ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে অফিস চলাকালীন সময়ে পুরুষ সেবা প্রত্যাশীদের পাশাপাশি আসেন নারীরাও। এ সব সেবা প্রত্যাশী নারীদের অনেকের সাথে দুগ্ধপোষ্য শিশুও থাকে। আর ওইসব শিশুর ক্ষুধা ও পিপাসা লাগলে এত মানুষের ভিড়ে মায়েরা তাদের বুকের দুধ পান করাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। স্তন্যদায়ী মাকে তখন বেশ খানিকটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বিশেষ করে খোলামেলা পরিবেশে শিশুকে বুকের দুধ পান করাতে গিয়ে মায়েরা অস্বস্তি ও লোকলজ্জায় ভোগেন। স্তন্যদানে মায়েদের এই অসুবিধা ঘোচাতে দীর্ঘদিন যাবৎ কালীগঞ্জ উপজেলার কোথাও নেই কোনো ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার বা কর্নার। সুন্দর, সুস্থ ও সবলভাবে শিশুকে বেড়ে তুলতে এবং নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি কর্মস্থলে ডে কেয়ার সেন্টার ও মাতৃদুগ্ধ দানকক্ষ স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন অনেক প্রতিষ্ঠানে লক্ষ করা গেলেও আজও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে কোনো ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারের দেখা মেলে না।আজ রবিবার কালীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে বেজপাড়া গ্রামের রনি দাসের স্ত্রী শিপ্রা দাস তার ১০ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাচ্চার জন্য ত্রাণ নিতে আসেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস এর বারান্দায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষারত থাকাকালীন সময়ে তাকে বেঞ্চে বসেই বাচ্চার দুধ পান করাতে দেখা যায়।অফিসে চলাচলকারী লোকজনের সামনে বাচ্চাকে দুধ পান করাতে তিনি বেশ অস্বস্তিতে ভোগেন ও লজ্জাবোধ করেন বলে জানান।তার পাশেই বসে থাকা লক্ষ্মী রানী ও সুমনা দাসের কোলেও রয়েছে দুগ্ধপোষ্য শিশু। একই সময় দেখা যায় কালীগঞ্জ উপজেলা হল রুমের সামনে বসে একজন মা তার সন্তানকে দুধ পান করাচ্ছেন। দুগ্ধ দানকারী মায়েদের এই অসুবিধার কথা একটিবারও চিন্তা করেনি উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক দপ্তর। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম জানান, উপজেলা কার্যালয়ের কোথাও ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার আমার চোখে পড়ে না। পূর্বে আমি এটি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান স্যারের সাথে কথা বলেছি।
আমার আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার করার ক্ষেত্রে। আপনি বললেন তাই এ ব্যাপারে আমি ইউএনও স্যারের সাথে পুনরায় কথা বলবো। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু’র সাথে কথা হলে তিনি জানান,অনেক আগে উপজেলা কার্যালয়ের এক পাশে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার ছিল বলে জানি । বর্তমানে সেটির কি অবস্থা তা আমার জানা নেয়।তবে দুগ্ধদানকারী নারী সেবা গ্রহণকারীদের জন্য অবশ্যই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর এতদিনেও উপজেলা কার্যালয়ের কোথাও সেটি না থাকাটা দুঃখজনক। ব্যাপারটা নিয়ে আমি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এর সাথে কথা বলবো দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।