নওগাঁর রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার রাস্তা গত চার বছর ধরে কার্পেটিং তুলে ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে রাস্তায় ছোট-বড় গর্ত এবং উঁচু-নিচু টেউ টিনের মতো সুষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে। দীর্ঘ দিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় রাস্তাটি যেন এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষের চলাচলে গলার কাঁটায় পরিনত হয়েছে। দূর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানাগেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ পর্যন্ত মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তায় যানবাহন চলাচলে চাপ বাড়লে এবং এলাকার জনমানুষের জীবন-মান উন্নয়নে রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। রাস্তাটি রাণীনগর-আবাদপাুকুর থেকে কালীগঞ্জ হয়ে নাটোরের সিংড়ার ঢাকা-রাজশাহী মহা সড়কের সাথে মিলিত হয়েছে। ২৬টি কালভার্ট ও ৪টি ব্রীজ পূর্ণ নির্মান এবং রাস্তাটি টিকসই, মজবুত ও প্রসস্থ করে পাকা করনের লক্ষে ২০১৮ সালে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ থেকে টেন্ডার দেয়া হয়। এর পর রাস্তার সমস্ত কার্পেটিং তুলে কোন রকমে রোলার দিয়ে ফেলে রাখে এবং বেশ কিছু কালভার্ট ও ব্রীজ ভেঙ্গে নির্মান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন করেন। এর পর অতিরিক্ত সময়েও কাজ শেষ করতে না পারায় চলতি বছরের গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার দেয়। এতে আগের ঠিকাদার নতুন করে দেয়া টেন্ডারের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। এর পর আর কাজ শুরু হয়নি। এলাকা বাসি জানান, দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ থাকায় রাস্তার মধ্যে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার কোথাও কোথাও টেউ টিনের মতো উচুঁ-নিচু হওয়ায় যানবাহন চলা চল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। এছাড়া প্রতিনিয়ত কম-বেশি নানান রকম দূর্ঘটনা লেগেই আছে। এলাকাবাসী জানান, বর্ষার সময় আসলে পুরো রাস্তা কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। আবার খড়া হলে ধুলা-বালিতে অন্ধকার হয়ে যায়। এসব দূর্ভোগ এড়াতে অধিকাংশ লোকজন রাণীনগর পৌছতে মূল রাস্তায় না গিয়ে বিকল্প পথে প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করছেন। অটো-রিক্সা,ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা জানান, ভাঙ্গা রাস্তায় গাড়ী চলাচলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে গাড়ীর বিভিন্ন যত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হচ্ছে। রাস্তায় চলাচলে গাড়ীর যাত্রী নজরুল ইসলাম, ছবেদ আলী, আবুল কালাম আজাদসহ যাত্রীরা জানান,রাস্তার যে দূর্গতি একবার চলাচল করলে শরীরের হার এবং বিভিন্ন জয়েন্টে প্রচুর ব্যথায় শরীর অচল হয়ে পরে। তবে এই রাস্তায় গর্ভবতি নারী কিম্বা জটিল কোন রুগী পরিবহন করা সবচাইতে কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। এছাড়া মালামাল পরিবহনে একদিকে যেমন চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্য দিকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। দ্রুত এই রাস্তার কাজ শেষ করে এলাকাবাসীকে দূর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসি। নওগাঁ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন,নতুন করে টেন্ডার দেয়ার পর আগের ঠিকাদার মামলা দায়ের করেছিলেন। ফলে সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। ইতি মধ্যে গত ২৯ নভেম্বর দায়েরকৃত মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করা হবে।