শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

তিস্তার পানিতে ৫৩হাজার হেক্টরে বোরো আবাদ

নীলফামারী প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২২

৫৩হাজার হেক্টর জমিতে তিস্তার সেচ দেয়া হচ্ছে চলতি বোরো মৌসুমে। এর সুবিধা পাচ্ছেন তিন জেলার ১২ উপজেলার পাঁচ লাখ কৃষক। এবারই সবচেয়ে বেশি এলাকায় সেচ দিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৪হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ইতোপুর্বে সেচ প্রদানে ব্যাঘাত ঘটে। সুত্র জানায়, ২০১৬ সালে ১০ হাজার হেক্টরে, ২০১৭ সালে ৮ হাজার হেক্টরে, ২০১৮সালে ৩৫হাজার হেক্টরে, ২০১৯সালে ৪০ হাজার হেক্টরে, ২০২০সালে ৪১হাজার হেক্টরে, ২০২১সালে ৫৩হাজার হেক্টর জমিতে দেয়া হয়। গত মৌসুমে নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রা এবারো ঠিক রেখে ৫৩হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়। যা ইতোমধ্যে শুরু শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন এক বছরে বিঘা প্রতি ১৬০ টাকা নেয়া হয় কৃষকদের কাছ থেকে এবং একর প্রতি(তিন বিঘা) নেয়া হয় ৪৮০টাকা। নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ১২উপজেলার ২৪২টি পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সহযোগীতায় নির্ধারণ হওয়া এলাকায় সেচ দেয়া হবে রোটেশন অনুযায়ী। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ২০০৩ সালে সেচ কার্যক্রম শুরু করে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প। টারশিয়ারী ও সেকেন্ডারী মিলে ৭৬০ কিলোমিটার ক্যানেল থেকে এই সেচ সুবিধা দেয়া হয় সুবিধাভোগী কৃষকদের। পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি কিশোরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সেচ পাম্প বা শ্যালো মেশিন দিয়ে বোরো আবাদে খরচ হয় অন্তত ১০ হাজার টাকা সেখানে তিস্তা সেচ প্রকল্পের ফলে মাত্র ৪৮০টাকায় সেচ সুবিধা পাচ্ছি আমরা। গত মৌসুম থেকে আমরা বোরো আবাদের কাজ জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকেই শুরু করি। এরফলে সেচ সুবিধা ভালো পাওয়া যায় এবং তিস্তা কমান্ড এলাকার সবাই নির্বিঘেœ সুবিধা পেতে পারেন। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত সেচ সুবিধা দিতে পারে পাউবো। গতবারের মত এবারো ভালো সেচ সুবিধা পাবো। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী শামীম জানান, আমরা পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। পানির যাতে যথাযথ ব্যবহার করা হয়। কোথাও বেশি বা কোথাও কম নয়। যেখানে যতটুকু পানি প্রয়োজন ঠিক সেখানে ততটুকু পানি দিতে প্রস্তুত রয়েছি আমরা। ভালো ফলনের জন্য পানির ব্যবহার নিশ্চিতও করেছি। তিনি বলেন, ইতোপুর্বে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে লক্ষ্যমাত্রা নিরুপণে ব্যাঘাত ঘটেছিলো সেগুলো কেটে উঠেছি আমরা। ২৪২টি সমিতি রয়েছে তাদের সাথে কথা বলে রোটেশন অনুযায়ী পানি দেয়া হবে তিস্তা এলাকায়। জলঢাকা উপজেলা পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি খাইরুল ইসলাম বলেন, আমরা তিস্তার পানি দিয়েই বোরো আবাদ করি। খরচ কম। সময়মত পানিও পাওয়া যায়। সমিতির সদস্যদেরও বলা হয়েছে সময়মত পানি পাওয়া যাবে। একেক এলাকায় একেক সময়। তিনি বলেন, তিস্তা সেচের ফলে বোরো আবাদে খরচ অনেক কম হয়। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী শামীম বলেন, তিস্তা ব্যারেজ রির্জাভারে ১৫হাজার কিউসেট পানি রয়েছে। যা দিয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হওয়া এলাকা সমুহে পানি দেওয়া সম্ভব। নদীতে ফেব্রুয়ারীর দিকে পানি কমতে থাকে তারপরও রোটেশন অনুযায়ী দিলে সমস্যা হয় না। কারণ আবাদটা আমরা জানুয়ারীর প্রথম থেকে শুরুর কথা বলেছি কৃষকদের। সে অনুযায়ী কাজও হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদৌলা জানান, এবার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামীবার আরো বেশি এলাকায় দেয়ার চেষ্টা থাকবে। কারণ আগের চেয়ে এখন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনি বলেন, পুরো মৌসুম মনিটরিং করা হবে সেচপ্রকল্প এলাকায়। এজন্য দায়িত্ব পালন করবেন আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ। বিশেষ করে কেউ যাতে পাইপিং করে পানি নিতে না পারেন। এটা করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরআগে এ রকম ঘটনা ঘটেছিলো। আমরা চাইনা এ রকম কেউ করুক।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com