শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

শারদীয় দুর্গোৎসব রং-তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ রূপায়নের কাজ

শামীম আহমেদ বরিশাল প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

শুভ্র শরতে মেঘমেদুর বরষা। বৃষ্টিসিক্ত আবাহাওয়ার মধ্যে দিয়ে পার হয়েছে মহালয়া। ইতিমধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুরু হয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আগামী সোমবার (১অক্টোবর) ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। বরিশালের সর্বত্র শারদীয় উৎসবের প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। দিন-রাত এক করে এখন রঙ আর তুলির আঁচড়ে শেষ রূপায়নের কাজ করছেন প্রতিমাশিল্পীরা। শিল্পীর রংতুলির ছোঁয়ায় প্রতিটি প্রতিমা জেগে উঠছে স্ব-মহিমায়। তুলির শৈল্পিক আঁচড়ে জীবন্ত হয়ে উঠছে মা দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মহিষাসুরের প্রতিমা। প্রত্যেক শিল্পীরা চান নিজের তৈরি প্রতিমা অন্যের চেয়ে সুন্দর ও শৈল্পিক করে তুলতে। তাই তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে এখন দুর্গা প্রতিমাসহ বিভিন্ন প্রতিমার অবয়ব দিচ্ছেন। সেইসাথে মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জা,গেট ও প্যান্ডেল তৈরিসহ সার্বিক কাজও চলছে এগিয়ে। বিভাগের বিভিন্ন পূজাম-প ঘুরে দেখা গেছে, রংতুলির আঁচড়ে একেকটি প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তারা জানান, পূজার ম-পের আনুষঙ্গিক কাজ প্রায় শেষ। এখন বাকি ম-পের ভেতরের কাজ ও আর প্রতিমায় রংতুলি। প্রতিটি প্রতিমা রংতুলিতে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রতিমা শিল্পীদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। মহামারি ও সংকট অনেকটা কেটে যাওয়ায় এ বছর বরিশাল অঞ্চলে বেড়েছে দুর্গাম-পের সংখ্যা। গত বছর থেকে এবার গোটা বরিশাল বিভাগজুড়ে প্রায় এক হাজার ৮০০ ম-পে আয়োজনের ভিন্নতা থাকার পাশাপাশি জমকাল হবে দুর্গাপূজার আয়োজন। এমনটাই জানিয়েছেন আয়োজক ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এ বিশ্বাসে সব মিলিয়ে এবারের পূজাতেও কোনো কমতি থাকবে না বলে জানান তারা। এদিকে পূজাম-পে আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো ধরনের কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। এরইমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের। আবার পূজা উদযাপন পরিষদ থেকেও মন্দিরগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মানিক মুখার্জী জানান, ধর্মীয় এ উৎসবকে ঘিরে চলছে চারদিকে সাজ সাজ রব। এরইমধ্যে সেচ্ছাসেবক নির্ধারণসহ ম-প ও মন্দিরের আঙিনার নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। যদিও অনেক মন্দির প্রাঙ্গণে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তিনি বলেন, বরিশাল জেলায় এ বছর মোট ৬০০ মন্দিরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। তার মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে ৪৫টি পূজাম-প রয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেলায় নতুন ১১টি ম-পে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে পূজা উদযাপন কমিটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি পূজাম-পে আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো ধরনের কার্যক্রম হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম বলেন, পূজাম-পে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার নিশ্চিত করা ও আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনার পাশাপাশি পূজা উদযাপন কমিটিসহ মনোনয়নকৃত ভলান্টিয়ারদের সজাগ থাকতে হবে এবং আমাদের মোতায়েনকৃত পুলিশসহ অন্যান্য শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা প্রদান করতে হবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ বিষয়ে তিনি সবার আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরও বলেন, সাদা পোশাকে আমাদের পুলিশি টহল থাকবে। এছাড়া র‌্যাব-আনসার বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থা নিয়োজিত থাকবে, তবে কোথাও কোনো ব্যত্যয় ঘটলে আমাদের অবগত করবেন। যত বেশি আপনারা তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন তত বেশি নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব। সেইসঙ্গে গোটা বিভাগজুড়ে পূজার সময় নিজ নিজ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছে রেঞ্জ পুলিশ। পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে যেকোনো ধরনের তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com