গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পের আওতায় মহিলাদের নানাবিধ সেবা দিয়ে আসছে “তথ্যআপা”। মহিলাদের তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা, চাকরীর আবেদনপত্র পূরণ, ভর্তি পরীক্ষার ফরম পূরণ, বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল, ই-মেইল, মেসেঞ্জার, স্কাইপির সাহায্যে যোগাযোগ, কৃষি, শিক্ষা, ব্যবসা, ইত্যাদি সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান, আইনী সহায়তার পরামর্শ প্রদান, মহিলাদের ডায়বেটিকস পরীক্ষা, রক্তচাপ পরীক্ষা, তাপমাত্রা, ওজন মাপা, গ্রামীণ নারীদের উৎপাদিত ও সংগৃহীত পণ্য বিক্রয়ের জন্য লালসবুজ ডটকম মার্কটপ্লেস পরিচালনাসহ মহিলাদের দৈনন্দিন নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করছে “ তথ্যআপা”। সেই ধারাবাহিকতায় সীতাকু-ের মুরাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রহমত নগর গ্রামের মহিলাদের নিয়ে উঠান বৈঠক কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ জানুয়ারি বিকাল পাঁচটায় ওই গ্রামের সিরাজ ভূঁইয়া বাড়িতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার লুৎফুন নেছা বেগম, তথ্য অফিসার শারমিন সুলতানা, সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ, নারী উন্নয়ন কর্মী মুনমুন ভূঁইয়াসহ উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরে কর্মরতরা। উঠান বৈঠকে বক্তারা বলেন, একটি সাইকেলের যেমন দুটি চাকার একটি বিকল হয়ে গেলে সাইকেলটি অচল হয়ে যায়। ঠিক তেমনি সংসারে স্বামী-স্ত্রীর যেকোন একজন অসুস্থ হয়ে গেলে কিংবা অসাড় হয়ে গেলে সেই সংসারও অচল হয়ে যায়। আগেকার দিনে মহিলারা ঘরবন্দী ছিল, তখনও রোকয়া বেগমরা নারী জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে নারীদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। সকল নারীই কর্মক্ষম হতে পারে তার নিজ নিজ আঙ্গিকে। এতে সংসার সুখি হয়। সংসারে স্বচ্ছলতা বাড়ে। বর্তমান সরকার নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছে। সেই লক্ষ্য নারীদের তথ্য ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। উপজেলা পরিষদে তথ্য অফিস চালু করা হয়েছে। যেখানের জনশক্তি শতভাগ নারীদের রাখা হয়েছে। গ্রামীণ মহিলাদের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানিয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর। আজকের সমাজের নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। নতুন নতুন কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে স্বনির্ভর হয়ে ওঠতে হবে। সাহায্য-সহযোগিতা নয় নারীদের আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠতে হবে। নারীরা সমাজের সম্পত্তি নয় সম্পদে পরিণত হতে হবে। ইচ্ছে শক্তি থাকলে সবকিছু করা সম্ভব। একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলে যদি হাত বা পা দিয়ে লিখতে পারে তাহলে হাত-পাসহ অন্যান্য অঙ্গ থাকা স্বত্বেও আমরা স্বনির্ভর হতে পারব না কেন? আমাদের শরীরের মৃত্যু যদি হয় আত্মার মৃত্যু যেন না হয়। কাজ ও শিক্ষা মানুষকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেয়। উঠান বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, চিকিৎসা সুবিধা, সেলাই, হস্তশিল্প প্রশিক্ষণ, ঋণ সুবিধাসহ সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে মহিলাদের বিস্তারিত ধারণা দেন বক্তারা। উঠান বৈঠকে অর্ধশতাধিক নারী অংশ নেন।