যদিও মনে হচ্ছে, কিন্তু আসলে হঠাৎ করে নেয়া সিদ্ধান্ত নেয়। বরং বিরাট কোহলিকে ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে সরানোর জন্য গাঙ্গুলি-শাহের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড চার মাস ধরে ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল। কয়েক দিন আগে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বিরাট কোহলিকে। টি২০-এর পাশাপাশি একদিনের ক্রিকেটে ভারতের ক্যাপ্টেন করা হয়েছে রোহিত শর্মাকে। এ নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। কোহলি এখন কেবল টেস্ট দলের অধিনায়ক। আরেকটি খবর হলো, কোহলির সাথে রোহিত শর্মার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো নয়। দলে দুজন দুই মেরুতে থাকেন বলে অনেকেই বলছে।
কোহলিকে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নেতৃত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে গিয়ে বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোহলিকে টি২০-র নেতৃত্ব ছাড়তে বারণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি তার পরামর্শ শোনেননি। বিরাট কোহলি কিন্তু সৌরভের বক্তব্য সরাসরি খ-ন করে জানান, তাকে মোটেই টি২০ নেতৃত্বে থেকে যাওয়ার জন্য কেউ অনুরোধ করেননি। বরং তার পদত্যাগপত্র সাদরে গ্রহণ করা হয়েছিল।
কোহলির বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়ার পাল্টা অবশ্য যুক্তি দেয়নি বোর্ড। প্রেস কনফারেন্স তো বটেই প্রেস রিলিজও বের করেনি বোর্ড। তবে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের পক্ষ থেকে কোহলির সম্পর্কে কোনো বৈরী মনোভাব নেই। বরং কোহলির তরফে বোর্ডের সাথে সমস্যা থাকতে পারে। কারণ তিনি বেশির ভাগ সময় বোর্ডের সাথে যোগাযোগ রাখতে চাইতেন না। নির্বাচক কমিটিকেও প্রাপ্য মর্যাদা দিতেন না কোহলি। সেই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে একজন ক্যাপ্টেনকে ধরে চলার পক্ষপাতী বোর্ড। তাই গত চার মাস ধরে কোহলিকে অপসারণের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হচ্ছিল।
বোর্ডের সূত্র টাইমস নাও-কে জানিয়েছেন, কোহলির ক্যাপ্টেন হিসেবে আইসিসি টুর্নামেন্টের ব্যর্থতায় তাকে সরিয়ে দেয়া মোটেই কঠিন ছিল না বোর্ডের কাছে। কোহলি নিজেই অবশ্য এই দাবি মেনে নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলে দেন, ‘ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে কেন আমাকে সরানো হল, তার কারণ আমার কাছে পরিষ্কার। কারণ আমরা একটাও আইসিসি ট্রফি জিতিনি। এই সিদ্ধান্ত ভুল হোক না ঠিক, এই কারণ নিয়ে জল্পনার কোনো অবকাশই নেই। এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি যুক্তিযুক্ত।’
বোর্ডের সূত্র টাইমস নাও-কে আরো বলেছেন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আপাতত কোহলির ওপর ভয়ঙ্কর ক্ষুব্ধ। এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয়া হবে, তা নিয়ে বোর্ডের অন্দরে আলোচনা চলছে। বোর্ডের হাতে আপাতত দুটি অপশন রয়েছে। এক, এই বিষয়ে বোর্ড সরকারি বিবৃতি দিতে পারে। দুই, কোহলিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পরে বিরাটকে শো-কজ নোটিশ ধরিয়ে দেয়া। বোর্ড কোন পথে হাঁটে, সেটাই আপাতত দেখার। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস