বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন

বিক্ষোভে উত্তাল নাগাল্যান্ড, বিশেষ আইন প্রত্যাহারের ডাক

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১

ভারতীয় সেনা সদস্যদের গুলিতে ১৪ তরুণের মৃত্যুর পর কেটে গেছে বেশ কিছুদিন। কিন্তু নাগাল্যান্ডে উত্তাপ কমার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টো তা বেড়েই চলেছে। এতদিন যা সীমাবদ্ধ ছিল অকুস্থল মন জেলায়, এবার তা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার অনলাইন এ খবর জানিয়েছে। শুক্রবার নাগাল্যান্ডের কোহিমায় বিশাল মিছিল করেছে রাজ্যের প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন। প্রতিবাদ মিছিল থেকে দাবি উঠেছে, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির এবং আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট (আফস্পা) প্রত্যাহারের। পাশাপাশি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি ছিল প্রতিবাদীদের ব্যানার, পোস্টারে।

গত ৪ ডিসেম্বর, নাগাল্যান্ডের মন জেলায় জঙ্গি ভেবে একটি ট্রাক লক্ষ্য করে গুলি চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। তার পর স্থানীয়দের সঙ্গে সেনার সংঘর্ষে মৃত্যু হয় মোট ১৪ জনের। এরপর কেটে গেছে ১৩ দিন। কিন্তু স্থানীয়দের ক্ষোভ কমার কোনও লক্ষণ নেই। শুক্রবার ক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমায়। বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে আবার উঠেছে আফস্পা প্রত্যাহারের গণদাবি। গতকাল শুক্রবার নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমায় প্রতিবাদ মিছিল করে প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন নাগা স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এনএসএফ)। তাতে যোগ দেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। ক্রমেই কলেবরে অতিকায় হয়ে ওঠে সেই প্রতিবাদ মিছিল। মিছিল থেকে দাবি ওঠে, উত্তর-পূর্ব থেকে অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহারের এবং গণহত্যায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির। মিছিলে অংশ নেয়া মানুষের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড। তার কোনওটিতে লেখা, ‘আফস্পা প্রত্যাহারের আগে আর কত বুলেট চলবে?’ ‘আফস্পা বাতিল করুন, আমাদের নয়’-সহ বিভিন্ন পোস্টার।
শুক্রবার ছিল লাগাতার প্রতিবাদের তৃতীয় দিন। মন জেলায় সেনার গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল। তবুও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ প্রশমনের কোনও উপসর্গ নেই। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, এতোদিন আন্দোলন মোটের উপর সীমাবদ্ধ ছিল মন জেলায়। এবার তা ছড়িয়ে পড়ল রাজধানী কোহিমাতেও। এতেই প্রশাসনের রক্তচাপ বেড়েছে। কোনইয়াক ইউনিয়নের সম্পূর্ণ অসহযোগিতা দিয়ে আন্দোলনের শুরু। তার চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইএনপিও)। তারা ডাক দেয়, ভারতের সব উৎসব পালন থেকে নাগাল্যান্ড থেকে বিরত থাকার।
ওই এলাকায় সেনার কোনও প্রকার ভর্তি প্রক্রিয়াতেও স্থানীয়দের অংশ নিতে বারণ করে দেয় তারা। বৃহস্পতিবার মন জেলায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত সামগ্রিক হরতাল পালিত হয়। শুক্রবার বিরাট প্রতিবাদ মিছিল আছড়ে পড়ল রাজধানী কোহিমায়। ফলে ক্রমশই যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে, তা স্পষ্ট। গতকাল শুক্রবারের প্রতিবাদ মিছিল থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও পদত্যাগ দাবি করা হয়। অমিত শাহকে নাগাল্যান্ডবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি ওঠে। গত ৬ ডিসেম্বর সংসদে অমিত শাহের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, সেনা ট্রাকটিকে থামতে বললে, তা গতি বাড়িয়ে ছুটে। তখন জঙ্গি সন্দেহে গুলি চালায় সেনা। কিন্তু এই দাবি মানতে চাইছেন না নাগাল্যান্ডের মানুষ। তাদের উল্টো দাবি, সংসদে মিথ্যা ভাষণের জন্য অমিত শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে। এর আগে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা উত্তর-পূর্ব থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাচক্রে তারা দু’জনেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ-এর সদস্য। এবার শুরু হয়ে গেল জোরদার গণ-আন্দোলন। সব মিলিয়ে নাগাল্যান্ড নিয়ে কেন্দ্রের মাথাব্যথা ক্রমেই বাড়ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com