শিক্ষক পদায়নের চেষ্টা, নতুন নতুন বিষয় খোলা এবং অনার্স চালু করা এলাকাবাসীর প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।’ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নানা সমস্যার মধ্যে কলেজের শ্রেণি ও একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু না হওয়ায় এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো সাবজেক্ট না থাকায় শিক্ষার্থী সংখ্যা অপ্রতুল।’ ‘কলেজের যে জায়গা আছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার মতো জায়গা। আমি নতুন এসেছি। চেষ্টা করছি কলেজের সম্মান পুনরুদ্ধারের।’ অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান যোগ করেন।