কুমিল্লা তিতাসের দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী সাঃ মাদ্রাসার সুপার মো.ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে দুধঘাটা নুরে মোহাম্মদী সাঃ মাদ্রাসার অভিভাবকবৃন্দ ও এলকাবাসীর ব্যানারে ১৫ জানুয়ারীর কাউন্টার মানববন্ধনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ও উপজেলা শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। ১৫ জানুয়ারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দের পক্ষে বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের যুগ্ম-মহাসচিব ও বাতাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. মামুনুর রশিদ বলেন, আজকের দুধঘাটায় অনুষ্ঠিত কাউন্টার মানববন্ধন দেখে আমরা শিক্ষক সমাজ খুবই মর্মাহত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানববন্ধন দেখে যে কেউ উপলব্ধী করতে পারবে এগুলো হলো সব শিখানো বুলি, মনে হচ্ছে ওনাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সুপার ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে বলানো হচ্ছে, আমরা যারা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি তারা একদিকে যেমন উপজেলা প্রশাসনের নজরে থাকি পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটির নামে স্থানীয় প্রশাসনের নজরে থাকি, তাই সুপার হিসেবে এত অন্যায় করার কোন সুযোগ নেই। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষককে হামলা করে প্রাননাশের চেষ্টা করা হলো অথচ তাকে সান্তনা দেওয়ার পরিবর্তে মানববন্ধনের নামে দুধঘাটায় আজ যা করেছে তা অত্যান্ত দুঃখজনক। আমরা তিতাসের সকল প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক উপজেলার সামনে মানববন্ধন করেছি অতিসত্ত্বর দোষীকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানিয়েছি, পাশাপাশি অসহায় এই শিক্ষকের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। দুধঘাটা নূরে মোহাম্মদী (সাঃ)দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইব্রাহীম খলিল আজ তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্হায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সাংবাদিকদের জানান, মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি তিতাস উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এম আবু নওশাদ মহোদয় গত ০৫/১২/২১ ইং মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে আমি ২২/১২/২১ ইং মাদ্রাসার বিভিন্ন বিষয়ে লিখিতভাবে বর্তমান সভাপতি মহোদয়কে জানাই, এতে সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে দেখা নেয়া সহ প্রাননাশের হুমকী দেন। গত ১১ জানুয়ারী মাদ্রাসার কাজ শেষ করে আমার দাউদকান্দির বাসায় যাওয়ার পথে দেলোয়ার হোসেনের ইন্ধনে বাদল মিয়ার ছেলে হাসানের নেতৃত্বে ৫/৬ জন সন্ত্রাসী আমাকে ও আমার স্ত্রী একই মাদ্রাসার শিক্ষক শরীফুন আক্তারের উপর হামলা চালিয়ে মারধর সহ আহত করে। এলাকার লোকজন ও আমার আত্মীয়স্বজন আমাদের উদ্বার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। হামলার পরের দিন ১২ তারিখে তিতাস উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষক সমাজের শত শত সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ আমার উপর হামলা সহ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবিতে তিতাস উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন এবং একই দিন আমার কর্মস্হল দুধঘাটা মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীগণ আমার উপর হামলার প্রতিবাদে একদিনের কর্মবিরতি পালন করেন। ১৩ জানুয়ারী আমার স্ত্রী শরীফুন নাহার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় এজাহার দায়ের করেন। আমি সহ সচেতন মহল মনে করে, আমার উপর হামলার বিচার চেয়ে উপজেলার সর্বস্তরের শিক্ষক সমাজ সহ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করা সহ আমার ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে বিঘœ সৃস্টি করার লক্ষে আজ ১৫ জানুয়ারী শনিবার মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন প্রায় শতাধিক লোককে ভুরিভোজ করানো সহ ৫০০-১০০০ টাকা করে ভাড়ায় এনে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের নামে নাটক মঞ্চস্থ করেছে এবং আমার বিরুদ্ধে তাহার ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও কুরুচিপূর্ণ অভিযোগের মাধ্যমে কাউন্টার মানববন্ধন করান, আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের ব্যবস্হা গ্রহণের দাবি জানাই, আজ যারা আমার বিরুদ্ধে কাউন্টার মানববন্ধনে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে আমার সম্মানহানী করেছে অচিরেই আমি প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহণ করব। ইব্রাহিম খলিল এর অভিযোগ সম্পর্কে আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেনের কাছে মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন আপনাদের বিবেক আছে, বিবেক দিয়ে বিচার করেন কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা এবং তিনি তাহার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল দীর্ঘদিন বিনাবেতনে শিক্ষকতা করেছেন, ওনার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠানটি দাখিল পর্যন্ত এমপিওভূক্ত হয়েছে।