পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘পরিমিতিবোধ, মিতব্যয়িতা ইত্যাদি সাধারণ ব্যাপার আমাদেরকে স্কুল থেকে শিখিয়ে আসছে। সেটা আমরা চর্চা করবো। অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, অপচয় আমরা ঠেকিয়ে দেব। সেই বিষয়ে আমি আপনাদের (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের) দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’ গতকাল বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ভবনে দুই দিনব্যাপী এক কর্মশালায় অংশ নিয়ে এ মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর জেনারেটিং এসডিজিস ডাটা উইথ ফোকাস টু এনভায়রনমেন্ট, ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় দুই দিনব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাত প্রভৃতির অ্যাসেসমেন্ট পরিমাপের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পরিসংখ্যান প্রস্তুত ও প্রকাশ করা। এই কাজে মোট খরচ হবে ৩৬ কোটি ৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুনে।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসনের দু-একটি সাধারণ বিষয় আপনাদেরকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। করোনার কারণে আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সারাবিশ্বই এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং ভয়ের ব্যাপার নয়। সারাবিশ্ব যেভাবে অ্যাডজাস্টমেন্ট করছে, আমরাও তাই করবো। তাল মিলিয়ে চলবো। কিন্তু আমাদের ঘরের কিছু কাজ আছে, সেটা বিশ্বের সুইডেন করে দেবে না, নরওয়ে করে দেবে না। আমাদেরকেই করতে হবে। আর্থিক যে বিভিন্ন বিষয় আছে, আমাদের সবাইকে ব্যক্তিগতভাবে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ব্যয় করবো, তবে জেনেশুনে করবো। যেখানে প্রয়োজন, সেই ব্যয়টা পুরোটাই করবো।’ সরকারি কর্মকর্তা, উপস্থিত পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব, বিবিএসের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রতিটি ব্যয়, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যয়টা করবো। যথাসময়ে, এক বিন্দু দেরি করবো না।’
যেসব সুযোগ-সুবিধা জনগণ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়েছে, তার বিনিময়ে তারা তাদের কাছ থেকে সেবা আশা করছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সেই সেবাটা, তাদের পুরো পাওনাটা মিটিয়ে দেব। সেই পাওয়া মিটিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমরা নিজেদের আত্মার সঙ্গে আপোস করবো না। এ বিষয়ে আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি।’
পরিসংখ্যানের যথার্থতা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ, যারা এ দেশের মালিক, আমরা যে বক্তব্যগুলো দিই, সেগুলোর যথার্থতা নিয়ে তারা প্রশ্ন করেন। স্বাভাবিক, এটা করা উচিতও। যেটা আমরা আপনাদের কাছ থেকে পাই। সুতরাং নিখুঁত হওয়া বা সঠিক হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রকল্পের উদ্দেশ্যের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এই যাবতীয় বিষয়টিকে আমরা একটি শব্দের ওপর জোর দিতে চাই। ‘অ্যাডাপ্টেশন’ ইংরেজিতে, বাংলায় অভিযোজন। অ্যাডাপটেশনের বাইরে আমরা বাস করতে পারবো না। যাবতীয় প্রাণীকুল, উদ্ভিদকুল যাই বলি, অভিযোজনের মাধ্যমেই এখানে এসেছি।’