বাপ হারিয়েছি, হারিয়েছি আমার ভাই। জীবনের বিনিময়ে হলেও ভাড়ারা ইউনিয়নকে সন্ত্রাসমুক্ত দেখতে চাই। অবৈধ অস্ত্রের ঝন ঝনানি, আর রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হোক ভাড়ারায়। কথায় কথায় মানুষ খুন আর গুম ভাড়ারাবাসী আর দেখতে চায় না। চেয়ারম্যান সন্ত্রাসী আবু সাঈদ বাহিনীর হাতে গত ২৭ বছরে ৫০জন মানুষ প্রান হারিয়েছে এই ভাড়ারা ইউনিয়নে। আমি দেশের বাইরে ছিলাম। ২০১৫ সালে দেশে এসে বাপের অনুরোধে ২০১৬ সালে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো বলে ঘোষনা দিলাম। এই ঘোষনাই আমার জন্য কাল হয়ে গেল। সন্ত্রাসী আবু সাঈদ চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে আমাকে হত্যা করতে না পেরে আমার সদ্য নির্মিত বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলো। শুধু তাই নয়, ঘরে থাকা সকল জিনিপত্র পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দিলো। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। ও আমার বাপকে হত্যা করার জন্য গুলি করেছিল। ভাগ্যক্রমে আমার বাপ প্রানে বেঁচে গেল। আমি বাইরে থাকায় আল্লাহর রহমতে আমিও প্রানে বেঁচে গেলাম। এরপর ২০১৬সালে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলাম। সন্ত্রাসী আবু সাঈদ চেয়ারম্যান জোরপুর্বক কেন্দ্র দখল করে জয়লাভ করলো। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার কারনে ২০১৮সালে ৩ ডিসেম্বর সাঈদ চেয়ারম্যান আমাকে হত্যা করতে আমার বাড়িতে আসে এবং আমাকে না পেয়ে আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করতে থাকে। আমার বাবা মহসীন খা ওরফে লস্কর খা ও তার চাচাত ভাই মালেক খাঁ তাদেরকে বাধা দিতে গেলে পাখির মত গুলি করে দু’জনকে হত্যা করে। আহত হয় আমার পরিবারে আরো ৮/১০জন সদস্য। বাবা হারানোর প্রতিশোধ নিতে আমি আবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিলাম। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশীলের ২০২২ সালে ২৬ জানুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রচারনা চালাতে থাকি। নির্বাচনের ৪দিন আগে আমার চাচাত ভাই ইয়াছিন শেখকে দিনে দুপুরে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে স্ঈাদ চেয়ারম্যান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। আমার বংশের ৩জন অভিভাবককে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী সাঈদ চেয়ারম্যান ও তার বাহিনী। শুধু প্রতিদ্বন্দি শুন্য করার জন্য গত ৩০ বছরে ৫০ জনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসী সাঈদ চেয়ারম্যান। ৩জন অভিভাবকে হারিয়ে জীবিত লাশ হয়ে আমি এখনও বেঁচে আছি। কিন্তু আমি সকল শোককে বুকে ধারন করে সন্ত্রাসী সাঈদকে প্রতিহত করতে আবারও তফশীল ঘোষিত ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছি। আগামী ১৫ই জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জানিনা এর আগেও হয়ত আমার সাবেক অবিভাবকদের মত লাশ হয়ে যেতে পারি। তবুও আমি খুশি হবো। যদি সন্ত্রাসী সাঈদের পতন হয় এবং তাকে তার অপরাধের বিচারের শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়, ভাড়ারা সন্ত্রাসমুক্ত হয়। আমি এখন কয়েকজন মৃত মানুষের এতিম সন্ত্রানদের নিয়ে বেচে আছি। আমি যদি সন্ত্রাসী সাঈদের হাতে মারা যায়, তাহলে আপনারা এইসব এতিমদের দেখে রাখবেন, বলে আবেগ আপ্লতু হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কথা গুলো বলছিলেন, পাবনা ভাড়ারা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুলতান মাহমুদ খান ঘোড়া প্রতিক। আগামী ১৫জুন অনুষ্ঠিত হবে পাবনার সন্ত্রাসের জনপদ হিসাবে খ্যাত ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। সে উপলক্ষে গত শুক্রবার বিকালে চরবলরামপুর স্কুল মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতিকের নির্বাচনি পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পথসভাটি এক পর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিনত হয়। আব্দুল গণী মোল্লার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, স্থাণীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ. ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। আওয়ামী নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আওয়ামীলীগ করি, নৌকার পক্ষের সমর্থক। কিন্তু নৌকার মাঝি যদি সন্ত্রাসী হয়, সেই মাঝিকে তো আমরা ভোট দিতে পারি না বা সমর্থন দিতে পারি না। তাই আমরা ভাড়ারাবাসী এবার সন্ত্রাসের বিপক্ষে আবু সাঈদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী সুলতান মাহমুদ খাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবো। সুলতান মাহমুদ এর বাপ-চাচা ও তার চাচাত ভাইকে হারিয়ে সে এখন এতিম। সুলতান মাহমুদ খানকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে ভাড়ারাবাসীকে সন্ত্রাসের হাত থেকে মুক্ত করতে আমর্ াঅঙ্গিকারবদ্ধ। উল্লেখ্য গত ২৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান মাহমুদ খান এর চাচাত ভাই ইয়াছিন সেখকে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খানের বিরুদ্ধে। প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভাড়ারা ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াছিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রধান আসামী ভাড়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস শেষে মুক্ত হলে পাবনা জেলা নির্বাচন অফিস ওই ইউনিয়নে পুনরায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন। আগামী ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান আবু সাঈদ খান আবারও আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।