মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৫ অপরাহ্ন

নরসিংদীতে দ্বিতীয় ধাপে টিসিবি’র পণ্য পাবেন ৬৮ হাজার পরিবার

নরসিংদী প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২

তেল, ডাল, চিনি, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা মানুষ। দিন দিন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। পরিবার নিয়ে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবির) মাধ্যমে নরসিংদীতে ৬৮ হাজার ৩৫৩ টি পরিবারকে ফ্যামেলি কার্ডের মাধ্যমে বাজারমূল্যের চেয়ে কিছুটা কম দামে পণ্য দিচ্ছেন সরকার। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ টিসিবির পণ্যবাহী পণ্যে উপর এখন ভরসা। দ্বিতীয় ধাপে নরসিংদীতে স্বল্পমূল্যে চাল ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে সকাল আটটার থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকেন ক্রেতারা। কখন আসবে টিসিবির গাড়ি। কিন্তু সেই অপেক্ষা আর শেষ হয় না। অবশেষে সাড়ে এগারোটা দেখা মেললো কাঙ্খীত টিসিবির গাড়ি। পণ্য বিতরণ শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ লাইনের দাড়িয়ে পণ্য ক্রয় করছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা। পণ্য পেয়ে হাসি মুখে ফিরতে দেখা যায় তাদেরকে। নরসিংদী বিভিন্ন টিসিবি পণ্যের স্পট ঘুরে দেখা যায়, নরসিংদী পৌর শহরের ভগবত আশ্রমের সামনে সকাল থেকে ক্লান্তি নিয়ে কড়া রোদের মধ্যে দল বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদেরকে। তবে সেখানে গাড়ি আসে সকাল সাড়ে ১১ টায়, ডাল, চিনি ও ছোলা আসলেও তেল আসে আরো ঘন্টা খানেক পরে। এদিকে শহরের শাপলা চত্বরে ৩০/৪০ জন মহিলা দলবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সকাল থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত অপেক্ষায় আছে টিসিবির পণ্যের জন্য। অপেক্ষার পর বারোটার দিকে দেখা মিলে টিসিবির ট্রাক। শুরু হয় পণ্য বিতরণের কার্য্যক্রম। অপর দিকে শহরের পৌর ঈদগাঁ মাঠে সাড়ে বারোটার দিকে টিসিবির ট্রাক আসে। সেখানে বিতরণ শুরু হওয়ার পর আগত ক্রেতাদের মুখে দেখা যায় তৃপ্তির হাসি। জয়া রাণী পোদ্দার নামে একজন বলেন, সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে-বসে অপেক্ষার পর টিসিবির ট্রাক আসে। আমরা যারা অপেক্ষায় ছিলাম ট্রাক দেখে অনেক খুশি হয়েছি। পণ্য বিতরণের জন্য টিসিবির বিক্রেতারা তেল, ডাল, চিনি ও ছোলার বস্তা ট্রাক থেকে নামাতে ব্যস্ত। তেল আসতে দেরি করায় আমাদেরকে রোদে দাড়িয়ে থেকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার সব দিকে ক্ষতি হলো আজকে, আমি রিকশা চালাই, আমি এই ৪ ঘণ্টা রিকশা চালিয়ে কিছু টাকা রুজি করতে পাড়তাম। আমার বউ তিনদিন যাবত অসুস্থ থাকার কারণে আমি আজকে নিতে এসেছি টিসিবির পণ্য। শাপলা চত্বরে দিলারা বেগম বলেন, আমাদের কি পেটে ক্ষুধা লাগে না। ট্রাকের পিছনে দৌড়েও তাদের কে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারি নাই। আমরা গরিব বলে আমাদের কথার কোনো দাম নাই। আমার ৬ মাসের বাচ্চাকে নিয়ে ৩ ঘণ্টা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকার পর সাড়ে এগারোটা পযর্ন্ত অপেক্ষা করেন পরে টিসিবিরি ট্রাক না আসাতে টিসিবির পণ্য না নিয়েই চলে গেলেন তিনি। শাহিদা আক্তার বলেন, রোজা রেখে এই রোদে দাড়িয়ে থাকতে আমাদের কষ্ট হয়। আমাদের কষ্ট দিতে তাদের ভালো লাগে। আয় কম থাকার কারনেই কিন্ত আমরা রোদে দাড়িয়ে থেকে কম দামে পণ্য কিনতে এসেছি। টাকা আয় বেশি থাকলে কিন্তু আসতামনা। আনোয়ারা বেগম বলেন, টিসিবির পণ্য সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে, আমাদের মতো গরীবের জন্য। আমরা তো ফ্রী নিয়ে যাচ্ছি না? আমরা টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছি। তারপরও এরকম কেনো? আমাদের গরিবে কষ্ট কেউ বুঝেনা। টিসিবির পণ্য বিক্রেতা হোসেন বলেন, মালা মাল গোডাউন থেকে লোড আনলোড করতে সময় লেগে তাই দেরি হয়েছে। তা না হলে সকাল আটটায় স্পষ্টে থাকার কথা ছিলো। নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান বলেন, পবিত্র রমজান উপলক্ষে নরসিংদী জেলায় নির্ধারিত মানদন্ডের ভিত্তিতে প্রণীত তালিকা অনুসারে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নি¤œ আয়ের মোট ৬৮ হাজার ৩৫৩টি পরিবারের মধ্যে টিসিবি’র পণ্যসামগ্রী বিক্রয় করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জেলার সকল উপজেলা ও পৌরসভার মোট ১৩৪টি নির্ধারিত স্থানে পর্যাক্রমে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হবে। এসময় প্রতি পরিবারের মাঝে ২ কেজি চিনি, ২ কেজি ছোলা, ২ কেজি মশুর ডাল ও ২লিটার সয়াবিন তেল ৫৬০ টাকা বিক্রয় করা হবে। এছাড়া টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়সহ সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করার জন্য উপজেলা ও পৌরসভাগুলোতে ট্যাগ টিম গঠন করাসহ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রত্যেক উপজেলা ও পৌরসভায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com