সরকার পতনে রাজনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। গতকাল বুধবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল এবং ‘অগ্নিঝরা মতিহার ও রিজভী আহমেদ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নোমান বলেন, ‘এই সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার। এই সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের এবং জাতীয়বাদী ঐক্যের যে রাজনীতি সেটার কৌশল পরিবর্তন প্রয়োজন। সেই কৌশলের পরিবর্তন যদি না হয়, তাহলে আন্দোলনে আমরা সফল হতে পারবো না।’ তিনি বলেন, ‘এই স্বৈরাচারী সরকারের রূপটা ফ্যাসিবাদী হয়ে গেছে। এই যে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। এই মৌলিক পার্থক্য অনুধাবন করে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে না পারলে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারবো না।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমরা বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী সরকারের সমালোচনা, মিছিল এগুলো করবো। কিন্তু এগুলো দিয়ে কি সরকারের পরিবর্তন আসবে? পরিবর্তন ছাড়া কি খালেদা জিয়া আজকে যে অবস্থায় আছেন সেখান থেকে মুক্ত হবেন? এই প্রশ্নগুলো যখন আমাদের সামনে ভালোভাবে আসবে, তখন আমরা করণীয় নির্ধারণ করতে পারবো এবং সেই কার্যক্রমে এক সুসংগঠিত নেতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।’
ক্ষমতাসীনরা কথা রাখেননি: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা কথা রাখেননি। তারা এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে যাবেন না বলে ঘোষণা দিলেও পরে এরশাদের সঙ্গে লং ড্রাইভে গিয়ে টাকার ভাগ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন। আর আওয়ামী লীগ হচ্ছে অন্ধকার পথের যাত্রী। বর্তমান সময়ে আমাদের মন ভালো নেই। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভীষণ অসুস্থ। তার মুক্তির জন্য আমাদের এই মুহূর্তে রাজপথে নেমে আসা উচিত। যার বক্তব্যে আমরা উজ্জীবিত হতাম, যেই নেত্রী কখনো নির্বাচনে পরাজিত হননি, অন্যায়ের সঙ্গে কখনো আপস করেননি। সেই নেত্রীকে তিলে তিলে শেষ করে দেশকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বানানো এই সরকারের আসল লক্ষ্য। এজন্যই ছলে বলে কৌশলে খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৯৮৪ সালের ২২ ডিসেম্বর আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু পরদিন ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদে বলা হয় যে মারা যাননি বরং মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ২২ ডিসেম্বর আমার জীবনে একটি ঐতিহাসিক রক্তঝরা দিন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ও বাংলাদেশ পিঠোপিঠি ভাইবোন হয়ে গেছে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কত মা তার সন্তান হারিয়েছে কি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পিঠোপিঠি ভাইবোন হওয়ার জন্য? কিন্তু আজ আমরা তাই দেখতে পাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বাঁচা-মরা আল্লাহর হাতে। চিকিৎসা দেবেন আপনি। কোনও কারণে যদি আপনি চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে সৃষ্ট পরিস্থিতি দায় আপনাকে নিতে হবে।’
রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (রুনেসা) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন সভাপতিত্ব করেন রুনেসার সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার।রুনেসার সেক্রেটারি মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবিরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কেন্দ্রীয় নেতা রমেশ দত্ত, আমিনুল ইসলাম, রুনেসার নেতা মাহবুবুল আলম ফরহাদ, আনোয়ারুল ইসলাম আনু, নূরুজ্জামান তপন, রফিকুল ইসলাম মন্টু, ইউসুফ আলী মোল্লা, মতিউর রহমান মতি, কাজী খাইরুল্লাহ শিপন, মাহমুদুল হাসান মিলন প্রমুখ।