শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

রৌমারীতে ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস পালিত

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২২

‘ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ শহীদদের-আমরা তোমায় ভুলি নাই’ এই শ্লোগানের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্তে সংঘর্ষের ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী দিবস বর্ষপূর্তি ২১ বছর উপলক্ষে সাবেক এমপি রুহুল আমিনের সহযোগীতায় এলাকাবাসির আয়োজনে সোমবার (১৮ এপ্রিল) ২০২২ সকালের দিকে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত হয়। পরে বড়াইবাড়ী মসজিদ মাঠে ইউপি সদস্য ফিরোজ বিএসসির সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন, বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইবাড়ি গ্রামবাসির পক্ষে, বারবান্দা সুর্য্য সংঘ, শহীদ পরিবারের পক্ষে, চুলিয়ারচর ও বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, জাতীয় পার্টি (জেপি), বড়াইবাড়ী গ্রামের ছোট ছোট বাচ্চারাসহ এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। পুষ্প মাল্য অর্পণ শেষে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসি উদযাপন কমিটির আয়োজনে ইউপি সদস্য ফিরোজ বিএসসির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শেখ আব্দুল্লাহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সহকারি পরিচালক ৩৫ ব্যাটালিয়ন জামালপুর সামছুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার স্মৃতি, রাজিবপুর ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক মোকলেছুর রহমান, শৌলমারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল, চরশৌলমারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কে.এম ফজলুল হক মন্ডল, রাজিবপুর উপজেলা শাখার জেপির সভাপতি আব্দুর রশিদ, সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যাদুরচর ইউনিয়ন শাখা, সহকারী অধ্যাপক মজিবর রহমান, সহ-সভাপতি মশিউর রহমান রতন উপজেলা আওয়ামী লীগ রাজিবপুর, নিহত শহীদ সিপাহী আব্দুল কাদেরের স্ত্রী শাফি আকতার প্রমূখ। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশী সীমান্তে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের উপর হামলা চালায় ও বাড়ি-ঘর নির্বিচারে জ্বালিয়ে দেয়। ওই দিন হামলার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছিল বিডিআর-জনতা। আর সেই প্রতিরোধে বিএসএফ এর ১৬ জনের লাশ ফেলে পিছু হটে এবং যাওয়ার সময় বড়াইবাড়ী গ্রামের ৮৯ টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে যায়। বাচাতে পারেনি একটি বাড়িও। সরকারি হিসেবে মোট ক্ষতির পরিমান ছিল ৭২ লক্ষ টাকা। সেই সময় সীমান্ত যুদ্ধে শহীদ হয়েছিল ৩৩ রাইফেল্স ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের। এছাড়াও আহত হয় বিডিআর এর হাবিলদার আব্দুল গনি, নায়েক নজরুল ইসলাম, ন্যান্স নায়েক আবু বকর সিদ্দিক, সিপাহি হাবিবুর রহমান ও সিপাহি জাহিদুর নবী। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। এলাকাবাসির দাবী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, নির্মিত ব্রিজ ও রাস্তা, তিন শহীদদের নামে নাম করন ও ঐতিহাসিক দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান। বড়াইবাড়ী গ্রামের মানুষের বুকে এখনো কাটেনি সীমান্তের আতংক। মানুষ এখনও দুঃসহ স্মৃতিতে হঠাৎ রাতে আতকে উঠে। শেষ হয়নি তাদের দুঃখের দিন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com