কালীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় থেকে ৬ কিলোমিটার দূরত্বে ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের পার শ্রীরামপুর গ্রামে “১০০ নং পার শীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়”টি অবস্থিত। এই বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৩ সালে সেটি জাতীয়করণ হয়। ৬টি শ্রেণীতে মোট ৮৯ জন ছাত্রছাত্রী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । ২০০০ সালে নির্মিত ৩টি শ্রেণিকক্ষ ও ১টি অফিস কক্ষে নিয়ে একতলা ভবনে চলছে পাঠদান কার্যক্রম।এখানে দুই শিফটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ বিদ্যালয়টিতে নেয়। ফলে ১ টি কক্ষের একপাশে অফিসের কার্যক্রম অন্যপাশে শিশু শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৯ সালে বর্তমান ভবনের সামনেই আরেকটি নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হলেও আজ পর্যন্ত তা শেষ হয়নি। ফলে শ্রেণিকক্ষের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে এই বিদ্যালয়ে। সরোজমিনে প্রাথমিক এ বিদ্যালয়টির অফিস রুমে ঢুকতেই দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকা আখতার জাহান অফিসের এক পাশে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। এই কক্ষেরই দেয়াল ঘেঁষে রয়েছে শেখ রাসেল বুক কর্ণার, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার এবং সততা স্টোর। এক কক্ষে একই সাথে অনেকগুলো কার্যসম্পাদনের ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকা আখতার জাহানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণেই এক কক্ষে এতগুলো কাজ করতে বাধ্য হচ্ছি।দীর্ঘদিন যাবৎ নতুন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। একটি ভবন নির্মাণে কি এত সময় লাগে? আমার মনে হয় এই ভবনটির কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে ভবণ নির্মাণের দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ উদাসীন। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট অতিসত্তর নতুন ভবনের কাজ সম্পন্ন করে শ্রেণিকক্ষ সংকাট দূর করার দাবী জানাচ্ছি। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সেলিনা আক্তার বানু জানান,শ্রেণিসংকটের কারণেই মূলত অফিস কক্ষেই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। আমি বারবার বিদ্যালয়টির চলমান নতুন ভবনের কাজ সম্পন্ন করে আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাগিদ দিলেও ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কর্ণপাত করছে না।যে কারণে ব্যাপারটি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে অবগত করেছি। নতুন ভবনটি আমারা বুঝে পেলে শ্রেণিকক্ষ সংকট কেটে যাবে এবং পাঠদান কার্যক্রমেও সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সময়টা পাল্টেছে। শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সরকার এখন গুণগত মানকেও গুরুত্ব দিচ্ছে।বাস্তবিকভাবেই গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষা এখন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। জাতীয় উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও গতিশীল সমাজ গঠনে গুণগত শিক্ষা চালকের ভূমিকা নিতে পারে। গুণগত ধারার এ শিক্ষার শুরু হতে হবে প্রাথমিক অবস্থা থেকেই। শিশুদের কচি মনে প্রকৃত শিক্ষার বীজটা বপন করে দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষার প্রারম্ভিক পর্যায়। সন্দেহ নেই, প্রাথমিক শিক্ষাই হচ্ছে সব শিক্ষার মূল ভিত্তি।তাই কালীগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের উচিৎ হবে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে এই বিদ্যালয়টির শ্রেণিসংকট দূর করা।