শেরপুরের শ্রীবরদী পৌর এলাকার সড়ক দুর্ঘটনায় মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে সয্যাশায়ী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাবুল মিয়া (৪৫)। ঘাতক অটোরিকশা চালক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও এখনো ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়নি ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, শ্রীবরদী
পৌর শহরের সাতানী মথুরাদি এলাকার মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় জনৈক বিপুল নামের একজনের বাসা বাড়ির নষ্ট হওয়া বিদ্যুতের লাইনের কাজ করছিলেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রী বাবুল মিয়া। বিদ্যুতের খুঁটি ফুটপাতের সাথে লাগানো হলেও মাঝ রাস্তায় থেকে নিয়ন্ত্রণ হাঁড়িতে তার মইয়ের উপরে তুলে দিলে ছিটকে পাকা রাস্তায় পরে রায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে যায়। পতে বিপুল মিয়াও আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে পরে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই দিন চিকিৎসার পর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড ট্রমাটোলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তবে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার জন্য চিকিৎসা বন্ধ করে ফিরিয়ে আনা হয় গ্রামের বাড়িতে । বর্তমানে সে চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বাবুলের স্ত্রী রুপালি বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ৩০ বছরের সংসার জীবনে নেই কোন সঞ্চয়। তার চিকিৎসা করতে গিয়ে সহায় সম্বল বিক্রি করে দিয়েছি। এক মেয়ে নিয়ে তিন জনের সংসারে এখন আমরা অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছি। সরকার যদি আমাদের চিকিৎসার ভার গ্রহন করে আমার স্বামীকে সুস্থ করার ব্যবস্থা করে দেয় তবে আবার কাজ করলে ফিরবে সংসারে সচ্ছলতা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় মেরুদন্ড ভেঙ্গে যাওয়া বাবুল মিয়া বিছানায় পরে আছেন। এক সময় সুস্থ সবল লোকটি পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে জড়িয়ে ধরেন তার ছোট ভাই । এসময় তাদের কান্নাকাটি আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। বসতঘর ছাড়া জীবনের সব সম্বল বিক্রি করে চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচশ টাকার ওষুধ সেবন করতে হয়। টাকার অভাবে ওষুধ কেনাও সম্ভব হয় না। আহত বাবুল মিয়া বলেন, প্রতিদিনের মতো ইলেকট্রিকের কাজ করার জন্য বিদ্যুতের লাইনের কাজ করার জন্য মই এ উঠে কাজ করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে একটি অটোরিকশা এসে আঘাত করলে উপর থেকে পরে গিয়ে আমি আজ পঙ্গু। আমার সংসার এখন কে চালাবে ?
আহত বাবুল মিয়ার ছোট ভাই লাভলু মিয়া বলেন, আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় এ পর্যন্ত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। অটোরিকশা মালিকের কাছে ক্ষতিপূরণের ন্যায্য দাবি পাওয়ার আশায় ধর্না দেওয়ার পরও ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উল্টো হুমকি দিচ্ছে।
সামাজিক সংগঠন লোকাল বয়েজের প্রতিষ্ঠাতা এজেড রুমান বলেন, ঘটনাটি বড়ই দুঃখজনক। সরকার সহ এলাকার বিত্তবানদের তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা দরকার।