শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

জামালপুরে ভেকু দিয়ে পুকুর খননে নিঃচিহ্ন হচ্ছে ঘরবাড়ী

এম এ কাশেম জামালপুর :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২২

জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার পূর্ব দাগি গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একজন কৃষক হত্যা কান্ডের ঘটনায় বিবাদীগণের প্রায় ৭টি পরিবারের বাড়িঘর মধ্যযুগিয় কায়দায় লুটপাট ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ করেছে পতিপক্ষের লোকজন। পাশপাশি স্থানীয়দের উপস্থিতিতেই ভেকু দিয়ে ১২/১৩টি টিনসেড বিল্ডিং দ্বিতল বাড়িসহ, একটি রাইচ মিলস, গরুর খামার ভেঙ্গে সেখানে করা হয়েছে পুকুর। বসত ভিটার মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটের ভাটায়। ফলে বর্তমানে ৭টি পরিবারের শিশু বৃদ্ধসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ গৃহহীন হয়ে রাস্তার পাশে আবার অনেকেই আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে অমানবিক জীবন যাপন করেছেন। এসব ঘটনায় মামলা নিতে অনীহা রয়েছে পুলিশের বিরোদ্ধে।জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের ২৬ জুলাই বিকালে পূর্বদাগী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম নামে একজনকে হত্যা করে দুবৃত্তরা। ঐ হত্যা কান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে মেলান্দহ থানায় ২৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বিবাদী পক্ষের নারী-পুরুষসহ অধিকাংশ আসামী আটক করে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। অবশিষ্টরা পলাতক লোকশূন্য থাকার থাকার সুযোগে বাদী পক্ষ আজাহারগংরা বিবাদীগণের বাড়িঘরে টানা ১৫ দিন লুটপাট ভাংচুর চালায়। শুধু তাই নয় বাড়ি ঘরে থাকা আসবাবপত্র, চাল-ডাল, রাইছ মিলের ৩টি গুদামে থাকা ধান-চাল, দুইটি খামারের ২৬ টি গরুসহ মোট ৩৪টি গরু লুট করে নেয়া। তার পর শুরু করে মধ্যযুগিয়ে কায়দায় ঘরবাড়ি ভাঙচুর। হেমার, শাবল ও ভেকু দিয়ে হত্যা মামলার বিবাদী রফিকের একটি রাইস মিল, দুইটি ধানের গুদাম, একটি চালের গুদাম পাঁচটি হাফ বিল্ডিং ঘর, ৩টি রান্না ঘর ও দুইটি গরুর ফার্ম অপর জনের ৫টি বিল্ডিং ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ঘরের চালার টিন ও বিল্ডিং এর ইট গুলো পর্যন্ত খুলে নিয়ে যায়। শুধু তাই নয় এরপর বসত ভিটে মাটি ভেকু দিয়ে খনন করে সেখানে করা হয়েছ পুকুর। এ বিষয়ে সরেজমিন উপস্থিত হলে দেখা যায় নানা অজানা কাহিনী। পুলিশী ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, পুলিশের উপস্থিতিতেই দীর্ঘ সময় ধরে চলে লুটপাট ও ভাঙ্গচুরের ঘটনা। ঘটনাস্তলে গিয়ে দেখা যায় দু’তলা বাড়ি ভেঙ্গে ভেকু লাগিয়ে খনন করা হচ্ছে পুকুর। নজরুল ও শাহজাহানের দুইটি বিল্ডিং ও দুটি হাফ বিল্ডিং ঘর ও দুইটি রান্নাঘর ভেঙ্গে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে পুকুর। এখান থেকে লুট করে নিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকার সম্পদ। দোকানের মালামাল লুটপাট করে নিয়েছে। পরবর্তীতে দোকানঘরগুলো ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। আবার সে জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে নতুন টিনশেড ঘর। ১০ জানুয়ারি সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরে তোলে দেয়া হচ্ছে। পরে জানা যায় এখান থেকে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে ইটের ভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। সাংবাদিক এবং ক্যামেরা দেখে দুইটি মাটিভর্তি ট্রাক্টর চলে গেলেও সেখানেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল ভেকু। এলাকাবাসিরা জানায় বাড়িঘর লুটপাট করে নেওয়ার সময় সতেরটি গরু এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলে লোকজন ঐসমস্ত গরু আটক করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন। মেলান্দহ থানা পুলিশ আখি নামক এক মহিলার জিম্মায় ১৫ডঁ গরুগুলো দিয়ে দেয়। এই মহিলার স্বামী ও তার তিন দেবর বিক্রি করে নিজেরাই আত্মসাৎ করেছেন। আবশিষ্ট ২ টি গরু স্থানীয় কয়েকজন জবাই করে মাংস বিক্রি করার সময় পুলিশ তাদেরকে আটক করে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারের উপস্থিতিতে এদেরকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে থানার ওসির কাছে জমা রাখেন। কিন্ত টাকাগুলো গরুর মালিকগণ এখনও টাকা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে মামলার বাদী আজহারুল ইসলামের সাথে গত ৩ দিন চেষ্ঠা করে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাই রাসেল এর কাছে কাছে বাড়িঘর লুটপাট ভাংচুরসহ বসতভিটা পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তার কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। পওে তিনি বলেন, মার্ডারের পর উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপস্থিতিতে এসব করেছেন বলে জানান।এব্যাপরে নয়ানগর ইইপির চেয়ারম্যান শফিউল আলম সাহাবুদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার কওে বলেন, বাড়ি ভাংচুর লুটতারাজের ঘটনা হত্যা মামলার বাদী পক্ষ জুড়িত। মেলান্দহ থানার ওসি এমএম মাইনুল ইসলাম এর কাছে বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাটসহ বসত ভিটা পুকুর খননের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে বলেন, হত্যা কান্ডর ঘটনার পর মামলার বাদীপক্ষের লোকজনসহ উত্তেজিত জনতা এসব অঘটন ঘটিয়েছে বলে উল্লেখ করেন।এব্যাপাওে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহম্মেদ এর কাছে বিবাদীগণের বসত ভিটা ভেকু দিয়ে পুকুর খনন করা হচ্ছে জানতে চাইলে, তিনি তাৎক্ষনিক খানার ওসিকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভেকু ও ট্রাক্টও আটকের নির্দ্দেশ দেন। উল্লেখ যে, গত বছরের ২৬ জুলাই বিকালে জমি সংক্রান্ত বিরোধে কে কেন্দ্র করে মেলান্দহ উপজেলার পুর্বদাগি গ্রামে জাহাঙ্গীর আলম নামে একজনকে হত্যা করা হয়। ঐ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই আজাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী-পূরুষসহ মোট ২৩জনকে আসামী কওে মেলান্দহ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com