বাগেরহাটের চিতলমারীতে গত ৫ বছর ধরে ধীর গতিতে চলছে বিদ্যালয় নির্মাণের কাজ। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া নির্মাণ কাজ ১৯ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫ বছর পার হওয়ার পরও কবে নাগাদ এ কাজ শেষ হবে সেটি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিপাকে পড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ৮৩ নং বেন্নাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ভেঙে চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নতুন স্কুলভবন নির্মাণের কাজ ২০১৮ সালে শুরু করা হলেও করোনাসহ নানা অজুহাতে ২০২২ সালেও নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়নি। এতে ওই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ৬০ জন শিক্ষার্থীর পড়াশুনা দারুণ ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল ভবনে ক্লাস করানোর পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে বসে পাঠদান করানো হচ্ছে তাদের। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তারাপদ বিশ্বাস হতাশা ব্যক্ত করে জানান, স্কুল ভবন নির্মাণে ঠিকাদারদের গাফিলতি রয়েছে। এ বছর পহেলা জানুয়ারীতে বই উৎসবের জন্য ঠিকাদারকে তিনি একটি রুমের কাজ শেষ করার জন্য অনেক অনুরোধ করেও কোন লাভ হয়নি বলে অভিযোগ তার। কবে নাগাদ ভবনের কাজ শেষ হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। ক্লাসরুম না থাকায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করানো হচ্ছে শিশুদের। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শিশুদের পড়াশুনা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এছাড়া ওই প্রকল্পের আওতায় ৭৮ নং রুয়েরকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাজ ওই একই সময়ে শুরু করা হলেও সেখানে কাজের কোন অগ্রগতি নেই। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ ব্রহ্ম জানান, কবে ভবনের কাজ শেষ হবে জানা নেই্। এ পর্যন্ত ভবন নির্মাণে ৩জন ঠিকাদারের হাত বদল হয়েছে। তবে তিনি খুব হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, নতুন ভবনে ক্লাস করে যেতে পারব কিনা জানি না। কারণ চলতি বছরে ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা অবসরে চলে যাচ্ছেন। ওই শিক্ষিকার ভাগ্যে হয়তো নতুন ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানোর সুযোগ হবে কি-না সেটি জানা নেই। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ ব্রহ্মও তিনিও কয়েক বছরের মধ্যে অবসরে যাবেন। এ অবস্থায় কোথায় রেখে যাবেন শিশুদের সে হিসাব মেলাতে পারছেন না। এ বিষয়ে ৮৩ নং বেন্নাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঠিকাদার গোপালগঞ্জের শুভ রহমান জানান, করোনাসহ নানা কারণে নির্মাণ কাজে সমস্যা তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে বলে অভিমত দেন তিনি। উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আলী আকবর জানান, স্কুল ভবন নির্মাণে ধীরগতি এ বিষয়ে রেজুলেশনের মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এর জন্য তিনি ঠিকাদারদের গাফিলতিকে দায়ী করেন। উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাদ্দাম হোসেন জানান, তিনি একমাস আগে এখানে যোগদান করেছেন। সেহেতু আগে কি হয়েছে সেটি তার জানা নেই। ওইসব স্কুল ভবন নির্মাণের জন্য ঠিকাদারদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।