বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ও জারুল ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়েছে ভিন্ন সাজে প্রচন্ড গরমে বরিশালের তৈরী হাত পাখা দেশব্যাপি মানুষের শরীর শীতল করছে, ভাল নেই পাখা কারিগররা সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নের গণ মানুষের ঢল নেমেছে আনারস প্রতীকের পক্ষে মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালো দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন জলঢাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল বন্ধ করার অভিযোগ কালীগঞ্জে পল্লী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিআরডিবির ঋণ বিতরণ সৎ ও নিষ্ঠাবান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবী-উল-কবির নকলায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ফটিকছড়িতে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বশর নামে এক সিএনজি ড্রাইভারকে মারধর! দুর্গাপুরে বিশ্বমা দিবস উপলক্ষে গাছের চারা বিতরণ

সপ্তাহজুড়েই বইবে শৈত্যপ্রবাহ শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২

হঠাৎ করেই তাপমাত্রা অস্বাভাবিক মাত্রায় নেমে গেছে। দেশের সর্বত্রই অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। উত্তর অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। এটি সপ্তাহজুড়েই অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গত শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। পরবর্তী তিন দিনের আবহাওয়া সম্পর্কে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ে আকাশ মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত এবং বিস্তার লাভ করতে পারে।
দেশের বেশির ভাগ জেলায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা নেমে ১১-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে চলে আসতে পারে । গত শুক্রবার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ঢাকায় ১৩ দশমিক ০, ময়মনসিংহে ১০ দশমিক ০, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭, সিলেটে ১৪, রাজারহাটে আজ সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখের পর থেকে শীতের দাপট কমার আভাস জানিয়েছেন।
এ বছর শীত শুরুর আগেই বিজ্ঞানীরা পূর্বভাস দিয়েছেন, ‘লা নিনা ও দুর্বল পোলার ভরটেক্সের কারণে এবারের শীতকাল হবে দীর্ঘায়িত এবং ঠা-াও পড়বে বেশি।’ এবার শীত পৌষ মাসের আগে থেকেই শুরু হয়েছে। কতদিন থাকবে, তা বলা মুশকিল। ইতোমধ্যেই শীতের তীব্রতার কারণে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ব্যাপক কষ্টের মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিত্তহীন মানুষের কষ্টের শেষ নেই। এই কষ্ট শুধু শীত বস্ত্রের নয়, জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম খাবারও অনেকের ঘরে নেই। কারণ শীতের তীব্রতার কারণে মাঠের কাজ বন্ধ। রাস্তাঘাটে লোক চলাচল কমে গেছে। ফলে রিকশা, ভ্যান, ট্রলি চালিয়ে এবং পণ্য ফেরি ও দিনমজুরি করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারাও বেকার হয়ে পড়েছেন। তাই শীতের কষ্টের সাথে যোগ হয়েছে ক্ষুধার জ্বালা। এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্র, সরকার, বিরোধী দল ও সমাজের বিত্তবানদের দায়িত্ব।
পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শীতার্ত মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় সাহায্য পাচ্ছেন অপ্রতুল। তবে আশার কথা হলো সরকারি হিসাবে দেশে কোটিপতি ধনী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। অর্থাৎ দেশের একটি বিশেষ গোষ্ঠী দ্রুত ধনী হচ্ছে। এতে আয়-বৈষম্য বাড়ছে। এ বৈষম্য ঠেকাতে লাগাম টানতে পারলে এবং ধনীদের মানবিকবোধ জাগ্রত করলে শীতবস্ত্র ও ক্ষুধায় অন্ন দুটি সমস্যারই সমাধান হবে বলে আমরা মনে করি। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠীর হাতে ধন-সম্পদ কুক্ষিগত হওয়ার কারণে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে। কারণ সরকার আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন ও লুটপাট বন্ধে ব্যর্থ। এ ব্যর্থতার কারণে ভুখামিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে। এ মিছিল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মাথাপিছু আয় এবং প্রবৃদ্ধি কোনোটাই কাজে আসবে না। ধনী আরো ধনী এবং গরিব আরো গরিব হওয়া বন্ধ করতে হবে। কিন্তু চাইলেই তো সব হয়ে যায় না। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া দুর্নীতি বন্ধ ও বৈষম্যের মতো মানবসৃষ্ট সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। অবশ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারকেই আন্তরিকতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। শীতকালীন দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের উচিত বিরোধী দলকে সাথে নিয়ে আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানো।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেছেন, মাঘ মাসের প্রচন্ড শীতে কাঁপছে দেশ ও অসহায় দুস্থ মানুষ। শীতবস্ত্র নিয়ে এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। শেখ হাসিনার সরকার জনবান্ধব সরকার হিসেবে ইতিমধ্যে প্রমানিত হয়েছে। শীতার্থ সাধারণ মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আপোসহীনভাবে সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। মানবতার কল্যানে কাজ করে শেখ হাসিনা আজ এক অনন্য উচ্চতায়। তিনি সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদেরও শীতার্তদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শীতার্ত মানুষের পাশে নেই। তিনি বলেন, ‘দেখুন আজকে মানুষ এত কষ্ট পাচ্ছেন, এত দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে আছেন। একদিকে করোনাভাইরাসের আক্রমণে মানুষ মারা যাচ্ছে, চিকিৎসা পাচ্ছে না,হাসপাতালে জীবন চলে যাচ্ছে। এর মধ্যে পড়েছে শৈত্যপ্রবাহ। আজকে আওয়ামী লীগ কোথায়? আজকে সরকারের মন্ত্রীরা বড় বড় কথা বলছেন। ভোট চুরি করে নিজেদের লোককে জেতানোর জন্য কাজ করছেন, কিন্তু তারা গরীব মানুষের পাশে নেই, শীতার্ত মানুষের পাশে নেই। করোনায় আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি তারা। কিন্তু বিএনপি সমস্ত মানুষের পাশে আছে।’ রিজভী আরও বলেন, ‘বিএনপি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মকা- করে না, অসহায় মানুষ, দুঃখ-দারিদ্র্যের মাঝে যারা বসবাস করেন বিএনপি তাদের পাশে দাঁড়ায়। রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে তাই। সেই লক্ষ্য উদ্দেশ্য করে বিএনপির সবসময় কাজ করে অর্থাৎ মানব কল্যাণ ও সমাজসেবাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাস সেই লক্ষ্যকে উদ্দেশ্য করেই আগেও কাজ করেছে এখনও করছে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, সারাদেশেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ কষ্ট পাচ্ছেন। প্রচ- শীতে নগরীর প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কষ্ট পেলেও সংশ্লিষ্টদের কোন মাথাব্যাথা নেই। এমতাবস্থায় জামায়াতে ইসলামী দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘবে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজ আমরা শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করছি। আর্ত মানবতার কল্যাণে আগামী দিনেও আমাদের এই কল্যাণকামিতা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। তিনি অসহায় ও বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে সংগঠনের সকল জনশক্তির প্রতি আহ্বান জানান। ড. রেজাউল করিম বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষের পরীক্ষা নেয়ার জন্যই ধনী ও দরিদ্র সৃষ্টি করেছেন। যারা দারিদ্রকে অভিশাপ মনে না করে সবর করেন, রাসূল (সা.) তাদের জন্য সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দরিদ্ররা ধনীদের ৫ শ’ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। তাই দরিদ্রতায় হতোদ্যম না হয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ও সবরের মাধ্যমে বৈষয়িক সকল সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সহায় হবেন। তিনি বাস্তবজীবনে সকলকে ইসলামের পুরোপুরি অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী, গণমুখী ও কল্যাণকামী রাজনৈতিক সংগঠন। জামায়াত সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে অতীতে ছিল, এখনো আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসতে সরকার, সকল রাজনৈতিক দল, সমাজের বিত্তবান মানুষসহ নগরীর সকল স্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com