কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো চরমঅবনতি ঘটেছে। এতে জেলার ৯টি উপজেলার ৫০টি ইউনিয়নের প্রায় সোয়া দু’লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিতদের মাঝে শুকনা খাবার,বিশুদ্ধ পানি আর সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বানভাসীদের মধ্যে পানিবাহিত চর্ম,ডায়রিয়া,জ্বর দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তারা হলেন, শনিবার দুপুরে উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের যমুনা সরকারপাড়া গ্রামের মাঈদুল ইসলামের কন্যা মাকসুদা জান্নাত(১১) এবং রবিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের দক্ষিন কাঁন্দা পাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের দেড় বছরের ছেলে সন্ত্মান সিয়াম বন্যার পানিতে পরে মারা গেছে।
জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানাযায়, জেলার ৯টি ৪৯টি ইউনিয়নের ২৮৪টি গ্রামের নি¤œা লের ২৭হাজার ১৯৭টি পরিবারের ১লাখ ৮হাজার ৭৮৮জন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।জেলার রাজিবপুর-৭টি,রৌমারী-৪৪টি চিলমারী-২৬টি, উলিপুর-২০টি,কুড়িগ্রাম সদর-১১টি,নাগেশ্বরী এবং রাজারহাটে ১টি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং জেলার ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,৭টি মাদ্রাসা এবং ১টি কলেজে সাময়িক পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী জেলায় ১০হাজার ৮৯৪ হেক্টর ফসলী জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। মৎস্য বিভাগের জেলাতে ৮৫দশমিক ৯৯হেক্টর পুকুর-দীঘির ১১৫ দশমিক ২২ মেট্রিক টন মাছের পোনা ভেসে গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের ৬৭১টি নলকূপ এবং ১৮৩টি ল্যাট্রিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগের তথ্যে ২৪হাজার ২২৩টি গরু,মহিষ-৩১৮টি,ছাগল-১১হাজার ১০টি,ভেড়া-৩হাজার ৬২৮টি, মুরগি- ৫৭হাজার১৮৭টি,হাঁস-১৫হাজার ৯১৭টি বন্যা কবলিত হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা.মঞ্জুর-এ-মুর্শেদ জানান, বন্যার্তদের সহয়োগিতায় জেলায় মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে ৮৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও ৯ উপজেলায় ৯টি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মেডিকেল টিমের সদস্যরা বন্যা কবলিত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন, কলেরা স্যলাইন ও প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে। বন্যার পানিতে দু জন মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সকল দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতিদিনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ লক্ষ টাকা এবং ৪০৭ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়াও আরো ৫০০ মেট্রিকটন চাল ও ২০লক্ষ টাকার চাহিদা উপরে প্রেরন করা হয়েছে।