গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপি ঘোষিত আগামীর সকল আন্দোলন কর্মসূচিতে যুবদল সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না। গতকাল শনিবার একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিএনপির চলমান কর্মসূচিগুলোতে যুবদলের ব্যাপক অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে মোনায়েম মুন্না বলেন, যুবদল অতীতের চাইতে অনেক বেশি শক্তিশালী। যা আপনারা বিগত দিনের কর্মসূচিগুলোতে দেখেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির নির্দেশনায় গণতন্ত্রবিরোধী সকল অপশক্তি ও ফ্যাসিস্টকে প্রতিহত করার জন্য যুবদল প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান যখনি নির্দেশ দেবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল রাজপথে জীবনের বিনিময়ে হলেও সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করবে।
বিগত কমিটিগুলোতে যুবদলের দীর্ঘ সময় পূর্ণাঙ্গ না হওয়া এবং বিভিন্ন ইউনিটগুলো দীর্ঘসময় কমিটি না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যুবদল দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ যুব সংগঠন। আমাদের মাতৃ সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে এবং একটি ফ্যাসিস্ট সরকার দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত। তাই আমাদের সকল কর্মকা- পরিচালনা করতে অনেক প্রতিকূলতা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। এজন্য অনেক কাজ নির্দিষ্ট সময় শেষ করা সম্ভব হয় না। এই কমিটির অধীনে শিগগিরই যুবদল পূর্ণাঙ্গ করতে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে যুবদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, যুবদলকে আরো বেশি গতিশীল করতে দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় যুবদলকে পূর্ণাঙ্গ করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ শিগগিরই একটি শক্তিশালী পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাবে যুবদল। যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হলে কত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মুন্না বলেন, কমিটি শর্ট হলে কমিটির গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো যুবদল একটি বৃহৎ যুব সংগঠন। এছাড়া আমাদেরসহ সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক অনেক নেতা এখন পদ শূন্য। তাই সকল দিক বিবেচনা করে আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটির একটি খসড়া তৈরী করছি। কিছু দিনের মধ্যে ইনশাআল্লাহ একটি শক্তিশালী কমিটি উপহার দিতে পারবো। তিনি বলেন, সংগঠনের প্রয়োজনে এটা সবসময় হয়ে আসছে এবং হবে। আপাতত আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গের জন্য কাজ করছি। এছাড়া সিলেট জেলা ও মহানগর এবং লালমনিরহাট জেলায় আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছি। অন্যান্য জেলায়ও কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যুবদলের বর্তমান কমিটির কর্মকা- মূল্যায়ন করতে বলা হলে মোনায়েম মুন্না বলেন, আমাদের বর্তমান কমিটি ঘোষণার পর থেকে বিএনপি ঘোষিত সকল কর্মসূচিতে যুবদলের সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল। ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওনসহ সহযোদ্ধাদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে যুবদল সারাদেশে কর্মসূচি পালন করেছে। প্রতিটা ইউনিট সেই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। তাই বলবো যুবদল অতীতের চাইতে অনেক বেশী শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ।কেন্দ্রের সাথে তৃণমূলের মধ্যে সক্রিয় সমন্বয় বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে এই যুবনেতা বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান আমাকে তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে তুলে এনেছেন। তাই দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। তাদের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করি। তিনি বলেন, ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম হত্যার পরে আমরা সাথে সাথে সেখানে যাই। ভোলার হরতালে আমি সেখানে গিয়ে পিকেটিং করি, নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জসহ দেশের যে স্থানেই নেতাকর্মী হামলার শিকার হয় আমরা দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে সেখানে ছুটে যাই, তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেই।
সামনে সরকার পতনের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যুবদলের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা হলো দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশ বাস্তবায়ন করা। বিএনপির পরিকল্পনাই আমাদের পরিকল্পনা। দেশনায়ক তারেক রহমান যখন যে সিদ্ধান্ত দেবে তা বাস্তবায়ন করা হলো আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই আমাদের আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই। দেশনায়কের নির্দেশ পেলে সেই কর্মসূচির বাস্তবায়ন করতে যে পরিকল্পনা দরকার হয় তা আমরা করবো।