সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন

ঝিনাইগাতীতে একই পরিবারে চার জন প্রতিবন্ধি, কেউ পায়নি জাতীয় পরিচয় পত্র

মঞ্জুরুল হক (ঝিনাইগাতী) শেরপুর :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ঝিনাইগাতীতে ছয় সদস্যের পরিবারে চারজনই প্রতিবন্ধি। বৃদ্ধা মা আমেলা বেগমসহ তার তিন কন্যার হয়নি জাতীয় পরিচয় পত্র কার্ড।অসহায় এই পরিবারটির দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় পাচ্ছেন না সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। তাই পরিবারটির সহায়তায় সরকার ও বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরজমিনে উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নে উত্তর দাড়িয়ারপাড় গ্রামে গেলে এলাকাবাসী ও অনেকেই জানান,
শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধকতা নিয়ে এক ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই গ্রামের মৃত আব্দুল আলীর স্ত্রী বিধবা আমেলা বেগম। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে বয়স তার প্রায় একশো ছয় বছর ছুঁই ছুঁই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছেন তিনি। আর্থিক সংকট থাকায় তারা কেউ নিতে পারেন না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। ঘরে নেই চকি বা খাট তাদের ঘরে নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। রাতের বেলায় মেঝেতে একটা পাটি বিছিয়ে কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে থাকেন তারা। বৃদ্ধা আমেলা বেগমের বড় মেয়ে আবেদা বেগম জানান, তার মা ও তিনিই সুস্থ। তার ছোট বোন আফরোজা, দোলেনা, অজুফা ও ছোট ভাই আলী হোসেন তারা মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী। ছোট তিন বোন ও তার মায়ের আজও হয়নি জন্ম নিবন্ধন অথবা ভোটার আইডি কার্ড। তারা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় মিলছেনা সরকারি কোন সুযোগ-সুবিধা। শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য হলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা নেওয়া হয়না তাদের। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ, আব্দুল আজিজ(৭১), আব্দুল মজিদ(৪৮), শাজাহান আলী জানান প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী আব্দুল আলী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর দু’মুঠো ভাতের আশায় সন্তানদের নিয়ে পারি জমান ঢাকা শহর। সেখানে হোটেল ছাড়াও অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন চলত তাদের। এমন অবস্থা দেখে ঢাকার এক ব্যবসায়ী তাদের নিয়ে আসেন বাড়িতে। এরপর তাদের নিজ গ্রাম উত্তর দাড়িয়ারপাড়ে বৃদ্ধা আমেলা বেগমের স্বামীর রেখে যাওয়া বসত জমিতে একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেন তিনি। তারা আরও জানান আবেদা বেগম সুস্থ থাকায় অনেক আগেই বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকে স্বামীর ঘর সংসারে আছেন তিনি। আর তাদের ছোট ভাই মানসিক ভারসাম্য হীন প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় কোথাও স্থির থাকেনা সে। বর্তমানে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বাড়িতে থাকে দোলেনা,আফরোজা ও অজুফা। প্রতিদিন ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসলেও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা পাননা তারা। কোন বেলায় খেয়ে না খেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তারা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন পরিবারটিকে ভোটার তালিকায় আনতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি। দুঃস্থ এই পরিবারটিকে বাঁচাতে প্রয়োজন সরকারি, বেসরকারি ও সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতা। তবেই মানবতার রঙে বেঁচে থেকে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করতে পারবে এই পরিবারটি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com