জামালপুরে সিআইডির নিজস্ব কার্যালয়ের জন্য জামায়াতের দুই নেতার ভূমি অধিগ্রহণের পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় সিআইডি কার্যালয়ের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের নথিপত্র ও ভিডিও উপস্থাপন করা হলে এ বিষয়টি ফাঁস হয়। কমিটির সদস্য জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানু জানান, জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়ের সভাপতিত্বে ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় সিআইডির নিজস্ব কার্যালয়ের ভবনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের নথি উপস্থাপন করা হয়। জামালপুর শহরের বাগেরহাটা এলাকায় অধিগ্রহণের জন্য উপস্থাপন করা ভূমি জেলা জামায়াতের দুইজন নেতার মালিকানাধীন। এ সময় ভূমি অধিগ্রহণ শাখা একটি ভিডিও ক্লিপও উপস্থাপন করে। জামায়াত নেতার মালিকানাধীন ভূমি ও রাইচমিলটি শহরের বাগেরহাটা এলাকায় হলেও ওই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে শহরের মুকুন্দবাড়ি এলাকায় অবস্থিত সফিকুল ইসলাম জুলহাসের স্কার্ফ রাইচ মিল ও ভবন। অধিগ্রহণের জন্য পায়তারা চালানো ভূমিতে থাকা রাইচমিলটি বর্তমানে পরিত্যক্ত এবং সেখানে তেমন কোন স্থাপনা না থাকলেও স্কার্ফ রাইচ মিলের স্থাপনার ভিডিও দেখিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও কৌশল অবলম্বন করার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, বাগেরহাটা এলাকার ওই রাইচমিলটির মালিক জামায়াতের সাবেক নেতা আল মিজান ট্রেডার্স এর মালিক মরহুম মকবুল হোসেন ও আলতাফ হোসেন।অভিযোগ উঠেছে, ভূমি অধিগ্রহণের সাথে জড়িত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার জামায়াত নেতার সাথে যোগসাজশে এ পায়তারা করছেন। এর পেছনে জামায়াতের বড় একটি চক্র জড়িত বলেও অভিযোগ করেন পৌর মেয়র। জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, সিআইডির নিজস্ব কার্যালয় শহরের প্রানকেন্দ্র বা অফিসপাড়াতেই হওয়া উচিত। এর জন্য বাণিজ্যিক রেইটে কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন নাই। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় খাস ভূমি বা কমমূল্যের ভূমি অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব করেন তিনি। জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের জমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা বন্ধের দাবি জানান পৌর মেয়র। জামালপুর ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মোঃ আব্দুল মালেক খান বলেন, সিআইডির কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য ৭৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯ সালে সার্ভে করা হয়েছে ওই জমি। সিংহজানী মৌজার বাগেরহাটা এলাকার একটি ভূমি অধিগ্রহণের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। ওই ভূমিতে ঢোকার জন্য যে গলি আছে তাতে একটি জিপ ঢোকার মত অবস্থা নাই। সভায় যে ভিডিও উপস্থাপন করা হয় তা ছিল শহরের আরেকটি রাইচ মিলের। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্বকে সাথে নিয়ে তিনি ওই ভিডিও করেন। শহরে চলমান একটিমাত্র রাইচমিল হওয়ায় এই ভুল হয়েছে। অন্যকিছু না। সিআইডির ভবনের জন্য নতুন জায়গা খোঁজার সিদ্ধান্ত হয়। এ ব্যাপারে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে কথা বললে তিনি বলেন, সিআইডির ভবনের জন্য যে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছিল তা নাকচ করা হয়েছে। সভায় কোন ভিডিও উপস্থাপন করা হয়নি বলেও জানান তিনি। সভায় মাদারগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবিরসহ ভূমি বরাদ্দ কমিটির অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।