গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে বিএনপির মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা শাওন প্রধানের গায়েবানা জানাজা পড়েছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, বেনজীর আহমেদ টিটো, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, খন্দকার আবু আশফাক, ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ২০ দলীয় জোটের শরিক জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপির ক্বারী আবু তাহেরসহ কয়েক শত নেতাকর্মী।
জানাজা পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্র মুক্ত করার সৈনিক নারয়াণগঞ্জের শাওন গুলিতে নিহত হয়েছেন। দুই সপ্তাহে আমাদের তিনজন ভাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ মিছিল ছিল। কিন্তু পুলিশ তাতে গুলি চালিয়ে শাওন প্রধানকে হত্যা করেছে। তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেনি। রাত ২টায় পুলিশি পাহারায় শাওনের লাশ দাফন করা হয়েছে। সরকার বাকশাল কায়েমের জন্য গুলি চালিয়ে শাওনসহ অন্যদের হত্যা করেছে। কিন্তু শাওনের রক্ত বৃথা যাবেনা। শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমরা তার রক্তের প্রতিদান নিতে পারব ইনশাআল্লাহ। যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, সরকারের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ প্রশাসন লাশ দেয়নি। তারা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ আমাদের শাওন অসংখ্য মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। আমরা পরিবারের মতো শাওন হত্যার বিচার দাবি করছি।
নয়াপল্টনে নিহত যুবদল কর্মী শাওনের গায়েবানা জানাজা: নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি চলাকালে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত যুবদল কর্মী শাওনের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ জানাজা হয়। গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নেছার উদ্দিন। জানাজা শেষে দলের নেতাকর্মীরা সড়কে বিক্ষোভ করেন। শাওন হত্যার বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।
গায়েবানা জানাজার আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাত ২টায় পুলিশি পাহারায় যুবদল নেতা শাওনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মী, সহযোদ্ধা, বন্ধু-বান্ধদেরও জানাজায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেই ভোলায় আমাদের ২ জন ভাইয়ের প্রাণ গেছে পুলিশের গুলিতে। গতকাল নারায়ণগঞ্জে শাওন শাহাদত বরণ করেছে। অথচ আমাদের মিছিল ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। শাওনের এই আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যেতে পারে না। গণতন্ত্রের জন্য শাওন শাহাদত বরণ করেছে। আমরা শাওনের শোককে শক্তিতে পরিণত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।
এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।