জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের উগ্র সংগঠন আজ থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট শুধুমাত্র মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে পাঁচ শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছিলো ।
সেদিন এই সিরিজ বোমা হামলায় দুজন নিহত হন, আহত হন ১০৪ জন। দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার ১৭ বছর পরে ৬৩ জেলায় নারকীয় সিরিজ বোমা হামলায় বিএনপি জামায়াতের সংশ্লিষ্ষতার অভিযোগ আনেন সরকারী দল আওয়ামীলীগ। ৬৩ জেলায় নারকীয় সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ উত্তাল হয় চকরিয়া ও পেকুয়ার রাজপথ। বুধবার (১৭ আগস্ট) উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে শতশত নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নেয়। বিকেল ৩ টায় চকরিয়া সিস্টেম কম্প্লেক্স ও ৪টায় পেকুয়া বাজারস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে পৃথক মিছিল বের হয়ে স্ব স্ব এলাকার মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় এক সংক্ষিপ্ত পরিসরে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। চকরিয়ায় সাংসদ জাফর আলম বিএ অনার্স এমএ ও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে চকরিয়া উপজেলা ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ও পেকুয়ায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল্লাহ বিএ, সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম। সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে বিশাল মিছিলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন বাবর মুকুল,সাইফুদ্দিন খালেদ, ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবাইদুল্লাহ লিটন, সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদত হোসাইন,যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো.বারেক, সহ-সভাপতি জিয়াবুল হক জিকু, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ওসমান গনি এড.রাশেদুল কবিরসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সংযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বলা বাহুল্য, পুলিশ সদর দফতর ও র্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই সারাদেশে ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে ৮টি, আরএমপিতে ৪টি, কেএমপিতে ৩টি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৭টি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭টি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৬টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে ৩টি। যারমধ্যে ১৪২টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। বাকি ১৭টি মামলায় ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামি শনাক্ত করতে না পারায় চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। এসব মামলায় এজাহারভূক্ত আসামি ছিল ১৩০ জন। গ্রেপ্তার করা হয় ৯৬১ জনকে। ১ হাজার ৭২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পুলিশ জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারাদেশে ১৫৯টি মামলার মধ্যে ৯৪টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এসব মামলায় ৩৩৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। এখন ৫৫টি মামলা বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। যার আসামি সংখ্যা হচ্ছে ৩৮৬ জন। এই সিরিজ বোমা হামলার রায় প্রদান করা মামলাগুলোর ৩৪৯ জনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ২৭ জনের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দেয়া হয়। এরমধ্যে ৮ জনের ফাঁসি ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। এসব মামলায় খালাস পেয়েছে ৩৫৮ জন, আর জামিনে রয়েছে ১৩৩ জন আসামি। এছাড়া ঢাকায় বিচারাধীন ৫টি মামলা সাক্ষ্য গ্রহণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে