মহামারী কোভিড-১৯ ২০২০ সালের জানুয়ারী থেকে টানা ২ বছর আক্রান্ত হয়ে প্রায় অচল ছিল বিশ্বে ছিল । যা করোনা ভাইরাস হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন দেশের সাথে দেন দরবার করে বাংলাদেশের জনগণকে বাঁচাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সরকার করোনা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছেন। আর এতে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভ্যাকসিন দেয়ার কাজে অংশ নিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী, পরিদর্শক, স্বেচ্ছাসেবক, পোর্টার (শ্রমিক) সহ হাজার হাজার মানবিক কর্মী। ২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি সাব ব্লকে ইপিআই (টিকা)’র পাশাপাশি গণহারে ১ম ডোজ করোনা টিকা দেওয়া হয়। ৪ সপ্তাহ পরেই দেওয়া হয় ২য় ডোজ। জীবনের ঝুঁকি নেয়া সেই কর্মীদের তৎ সময়ে কোন সম্মানির ব্যবস্থা না হলেও সম্প্রতি সরকার তাদের সম্মানার্থে সম্মানি ভাতার ব্যবস্থা করছেন। ১ম ও ২য় ডোজের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক দেশের বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় এ সম্মানি ভাতা প্রদান করা হয়। মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিনেটর, স্বেচ্ছাসেবক, শ্রমিক মজুরি, কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্টদের জন্য ১৭ লক্ষ ১০ হাজার ৪শত টাকা টাকা সম্মানি দেয়া হয়। ভাতা নিয়ে প্রাপ্যদের মাঝে বিতরণের পর পরই ভাতা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। চলতি বছরের ২৮ মার্চ চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের স্বাক্ষরে চট্টগ্রামের ১৪ টি উপজেলার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী করোনা ভ্যাকসিনেটর (স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী) প্রতি জন ৮ হাজার করে পাবেন। তবে স্বাস্থ্য সহকারী ৮ হাজার পেলেও পরিবার কল্যাণ সহকারী পেয়েছেন ১৬৫০ থেকে ৭২০০ টাকা পর্যন্ত। স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মানিও পেয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারীবৃন্দ। নিয়ম অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকগণ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তাদের টাকাসহ স্বাস্থ্য সহকারী আগের ৮ হাজার সহ পেয়েছেন ২১ হাজার ৫০০ টাকা। কেটে নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ টাকার চাইতেও কারো কারো আরো বেশি। কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্টও নির্ধারিত ৮ হাজার টাকার পুরোটাই পেয়েছেন। অপরিদকে শ্রমিক মজুরির ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকার কোন হিসেব নাই। স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিটা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, ইপিআই কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী ৫৪ জন পরিবার পরিকল্পনা সহকারী প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা, স্বেচ্ছাসেবকদের ৩হাজার ৩০০ হিসেবে ১লক্ষ ১৭ হাজার এবং শ্রমিক মজুরির ১লক্ষ ১০ হাজার টাকার কোন সঠিক হিসেব নাই। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নির্দেশে স্বাস্থ্য সহকারীদের টাকা প্রদান করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) কবির হোসাইন, ইনপেক্টর ইনচার্জ প্রবীরত চন্দ্র দে টাকা প্রদান করেন। এই সব বিষয়ে কবির হোসাইন এর কাছে জানতে চাইলেন, কোন তথ্য না দিয়ে তিনি সকল বিষয়ে টিএসও দেখিয়ে দেন। জানতে চাইলে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহ মোহম্মদ নুর বলেন, আমার সহকারীরা মানবিক দিক বিবেচনা করে কাজ করেছে। তবে ভাতার ব্যাপারে আমি সঠিক কিছু জানিনা। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প কর্মকর্তা ডা: মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সরকারী নিয়ম মেনে হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা টাকা বন্টন করেছি। টাকা কর্তনের প্রশ্নে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কিছু টাকা কর্তন করা হয়েছে। হিসেব চাইলে তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এই ভাবে হিসেব দেওয়ার নিয়ম নেই। হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন স্যারের নেতৃত্বে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির পরবর্তী মিটিংয়ে আলোচনা করবো। এই বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, সস্মানী ভাতার ভ্যাট কাটা হয়েছে বিভিন্ন নিয়মে। টাকা কম পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেকের মাধ্যমে টাকা প্রদান করেছি। এ ব্যাপারে আপনি টিএইচও সাথে কথা বলেন।