কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে যুব-তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘দুই কৃষকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কৃষকের পানি সংকটের বিষয়টি সবার সামনে এসেছে। এসব বিষয়ে এখন কথা বলার লোকও কমে গেছে। আমরা আমাদের যাবতীয় উন্নয়নের হিসাব করছি জিডিপি, মাথাপিছু আয় দিয়ে।’ গতকাল সোমবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে কৃষকের পানির অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে জাতীয় কৃষক সমিতি ও বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেনন বলেন, ‘খাদ্য সংকট ও বৈদেশিক নির্ভরতা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের অন্যতম কারণ। এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও খাদ্য উৎপাদনের জন্য যে পানি প্রয়োজন এ বিষয়ে আমরা উদাসীন। বরেন্দ্র অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায় একসময় বিশাল বিশাল পুকুর খনন করেছিল। সেখানে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর এক ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। পুরো পুকুর শুকিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় নদী ব্যবস্থাপনা ও ভূ-উপরস্থ পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
নদী দখল করে বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট, দোকানপাট নির্মাণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘টিপাইমুখ, তিস্তার বাঁধ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এসবের কিছুই বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করছি, কিন্তু তিস্তা কেন খনন হচ্ছে না?’
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের স্লোগানের মতো বাংলাদেশেও স্লোগান উঠলে মুশকিল হবে মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘আজকে পত্রিকায় পড়লাম, গোতাবায়া রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান হচ্ছে ‘গোটা পাগল হটে যাও’। আমাদের দেশে যদি এই স্লোগান উঠে, তবে খুব মুশকিল হয়ে যাবে। এটা সবার স্মরণে রাখার প্রয়োজন বলে মনে করছি।’ শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু আয় আমাদের চেয়ে বেশি, কিন্তু তারা এখন ধুঁকছে মন্তব্য করে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার মানুষ এখন শুধু ধুকছে তা না, তারা রাজনৈতিক সংকটের আবর্তে পতিত হয়েছে। এখন আমরা বাংলাদেশে এসে আমাদের উন্নয়ন নিয়ে গর্ব করি। আর গর্বের মূল ভিত্তি যেখানে রয়েছে, সেখানে যদি নজর না দিই, তাহলে কী হবে সামনে দেখার বিষয়।’ জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিকের সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় উভয় সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাসহ ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।