প্রাণিসম্পদ বিভাগের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহ করার ফলে নাটোরে ডিমের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। বর্তমানে জেলায় প্রায় দেড় কোটি উদ্বৃত্ত ডিম উৎপাদন হচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে জেলায় মাত্র নয় কোটি ডিম উৎপাদন হয়। বিগত ১২ বছর ধরে ডিমের উৎপাদন ক্রমশ বেড়ে ২০২০-২১ অর্থ বছরে হয়েছে ২০ কোটি ৪৫ লক্ষ। জেলার মোট জনসংখ্যা ১৮ লক্ষ ২৬ হাজার ১৪০ জন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে একজন ব্যক্তির বাৎসরিক ডিমের চাহিদা ১০৪টি। জেলার বাসিন্দাদের বাৎসরিক ডিমের চাহিদা পূরণে ডিমের প্রয়োজন প্রায় ১৯ কোটি। অর্থাৎ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকছে এক কোটি ৪৫ লক্ষ ডিম।
বিগত সময়ে জেলায় মুরগীর খামারের সংখ্যাও বেড়েছে। বর্তমানে জেলায় লেয়ার মুরগীর খামারের সংখ্যা ২৬৩টি। খামারের সংখ্যা ও পরিধি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। জেলায় বর্তমানে ছয়টি পোল্ট্রি হ্যাচারি বাণিজ্যিক উৎপাদনে রয়েছে। জিশাস পোল্ট্রি হ্যাচারির সত্ত্বাধিকারী হোসনে আরা বলেন, বিগত সময়ের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পোল্ট্রি উদ্যোক্তারা উৎপাদন পণ্যের মূল্য হ্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখন অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে, বাজারে ডিমের দাম ভালো, খামারীরা লাভবান হচ্ছেন।
বর্তমানে দেশী মুরগী পালন কার্যক্রম বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাজারে দেশী মুরগীর ডিমের দাম বেশী, হালি ৫০ টাকা। নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদও তাঁর বাংলোতে দেশী মুরগী পালন করছেন। ‘নিজেদের পালন করা মুরগীর ডিম সহকর্মীদের খাওয়াতে পারছি, এরচেয়ে আনন্দের আর কি আছে?’ –এ বলে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করলেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ পোল্ট্রি খামারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। হ্যাচারির সংখ্যাও বাড়ছে। করোনাকালীন সময়ে খামারীদের প্রণোদনার অর্থও দেওয়া হয়েছে। সরকারের এসব উদ্যোগের সুফল হিসেবে নাটোর ডিম উদ্বৃত্ত জেলায় পরিণত হয়েছে।