জামালপুরে বন্যার পরিস্থিতি দিন দিন চরম অবনতি হচ্ছে। পাউবো সুত্রে জানাগেছে গতকাল সোমবার(২০জুন) বিকাল ৫টা নাগাদ ২৪ ঘন্টায় যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে পানি ১৬সেন্টি মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ৩২সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, বকসিগঞ্জ ও জামালপুর সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়েগেছে।
এ দিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ইসলামপুর উপজেলার ২৫টি সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় বন্যা পানিতে ডুবে যাওয়ায় সরকারি ভাবে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস। তবে বেসরকারি হিসেবে ডুবে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো বেশী বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অপরদিকে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কের মন্ডল বাজার এলাকায় পাকা রাস্তা ভেঙ্গে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। একই উপজেলার চর আমখাওয়া ইউনিয়নে দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ি বাজার রোড়ে জিঞ্জিরাম নদীর উপর সেতুর অদূরে দক্ষিন পাশের্ব ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। দ্রুত ভাঙ্গন রোধের ব্যাবস্থা না নিলে হয়তো সেতুর সংযোগ সড়ক নিশ্চিহ্ন হতে পারে বলে এলাকাবাসিরা জানিয়েছেন। এসব এলাকায় পাট,আখ,শাক-সবজি,বীজ তলা পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হচ্ছে। সোমবার (২০জুন) জেলার ইসলামপুরে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সাথে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রসহ পাল্লা দিয়ে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রতি মুর্হুতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে ইসলামপুরের অর্ধশতাধিক গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসিল জমির ফসল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো সুত্র জানায়, যমুনা পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্ট বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী আরো দুই-তিন দিন যমুনা- ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে ইসলামপুর উপজেলার শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস জানিয়েছেন, ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যায় ডুবে যাওয়ায় সরকারি ভাবে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসেবে বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৮টি বলেন স্থানীয়রা জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার এস.এল.এম রেজিয়ান বলেন, প্রায় ৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছিল তার মধ্যে ৩০০ হেক্টর জমির পাট নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ১০হেক্টর জমির আউস ধান ও ২০ হেক্টর জমির শাক-সবজির খেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পারে বলে জনিয়েছেন।