যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদক ও বিশিষ্ট মানবাধিকার সংগঠক শামসুল আলম লিটনের বড়ভাই নুর আলম চৌধুরী পারভেজকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে, ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’র সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর’র বাড়িতে হামলা এবং ভিন্নমতের মানুষকে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদে লন্ডনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’ এর যৌথ উদ্যোগে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে গত ২০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল সভাপতি মোঃ রায়হান উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল সেক্রেটারি নৌশিন মোস্তারী মিয়া’র পরিচালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন ‘আমার দেশ ইউকে’র নির্বাহী সম্পাদক ওলিউল্লাহ নোমান। প্রধান বক্তা ছিলেন ব্যারিষ্টার আমিন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’র সহ-সভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম, অনলাইন এক্টিভিষ্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন ও সেক্রেটারী দেলোয়ার হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল’র সভাপতি মোঃ মাহবুব আলী খান সূর। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে জাগরণী সংগীত পরিবেশন করেন রায়হান চৌধুরী। প্রধান অতিথি ওলিউল্লাহ নোমান বলেন- বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর ভয়াবহ অবস্থা চলছে। মিডিয়াতে আসছে কম, কিন্তু তার চেয়ে অনেক বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে মানুষ- যা আমরা জানিনা। শামসুল আলম লিটন’র বড়ভাই নুর আলম চৌধুরীসহ অনেককে গুম ও গ্রেফতার করে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে চায় সরকার। তারা আবার পাতানো নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে সব মিশনগুলোতে বলে দিয়েছেন যে, সরকারের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, যারা সমালোচনা করে তাদের লিস্ট বানাতে। এসব উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে দেশে গুম, খুন, গ্রেফতার ও নির্যাতন বেশি হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে সবার মুক্তি দাবি করেন। প্রধান বক্তা ব্যারিষ্টার আমিন চৌধুরী বলেন- সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকা সম্পাদকের বড়ভাইকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে তাকেসহ সকলের মুক্তি দাবি করেন। ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর বলেন- সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে হয়রানি করা হয়। মানুষের বাক্ স্বাধীনতা হরন করা হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিউল্লাহ, আলমুকাদ্দাছ, ব্যারিষ্টার আরমান ও আব্দুল্লাহ আল আজমিসহ অনেককে গুম করা হয়েছে- যাদের সন্ধান এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমরা যখন এদেশে কথা বলি তখন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আমার বাড়িতেও হামলা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সভাপতির বক্তব্যে রায়হান উদ্দিন বলেন- সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক ও লন্ডন প্রবাসী শামছুল আলম লিটনের লেখালেখির কারণে বড়ভাই নুর আলম চৌধুরী পারভেজকে প্রথমে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে ১৫-১৬ ব্যক্তি নোয়াখালীর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের নির্দেশে তাকে জেলে পাঠানো হয়- যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সিলেট যুবদলের সেক্রেটারি মকসুদ আহমদকে রাতের আঁধারে গুম করার চেষ্টা চালানো হয়। এর প্রতিবাদে জনগণ রাস্তায় নামলে, পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আমিনুল ইসলাম সফর’র বাড়িতেও হামলা করেছে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। অনলাইনে লেখালেখি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কারনেই তার বাড়িতে হামলা করা হয়। এছাড়া সাংবাদিক আবদুর রব ভুট্টোর ভাই আবদুল মুক্তাদির মনুকেও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তির দাবী জানান। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি মীর্জা আবুল আহমেদ, মোঃ ইকবাল হোসেন ও মোঃ কামরুল হাসান রাকিব, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ ফান্টু, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পদক রায়হান চৌধুরী, সহকারি লিগ্যাল সেক্রেটারী রুহুল আমিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ বিন হোসাইন খান, মানবাধিকার কর্মী মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ সালমান হোসেন মারজান, মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন রনি, মোঃ তাজুল ইসলাম, ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল সহ-সভাপতি আল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, ফিনান্স সেক্রেটারি মোহাম্মদ মাসউদুল হাছান, অফিস সেক্রেটারি আবু জাফর মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ, প্রচার সম্পাদক সায়েম আহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ ওসমান গনি, মোঃ এমদাদুল হক, নির্বাহী সদস্য আব্দুল আলিম, সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান, রোকতা হাসান, হুমায়ুন আহমেদ, মোহাম্মদ মনসুর উদ্দীন, মোঃ খায়রুল আলম, মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, মোঃ শাহাদাত হোসাইন, রাজু আহমেদ, মোঃ জামিল আহমেদ, নিয়াজ মোর্শেদ, মারুফ আহমদ লায়েক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।