অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অবসান হলো বাঙালি জাতির দীর্ঘ অপেক্ষার। দেশের দক্ষিণের ২১ জেলার স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার বেলা ১২টায় পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী মঞ্চের বেদিতে বাটন চেপে বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। এরই সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা দেশ। বর্ণিল উৎসব শুরু হয়ে যায় পদ্মার দুই পাড়ে। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সকাল ১০টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে যোগ দেন তিনি। পদ্মা সেতুর ‘থিম সং’-এর মাধ্যমে সুধী সমাবেশ শুরু হয়। এরপর বক্তব্য রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। আমার টাকায় আমার সেতু, তারই নাম পদ্মা বহুমুখী সেতু। বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজেদের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতু। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেতুর উদ্বোধন করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুলে দেওয়া হলো জনগণের জন্য দেশের সবচাইতে দীর্ঘতম স্বপ্নের পদ্মা সেতু। গতকাল শনিবার সকালে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার আওতাধীন (শিমুলিয়া ফেরিঘাট) পদ্মা বহুমুখী সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে এবং উত্তর প্রান্তে মাওয়ায় দেশের দ্বীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জনসভায় ভাষন দেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতু উদ্বোধনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর জনগণের মাঝে বইছে খুশির বন্যা। পদ্মা বহুমুখী সেতু বিশ্বের নদীর উপর সেতু নির্মানে ২৫ তম সেতু হিসেবে নিজের নাম লেখালেন এই পৃথিবীতে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে শুরু হয় এই স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ অবশ্য ২০১২ সালে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ৩০১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত যার দৈর্ঘ ৬.১৫ কিলোমিটার। বিশ্বের এক নম্বর সেতু হচ্ছে চীনের কুশান গ্রান্ড ব্রিজ, দ্বিতীয় হচ্ছে তাইওয়ানের চাংহুয়া কোয়াশিউং ব্রিজ এবং তৃতীয় হচ্ছে চীনের ক্যান্ডি গ্রান্ড ব্রিজ। পদ্মা বহুমুখী সেতুতে ৪১ টি ইস্পাতের স্প্যান ও ৪২ টি পিলার বসানো হয়েছে। এই ব্রিজের নীচ দিয়েই বসানো হচ্ছে রেললাইন। এছাড়া গ্যাস ও বিদ্যূত লাইন থাকবে এই সেতু দিয়ে। মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া, শরীয়তপুরের জাজিরা ও মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার অংশ কাঁঠালবাড়ী+ বাংলাবাজার ফেরিঘাট, শিমুলিয়া ও মাঝিকান্দি জড়িয়ে এই সেতু নির্মিত হয়েছে। সেতুর দুই প্রান্তে দুটি থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে পদ্মা বহুমুখী সেতু উত্তর ও পদ্মা বহুমুখী সেতু দক্ষিণ থানা নামে। সেতুর দুই প্রান্তেই উদ্বোধনীর আনুষ্ঠানিকতা অনুষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ১০০ টাকা মুল্যমানের ডাকটিকেটের অবমুক্ত করেন প্রধান মন্ত্রী। সেতুর দুই প্রান্তেই সপ্তাহ ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য কন্ঠ শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। সেতুর দুই পাশেই সাজ সাজ রব রয়েছে। সকলের ধারণা প্রায় দশ লাখ লোকের সমাগম ঘটেছিলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। শনিবার সেতুর উদ্বোধন হলেও সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে আজ রোববার। এর আগে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু ছিলো যমুনা সেতু। সেটাকে পিছনে ফেলে পদ্মা বহুমুখী সেতু এখন দেশের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে। প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ী বহর প্রথম টোল পরিশোধ করে সেতু দিয়ে পার হয়েছেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে নেওয়া হয়েছিলো সেতুর দুই পাশসহ পদ্মার মাঝেও চাদরে ঢাকা নিরাপত্তা বলয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে এই পদ্মা সেতুকে নিয়ে, যেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ও হয়েছে ষড়যন্ত্র, যারা এই পদ্মা নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তারা উচিৎ জবাব পেয়েছে। কতো টালবাহানাও করে ছিলো বিশ্ব ব্যাংক, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ধূলিসাৎ হতে দেইনি। আমাদের আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবেনা, এই সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, সেতুর প্রতিটি পিলার এক একটি আস্থার ভিত। প্রধান মন্ত্রী আরো বলেন আপনারা আমার প্রতি আস্থা রেখেছিলেন, আমিও তার প্রতিদান দিতে পেরেছি, আমি আপনাদের জানাই স্যালুট। একটি মহল বলতেন নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মান করতে পারবোনা আমরা। সেটা তৈরি করে প্রমাণ করে দিলো আওয়ামী লীগ সরকার। পদ্মা সেতু দিয়ে এখন বাস গাড়ী চলছে, ট্রেনও চলবে ইনশআল্লাহ। এই সরকার জনগণের পাশে ছিলো আছে এবং থাকবেও। এই সরকার জনগণের আস্থার সরকার, এই সরকার এ দেশের উন্নয়নেই কাজ করে, যার উদাহরণ এই পদ্মা বহুমুখী সেতু। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার জনগণ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো উদ্বোধনের আগেই বাণিজ্যিক ভাবে সাফল্য অর্জনের লক্ষে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে তাদের কর্মকান্ড ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন আগে থেকেই। যেমন হোটেল, মোটেল, পেট্রোলপাম্প, শিল্প কলকারখানা সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ফরিদপুরের ভাংগাতে নির্মাণ করা হবে মান মন্দির মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। ঢাকা হতে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর,খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, যশোর, নড়াইল, ঝিনাইদহসহ দক্ষিণাঞ্চল – পশ্চিমাঞ্চলের জেলা গুলোতে বিলাসবহুল বাস চলাচলের জন্য প্রস্তু রয়েছে বলে জানাগেছে। সেই সাথে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ দক্ষিণ -পশ্চিমাঞ্চলের ১৩ রুটের জন্য ইতিমধ্যে ভাড়াও নির্ধারন করেছেন। সেই সাথে সব ধরনের পরিবহনের টোলের মুল্যও নির্ধারন করেছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও জনসভায় আরো যারা উপস্থিত ছিলেন স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী, চীফ হুইপ নুরে আলম চৌধুরী লিটন, প্রধান মন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে,কর্নেল (অবঃ) ফারুক খান, আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ , সংসদ সদস্য বৃন্দ, সচিবগণসহ সরকারী উর্ধোতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ কুটনৈতিকবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, বিজিবি, পুলিশ, র্যাবসহ সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাবৃন্দ, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। প্রদর্শন করা হয় প্রামাণ্যচিত্র। এরপর বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেতু উদ্বোধনের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সুধী সমাবেশে বক্তব্য শেষে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধন-খাম ও সিলমোহর প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে টোলপ্লাজার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। টোলপ্লাজায় টোল দিয়ে মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক, ম্যুরাল-১ উন্মোচন ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন তিনি। এরপর উদ্বোধনী মঞ্চের বেদিতে বাটন চেপে বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি জয় বাংলা স্লোগান দেন। উদ্বোধনী বেদিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তুলেন তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এরপর পুতুল ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আশপাশের ছবি তুলেন। সেখান থেকে সড়ক পথে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ম্যুরাল চত্বর হতে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রা করেন। বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু পার হয়ে তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-২ উন্মোচন করেন। সেখান থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশ্যে সড়ক পথে যাত্রা করেন। দুপুর ১টায় কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
হুমায়ুন কবির মন্সীগঞ্জ মাওয়া থেকে জানান,অবশেষ দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হলো। বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলো। গতকাল শনিবার সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সেখানে মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এরআগে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ডাক টিকেট অবমুক্ত ও সেতু নির্মাণের সাথে জড়িতদের সঙ্গে ছবি তুলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলেন, পদ্মাসেতু শুধু দুই পারের বন্ধন সৃষ্টি নয়। শুধু ইট সিমেন্টের সেতু নয়। এটি আমাদের মর্যাদার প্রতীক। আমাদের সক্ষমতার পরিচয়। এসময় দেশবাসীর পাশাপাশি পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগনই আমার সাহসের ঠিকানা। আমি তাদের স্যালুট জানাই। এরআগে সকাল ১০টা ৫ মিনিটে পদ্মা সেতুর থিম সং পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সেতু উদ্বোধন করতে হেলিকপ্টারে পদ্মার মাওয়া প্রান্তে পৌঁছান শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। সকাল ১০টায় সভা মঞ্চে পৌঁছান তিনি। সুচি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। সেখানেও মোনাজাতে যোগ দেবেন তিনি। এরপর মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বিকেল সাড়ে ৫টায় হেলিকপ্টারে জাজিরা পয়েন্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’ গানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করল দক্ষিণের মানুষ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত ও জাজিরার নাওডোবা প্রান্তের উদ্বোধন কার্যক্রম শেষ কওে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে কাঁঠালবাড়ির জনসভাস্থলে পৌঁছান। এ সময় মঞ্চে বাজানো হয় আব্দুল আলীমের গাওয়া বিখ্যাত গান ‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’। এরপর বাজানো হয় ‘ও নদী রে, একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে’ গানটি। গান শেষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে জনসভাস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন পদ্মা সেতু অতিক্রম করেন, তখন বিমানবাহিনীর ছয়টি হেলিকপ্টার তাঁকে অভিবাদন জানায়। এরপর হেলিকপ্টারগুলো কাঁঠালবাড়ি ঘাটে জনসভা মঞ্চের ওপর দিয়ে চক্কর দেয়। এর একটিতে জাতীয় পতাকা, একটিতে বঙ্গবন্ধু, একটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পদ্মা সেতু, আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা বহন করছিল। আরেকটি হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছিটিয়ে জনসভায় আসা মানুষদের অভিবাদন জানানো হচ্ছিল।
এর আগে প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে টোল দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী সেতু পেরিয়ে জাজিরা প্রান্তের নাওডোবায় আসেন। সেখানে পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল উন্মোচন করেন। এরপর তিনি পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক দিয়ে নাওডোবার আন্ডারপাস পেরিয়ে নাওডোবা-কাঁঠালবাড়ি সড়ক ধরে ১২টা ৫০ মিনিটের সময় শিবচরের কাঁঠালবাড়িতে পৌঁছান। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
শরীয়তপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক সরদার বলেন, ‘পদ্মা নদী যেমন সর্বনাশা, তেমনই আমাদের গর্ব। পদ্মা নদী ঘিরেই এ অঞ্চলের মানুষের জীবন–জীবিকা। নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসবে। পদ্মা সেতু তৈরির নায়ক শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উপহার নিয়ে আমাদের মাঝে এসেছেন। আমরা আবেগে আপ্লুত, কৃতজ্ঞ ও উৎফুল্ল। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সেতু বিভাগ বর্ণিল ও সম্মানের যে অনুষ্ঠান আয়োজন করছে তার জন্য তাদের ধন্যবাদ।’