মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৬ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামের বিস্তীর্ণ চরে ভুট্টার আবাদ ধুধু বালু চরে এখন সবুজের সমারোহ

শাহীন আহমেদ কুড়িগ্রাম :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

কুড়িগ্রাম জেলার ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরগুলো এখন সবুজের সমারোহ। চরের বাসিন্দারা সনাতনী ফসল আবাদের পাশাপাশি এখন বাড়তি আয়ের জন্য আবাদ করছেন অর্থকরী ফসল ভুট্টার। আগাম জাতের এসব ভুট্টা চাষে পোঁকার আক্রমণ এবং রোগবালাই কম থাকায় চরের এসব কৃষকরা সাচ্ছন্দে আবাদ করছেন এই ফসলটি। চরগুলোর ধুঁ ধুঁ বালুকোনার বুক চিরে সবুজের সমারোহ প্রকৃতিকে আরো নবরুপ দান করেছে। জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে,এ মৌসুমে জেলার নয়টি উপজেলার ১৩০০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আগাম ১২ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চরাঞ্চলের এসব কৃষকরা জানান, অল্প শ্রম, কম খরচ এবং লাভ বেশী হওয়ায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। প্রতি শতক জমিতে প্রায় ২ মন করে ভুট্টা উৎপাদিত হয়। এতে উৎপাদন খরচের চেয়ে দ্বিগুন লাভ হয়। শুধু তাই নয়, ভুট্টার কান্ড জ্বালানি, গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে পাতা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ভুট্টার আটা, মৎস খাদ্য, মুরগীর খাবার সহ নানা তালিকায় রয়েছে বলে জানান তারা। জেলার উলিপুরের সাহেবের আলগার নামাজের চরের কৃষক সামসুল মিয়া বলেন,’আমরা এবারি প্রথম এই চরে ভুট্টার আবাদ করতেছি। এতদিন মসলা ও বাদাম আবাদ করতাম,আশাকরি ফলন ভালো হবে,লাভবান হবো। রৌমারী উপজেলার চর গয়টাপাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষী মুকুল মিয়া ও বাগুয়ার চর গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন,’বন্যার পানির সাথে জমিতে বালু আসায় এতে করে ইরি-বোর চাষ না হওয়ায় ওইসব জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষে জমিতে সার বেশি লাগে। কিন্তু অন্যান্য ফসল এবং ইরি-বোর ধান চাষের চেয়ে ভুট্টার আবাদে অনেক বেশী লাভ হয়।’ ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরামের ভূট্টা চাষি নির্মল চন্দ্র রায় বলেন,’ভূট্টা চাষে খরচ কম এবং লাভ বেশী একারণে আমরা ভূট্টা চাষ করে আসছি। এবার ৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে।’ কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আব্দুর রশীদ বলেন,ভুট্টা চাষে প্রতি বিঘায় খরচ হয় ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা ও বিঘা প্রতি ফলন হয় ৩৩-৩৪ মণ পর্যন্ত। প্রতি বিঘা জমির ভুট্টা বিক্রি হয় ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকায়। খরচ বাদে লাভ হয় ১০-১১ হাজার টাকা পর্যন্ত। জেলায় ১৩০০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আগাম ১২ হাজার ৬শ ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,’আমরা প্রণোদনা সহায়তা হিসাবে ভুট্টা কৃষকদের ২ কেজি করে বীজ, ১০ কেজি করে এমওপি ও ২০ কেজি করে ডিএপি সার বিনামুল্যে দিয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার ভুট্টার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com