দিনাজপুরের হিলি, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও ঘোড়াঘাটে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। আর মাড়াইকৃত ধানের খড় শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব এলাকার কৃষাণ-কৃষাণীরা। তবে মাঠে কিংবা খোলায় তা না শুকিয়ে, শুকাচ্ছেন মানুষের চলাচলের রাস্তায়। এতে করে রাস্তায় থাকা খড়ের উপর দিয়ে আতঙ্কে চলছে পথচারীসহ ছোট-বড় সকল যানবাহন, আবার ঘটছে দুর্ঘটনা। বুধবার (১১ মে) বিরামপুর, নবাবগঞ্জসহ হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কের ডাঙাপাড়া, জালালপুর, সাতনি, সাদুরিয়া, হরিহরপুর সহ হিলির বিভিন্ন ছোট-বড় পাকা সড়কে কৃষকরা তাদের খড় শুকাচ্ছেন। এসব খড়ের উপর দিয়ে ভয়ে এবং আতঙ্কে চলাচল করছে, বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার সহ অটোরিকশা, অটোভ্যান, সাইকেল ও মোটরসাইকেল। সড়কের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় খড়ের উপরে চলতে গিয়ে পিছলে পড়ছে ছোট যানবাহন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে যানবাহনগুলো সহ পথচারীরা। হিলি-ঘোড়াঘাট সড়কে বাস চালক মজিবর রহমান বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তায় আমাদের গাড়ি নিয়ে যেতে হয়, গাড়ি ভর্তি যাত্রী থাকে। আমন আর ইরি ধানের সময় হলেই এই রাস্তায় খড় শুকানোর হিড়িক পড়ে। এমনিতে ছোট রাস্তা তার উপর খড়, গাড়ি নিয়ে চলতে খুব অসুবিধা হয়। কথা হয় একজন মোটরসাইকেল আরোহীর সাথে, তিনি বলেন, এই রাস্তায় প্রায় স্থানে খড় দিয়ে ভর্তি, রাস্তাও ভাল না, খানাখন্দে ভরা। খড়ের জন্য কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। আসতে খড়ে কয়েক বার স্লিপ খেয়ে পড়তেছিলাম। ভ্যানচালক আতিকুল হোসেন বলেন, সারাদিন হামাক এই আস্তা (রাস্তা) দিয়ে গাড়িনিয়ে যাবা নাগে (লাগে)। মানুষের বিবেক নাই, এ্যাটেকুনা খড় শুকাবা নাগবে,বাইত (বাড়ি) কিংবা খোলাত শুকাতে পারে? কত ভয়ত মোক গাড়ি নিয়ে যাবা হয়। কয়েক জন যাত্রী ও পথচারী বলেন, ঘোড়াঘাটের রাস্তা তো এমনিই ছোট, রাস্তায় আবার কৃষকরা খড় শুকাচ্ছে। প্রতি বছর খড়ের কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এবারও রাস্তায় খড় শুকানো শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রশাসন বিষয়টি দেখবেন। নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ শোম বলেন, আমিও রাস্তায় বিষয়টি দেখেছি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ডেকে তাদের নিজ নিজ এলাকার সড়কগুলো থেকে খড় সরানোর ব্যবস্থা করবো। বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকার বলেন, সড়কে খড় থাকা যানবাহনের জন্য বিপদ জনক, পথচারীদের অনেক অসুবিধা হয়। তাই আমি মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন ছোট-বড় সড়কে ঘুরেছি এবং পাইক দ্বারা কৃষকদের অবগতি করেছি। মাঠ কিংবা নিজ খোলাতে খড় শুকাবেন, সড়কে কোন খড় শুকানো যাবে না। হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নুর-এ-আলম বলেন, রাস্তায় খড় শুকানো অবৈধ। খড়ের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। ধান এবং খড় দিয়ে অবৈধ ভাবে রাস্তা দখলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।