বর্তমান বাজারে ভোজ্য তেল ও খৈলের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় এবার অধিক পরিমান জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় ১৫০হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং বর্তমান দর সরিষা কাটার পর থাকলে অনেক লাভবান হতে পারবেন। রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত বছর উপজেলা জুরে প্রায় দুই হাজার ৭০০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু এবছর তা বেরে দুই হাজার ৮৫০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষকরা জমিতে বারি সরিষা-৯,১৪,১৫ ও ১৭ এবং টরি-৭সহ বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ করেছেন। শীত মৌসুমে আবহাওয়া ও সরিষা চাষে উপযোগি মাটি হওয়ায় এবং ভোজ্য তেল ও খৈলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর সরিষা চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, সরিষা চাষে যে পরিমানে জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়, তাতে সরিষা কেটে ইরি ধান চাষ করতে তেমন খরচ হয়না। ফলে সরিষা চাষের খরচেই প্রায় ইরি ধান চাষ করা যায়। এছাড়া সরিষা চাষে জমির মাটিও খুব উর্বর থাকে তাই ধানের ফলনও ভাল হয়। কালীগ্রামের কৃষক মো: আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত প্রায় ১০ বছর পর এবার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সরিষা রোপন করেছেন। একই গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, বাজারে তেল এবং খৈলের দাম বেরেছে। এবার সরিষার ভাল দাম পাওয়া যাবে এমন আসায় তিনি প্রায় পৌনে চার বিঘা জমিতে সরিষা রোপন করেছেন। হরিপুর গ্রামের কৃষক চন্দ্র সাহা জানান,গত বছর ১২কাঠা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন। তাতে বাজারদর অনুযায়ী বিক্রি করে সামান্য লাভ হয়েছিল। কিন্তু এবছর তেল এবং খৈলের দাম দিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সরিষাও বাজারে বেশি দামে বিক্রি হবে এবং অধিক লাভবান হতে পারবেন এমন আসা নিয়ে প্রায় ২বিঘা জমিতে সরিষা রোপন করেছেন। রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: শহিদুল ইসলাম বলেন,গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ১৫০ হেক্টর পরিমান জমিতে সরিষা চাষ বেশি করেছেন কৃষকরা। গত বছরই সরিষার ফলন এবং বাজারদর অনুযায়ী কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। এবছর তেল ও খৈলের মূল বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা অধিক পরিমান জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি বলছেন, এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে বারি সরিষা-১৭ ও ১৪ জাত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন এবং বাজার দরে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।