শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:০৬ অপরাহ্ন

ইউসুফ-জোলেখা: পারস্য থেকে বাংলায়

মাহমুদুর রহমান :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২

কাহিনী ও কথকতার বৈশিষ্ট্য হলো তা ভ্রমণ করে। আর যেসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে ভ্রমণ করে তার রেশ ধারণ করে পরিবর্তিত হয়। প্রাচীন কথকতা সাধারণত মুখে মুখে ভ্রমণ করত। এদের পরিবর্তন হতো বেশি। কিন্তু লিখিত কাহিনীও বদলায়। এ বদলের মূল কারণ যখন কোনো অঞ্চলের লেখক ওই কাহিনী যে বর্ণনা বা গ্রন্থনা করেন তিনি আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্য আনার চেষ্টা করেন। কখনো সেটা ইচ্ছাকৃত, আবার কখনো অগোচরেই হয়ে যায়। কেননা এটিই স্বাভাবিক। পাঠক, শ্রোতা তার সংস্কৃতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে বা মিল দেখতে চান। ইউসুফ-জোলেখার ‘কাহিনী’র ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। পারস্য থেকে বাংলায় আসতে আসতে নানা সময়ে তাতে যুক্ত হয়েছে ভিন্ন নির্যাস।
‘ইউসুফ-জোলেখা’কে কথকতা বলা যায় কিনা তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। কেননা এর উল্লেখ রয়েছে মিরদাশ, বাইবেল এমনকি কোরআনে। মুসলমানদের জন্য ইউসুফ (আ.) একজন নবী এবং কোরআনে বর্ণিত যেকোনো ঘটনাই সত্য। সে হিসেবে ইউসুফ ও জোলেখার ঘটনাও সত্য, তবে পরবর্তীকালে এ ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে কথকতা, কাহিনীকাব্য। কোরআনের সূত্রকে মূল ধরে ফারসি কবি ফেরদৌসি লিখেছেন ‘ইউসুফ ওয়া জুলাইখা’। একই নামে আবদ-আর-রহমান জামীও কাব্য রচনা করেছেন। দুটি গ্রন্থই চিরায়ত কাব্যের মর্যাদা লাভ করেছে। বলা চলে কোরআনে উল্লিখিত পয়গম্বর ও তার একটি ঘটনাকে অনেক বেশি মানবিকীকরণ করেছিলেন দুই ফারসি কবি। তাদের উভয়ের রচনার মূল আখ্যানের ঘটনাপ্রবাহে মিল রয়েছে, তবে চরিত্রে গুরুত্বারোপের ক্ষেত্রে দুজন ভিন্ন পথে হেঁটেছেন।
ইউসুফ-জোলেখা বা ফারসি কাব্য সম্পর্কিত গবেষকরা বলেন, কোরআন, বাইবেল, মিরদাশ প্রভৃতিতে ইউসুফ জোলেখার আখ্যানের উল্লেখ থাকার কারণে পরবর্তীকালের রচয়িতারা এর পরিবর্তন করেননি। তবে অনেকে মনে করেন এ ঘটনার মূল চরিত্রদের সঙ্গে লোককথার নানা চরিত্রের প্রভাব রয়েছে। গসপেলের জোসেফের সঙ্গে ইউসুফের সাদৃশ্য স্পষ্ট। তবে মিসরীয় পুরাণের ওসাইরিস ও অ্যাডোনিসের সঙ্গেও তার সাদৃশ্য দেখাতে চেয়েছেন কেউ কেউ। তাজিক গবেষক এসকে আজারবায়েভ মনে করেন বাইবেল, কোরআনের ইউসুফের কালের সঙ্গে মিল রয়েছে ইমহোটেপের সময়ের। কেননা সে সময়েই সাত বছর দীর্ঘ খরার ঘটনা ঘটেছিল। তার গবেষণায় দেখেন সাহেলে প্রাপ্ত এক প্যাপিরাসে দেখা গেছে ফারাওয়ের স্বপ্নে সাত বছরের খরার প্রসঙ্গ এসেছে এবং তিনি তার অধীনস্তদের বেশি করে শস্য জমা করার নির্দেশ দেন। সে স্থানে পোটিফারের উল্লেখ পাওয়া যায়। বাইবেল অনুসারে জোলেখা ছিলেন পোটিফারের স্ত্রী। ওল্ড টেস্টামেন্টে জোলেখার নাম নেই। তাকে পোটিফারের স্ত্রী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোরআনে বলা হয়েছে দাস হিসেবে ইউসুফকে মিসরীয় এক রাজপুরুষ ক্রয় করেছিলেন। মিসরের সঙ্গে ইউসুফ জোলেখার সংযোগ নিশ্চিত। ফলে মিসরের লোককথা বা চরিত্রের নির্যাস ইউসুফ জোলেখার মধ্যে থাকা সম্ভব। পরবর্তীকালে যারা এ নিয়ে কাব্য বা কাহিনী রচনা করেছেন তাদের লেখায় এর প্রভাব সরাসরি পড়েনি। কারণ কোরআনে এর উল্লেখ। ফেরদৌসি বা জামী পারস্যের সংস্কৃতির ছোঁয়াচ তাদের লেখায় আনলেও ইসলামের নবীর ক্ষেত্রে তারা কোরআনের বাইরে যাননি। এক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছিল তাদের নিজস্বতা ও পারস্যের লোকসংস্কৃতির উপাদান, এমনকি ইসলামী বিশ্বাসের কিছু অংশ। মূল আখ্যান, দাস ব্যবসা, স্বপ্নের প্রতি নির্ভরশীলতা ইত্যাদি বিষয়গুলো ওল্ড টেস্টামেন্ট ও কোরআনের অনুসরণেই লিখেছেন ফেরদৌসি। কিন্তু এখানে দেখা যায়, ভাইরা ইউসুফকে কুয়ায় ফেলে দিলে জিবরাইল (আ.) নিজেই এসে তাকে উদ্ধার করেন। এখানে কবি, তার পাঠক সমাজ ও পারস্যের সংস্কৃতিতে থাকা ধর্মীয় ভাব ও বোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
ফেরদৌসির তুলনায় জামী অনেক আধুনিক ছিলেন। ধর্মীয় পুস্তকে থাকা মূল কাহিনীতে জোলেখার চরিত্রকে বিস্তৃত করা হয়নি। ফেরদৌসিও সে ধারায় গিয়েছিলেন। জামীই প্রথম জোলেখা চরিত্রকে মূর্ত করে তোলেন। তিনি জোলেখার রূপ বর্ণনা করেছেন। তার বর্ণনায় জোলেখার মুখ চুনির মতো, চুলে জেসমিনের ঘ্রাণ। আরো এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেছেন জোলেখার ভ্রু আরবি নুন হরফের মতো, আলিফ, সোয়দ ও মিমের যুগলবন্দি তার নাক। শিন হরফের মতো তার ঠোঁটের গড়ন। মুখম-লকে তিনি বলেছেন ইরানের বাগানের মতো যেখানে শুদ্ধ গোলাপ ফোটে। জামীর বর্ণনায় আসলে ইরানের সংস্কৃতির প্রতি জামীর ভালোবাসাও প্রকাশিত। জামী এ আখ্যানে হুমা পাখির কথা এনেছেন। ইরানের বিশ্বাস অনুসারে হুমা পাখির ছায়া কারো ওপরে পড়লে সে রাজভাগ্য লাভ করে।
জামী সুফিবাদের অনুসারী ছিলেন। তাই তার ইউসুফ-জোলেখায় অধ্যাত্মবাদও উপস্থিত। অধ্যাত্মবাদ পারস্যেরও সংস্কৃতির অংশ। সুফিবাদের অন্যতম মূল সুরটি জামীর ইউসুফ-জোলেখায় পাওয়া যায়। এখানে ইউসুফ শুদ্ধতার একটি মূর্ত প্রতীক। অন্যদিকে জোলেখা তার প্রিয়তমকে পাওয়ার জন্য আত্মিক কষ্টে ভোগে। সে কষ্টের মধ্য দিয়েই জোলেখা খুঁজতে থাকে শুদ্ধতমের প্রেম। অবশ্য সত্যিকার অর্থে জোলেখা সেটা নিজ থেকে সন্ধান করে না। অধ্যাত্মবাদের রহস্যময় একটি বিষয় হলো যারা এ সুর ধরে কাব্য রচনা বা আখ্যান বর্ণনা করেন, তারা এ রহস্যের মধ্য দিয়ে গল্পকে এগিয়ে নেন এবং চরিত্রের মধ্যে এক ধরনের শুদ্ধতার সন্ধার দেন। ইউসুফকে চাওয়া, না পাওয়ার মধ্য দিয়ে জোলেখা দহনে দহনে শুদ্ধ হয়েছেন। পশ্চিমা ধারায় জোলেখাকে অনেকে নারীর চাহিদার সরব উপস্থিতি বলেন, কিন্তু জামীর কলমে জোলেখা সর্বোচ্চ সৌন্দর্য খুঁজছিলেন। জামী সে খোঁজের স্বরূপ কেবল সন্ধানই করেননি তার উপস্থাপন করেছেন কাব্যের সুললিত ভাষায়।
জামীর ‘হফ্ত অওরঙ্গ’ থেকে ইউসুফ জোলেখার সে আখ্যান জনপ্রিয় ধারায় ‘প্রেম-কাহিনী’ হয়ে পরিভ্রমণ করে পারস্য থেকে এসেছে ভারতীয় উপমহাদেশে। তবে অদ্ভুত কোনো কারণে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্য কোনো অঞ্চলের তুলনায় বাংলায় এর প্রভাব দেখা গেছে বেশি। এমনকি জনপ্রিয়ও হয়েছে বাংলায়। এখানে সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের পৃষ্ঠপোষকতায় শাহ মুহম্মদ সগীর ‘ইউসুফ-জোলেখা’ কাব্য রচনা করেন। সগীরের সংস্করণটি তার সময় থেকে আজ অবধি জনপ্রিয়। পাঠের পাশাপাশি এর নানা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ ও আলোচনা হয়েছে। সগীরের সংস্করণটি জনপ্রিয় হওয়ার নানাবিধ কারণ রয়েছে। প্রণয়োপাখ্যান বাদেও বাংলা সংস্কৃতির বিবিধ অনুষঙ্গের উপস্থিতি এ কাব্যকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রাসঙ্গিক করে তোলে। কিন্তু সে তুলনায় ভারতের অন্যান্য অংশে আখ্যানটি কাহিনীকাব্য বা রোমান্টিক উপাখ্যান হিসেবেও খুব বেশি প্রচলিত হয়নি।
এর একটি কারণ হতে পারে কোরআনের সঙ্গে এর সংযুক্তি। ইসলামের সঙ্গে যুক্ত বিষয় নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে ভিন্ন ধারায় চিন্তা বা প্রকাশের প্রবণতা কম দেখা যায়। তবে এর মধ্যেও কিছু কাজ হয়েছে। সেকালে বণিক ও যাযাবররা স্থলভাগ দিয়ে যাতায়াত করতেন। তাদের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে আখ্যান, কাহিনী, কথকতা। এ কারণেই দেখা যায় মোগল আমলের আগে কাশ্মীরে কিছু সংস্কৃত অনুবাদ সাহিত্যে ইউসুফ-জোলেখার উল্লেখ রয়েছে। মোগল আমলের আগে কাশ্মীরে সংস্কৃত সাহিত্যের চল ছিল। পারস্য, তুর্কিসহ নানা সাহিত্যের সংস্কৃত অনুবাদ হয় সেখানে যার খুব কমই এখন টিকে আছে। এর মধ্যে সোমদেবের কথাসরিৎসাগর অন্যতম।
পুরনো সে সংস্কৃত অনুবাদের মধ্যেই একটি হলো কথাকৌতুক। কাশ্মীরের শাহমিরি রাজবংশের সময়ে এখানে বেশকিছু পারস্য সাহিত্য সংস্কৃত ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। এর মধ্যে কথাকৌতুক একটি। পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে, অষ্টম শাহমিরি সুলতান জয়নাল আবেদীনের শাসনামলে কাজটি করানো হয়। শ্রীভর নামে এক সংস্কৃত প-িতের হাতে অনূদিত হয়েছিল ইউসুফ-জোলেখা। অনূদিত এ সাহিত্য কর্মে পারস্যের সাহিত্যের প্রভাব দেখা যায়। গবেষকদের মতে, এতে কাশ্মীরি দরবার কিংবা শ্রীভরের তেমন কোনো নিজস্ব প্রভাব নেই। তারা আবদ-আর রহমান জামীর ‘ইউসুফ ওয়া জোলেখা’র অনুবাদ করেছেন। পারস্যের সাহিত্যের অনুবাদ করা সে সময় একটি স্বাভাবিক বিষয় ছিল এবং কাশ্মীরের মুসলিম সুলতান পারস্যের সাহিত্যের খোঁজ রাখতেন বলেই এ অনুবাদ আলোর মুখ দেখেছিল।
পাঞ্জাবেও ইউসুফ-জোলেখার কাহিনী জনপ্রিয়, কিন্তু আলাদা করে কাব্য রচনার বিষয়টি দুর্লভ। এর একটি কারণ হতে পারে পাঞ্জাবের নিজস্ব নানা আখ্যানের জন্য আলাদা করে পারস্যের কবিদের লেখা এ কবিতা নিয়ে তারা স্বতন্ত্র কাব্য রচনার উৎসাহ পাননি। তবে পাঞ্জাবের নিজস্ব আখ্যান ও প্রণয়োপাখ্যানে ইউসুফ-জোলেখার আখ্যানের প্রভাব পাওয়া যায়। এছাড়া পারস্য ও ভারতের নানা মিনিয়েচার চিত্রকলায় ইউসুফ-জোলেখাকে পাওয়া যায়। যদিও সেখানে কোরআনের নবী ইউসুফকে খুঁজতে গেলে ভুল হবে। অন্যদিকে বাইবেলে উল্লেখ থাকার কারণে খ্রিস্টীয় সমাজে জোসেফের গল্পটা পরিচিত। কয়েক দফা এ নিয়ে সিনেমা তৈরি হয়েছে। মজার ব্যাপার, এসব সিনেমায় ফেরদৌসি বা জামীর প্রভাব নেই। এখানে জোসেফ মূল চরিত্র এবং তার নায়কোচিত কর্মকা-ই মুখ্য। ভাইদের দ্বারা মৃত্যুমুখে পড়া, উদ্ধার, স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকে মিসরের দরবারে নায়ক বনে যাওয়া এ কাহিনীকে ‘সাগা অব জোসেফ’ বলাই যুক্তিযুক্ত যেখানে জোলেখা গৌণ।
বাংলায় সগীর যখন ইউসুফ-জোলেখা রচনা করলেন তা প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করল।
এর বেশকিছু কারণ রয়েছে। সগীর এ কাব্যে জামীকে অনুসরণ করলেও এতে রয়েছে বাংলায় মানুষের পরিচিত নানা মোটিফ। সগীরের কাব্যের আখ্যান ফেরদৌসি ও জামীর অনুসরণে রচিত। কিন্তু পড়তে পড়তে পাঠক সেখানে আবহমান বাংলার লোকমুখে প্রচলিত ও প্রচারিত গল্পের ছোঁয়াচ পায়। কেননা বাংলার মানুষÍযে ধর্মেরই হোকÍস্বপ্ন ও দৈবের ওপর বিশ্বাস করে। সগীরের আখ্যান শুরুই হয় এক স্বপ্নের মধ্য দিয়ে, যেখানে জোলেখা তার কাঙ্ক্ষিত পুরুষের খোঁজ পায় বলে সে মনে করে। সগীরও জোলেখাকে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং সেখানে মুখ্য হয়েছে প্রেম। পাশ্চাত্যে জোলেখার গল্পটিকে নারীর যৌন চাহিদার স্পষ্ট প্রকাশ বলে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু জামী তাকে দেখিয়েছেন সৌন্দর্যের পূজারি হিসেবে এবং সগীরের কাব্যে জোলেখা হয়ে উঠেছেন প্রেমময়ী নারী। ইউসুফ পরিচিত হয়েছে সৌন্দর্য, সততা, গুণবান তথা একজন পূর্ণাঙ্গ পুরুষরূপে।
ঠাকুরমার ঝুলি থেকে শুরু করে নানা লৌকিক-অলৌকিক কাহিনী, আখ্যানের সঙ্গে পরিচিত বাংলার মানুষ ‘ইউসুফ-জোলেখা’র কাহিনী তারা ভালোবেসে ফেলেন।
বিধুপ্রভা চরিত্রটি ঠাকুরমার ঝুলি বা প্রচলিত লোকজ গল্পের পরিচিত যেকোনো রাজকুমারীর আদল পাওয়া যায়। বিধুপ্রভার শুকপাখিটি বাংলার পাঠক শ্রোতাদের কাছে বহুল পরিচিত। ভারতের লোকগল্পে শুকপাখিকে বরাবরই জ্ঞানী একটি ‘এনটিটি’ হিসেবে পাওয়া যায়। শাহ মুহম্মদ সগীরের সেটা জানা ছিল এবং তিনি সে বিষয়টি কাব্যে ব্যবহার করেছেন। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের কবিতায় আমরা পাই একটা সময় ঘোর বর্ষায় মানুষ দলিজায় বসে আমির হামজার কাহিনী শুনে সময় কাটাত। সগীরের কাব্যে ইউসুফের দীর্ঘ যাত্রার গল্প আমির হামজার মতোই দ্যোতনা সৃষ্টি করে।
ইউসুফ জোলেখার কাহিনী অবলম্বনে সগীরের পর এ অঞ্চলে আরো একাধিক কাব্য রচিত হয়েছে। এর মধ্যে মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম, শাহ গরীবউল্লাহ, গোলাম সাফাতউল্লাহ, মুন্সী সাদেক আলী ও ফকির মোহাম্মদের রচনা উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ঊনবিংশ শতাব্দীর কবি মুন্সী সাদেক আলী রচনা করেছিলেন ‘মহব্বতনামা’। ইউসুফ জোলেখার আখ্যানের সংস্করণটি সাদেক আলী লিখেছিলেন সিলেটি নাগরী লিপিতে। মুন্সী সাদেকের রচনাটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। জনপ্রিয়তা ছাড়াও নাগরী লিপিতে ইউসুফ-জোলেখা রচিত হওয়া এ আখ্যানের নানা অঞ্চল পরিভ্রমণের একটি দৃষ্টান্ত। কাহিনীটি মূলত এভাবেই নানা অঞ্চলে ছড়িয়েছে এবং এ সম্পর্কে আজারবায়েভের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, ‘ইউসুফের কাহিনীটি মানুষের মুখে মুখে এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় ভ্রমণ করেছে।’ আর সে ভ্রমণের সময় ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের লোকজ বিশ্বাস, মানুষ ও সাহিত্যের উপাদানের সঙ্গে মিশে গেছে। ( সংকলিত)




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com